ইউএপি’র ১১তম সমাবর্তন কাল
শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি: সমাবর্তনের আলোয় সোনা মোড়ানো সাফল্য তাদের
- আলামিন ইভান
- প্রকাশ: ২১ জুলাই ২০২৫, ০২:৩৭ PM , আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৫, ০৬:৪৭ AM
একরাশ স্বপ্ন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌকাঠ পেরোয় প্রতিটি শিক্ষার্থী। শহরের ব্যস্ত রাস্তা, ক্লাস, নতুন বন্ধু আর অপরিচিত মুখের মাঝে তারা খুঁজে বেড়ায় স্বপ্নের ছোঁয়ার সিড়ি। প্রত্যাশা ও প্রতিজ্ঞার মিশেলে গড়া সেই যাত্রাপথে প্রতিটি পদক্ষেপ হয় নরম ও কঠিন অভিজ্ঞতার ছায়ায় ঘেরা। ক্যাম্পাসের করিডোরে হেঁটে বেড়ায় কোনো এক গবেষকের প্রতিচ্ছবি, কিংবা করিডোরের দেয়ালে আঁকা থাকে কোনো স্বপ্নবাজ শিল্পীর রঙিন ইশারা।
আকাশ ছোঁয়ার আগ্রহে তারা শিখে ফেলে রাত জাগা, ভুল করা, আবার উঠে দাঁড়ানোর পাঠ। সময় গড়ায়, দিন বদলায়, একদিন ক্যাম্পাসের চেনা প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে তারা বুঝে যায় শুরু হয়েছিল স্বপ্ন নিয়ে, শেষটা হয়েছে আত্মপ্রত্যয়ে। বহু অধ্যবসায় আর আত্মনিবেশের শেষে, কারও হাতে ধরা দেয় সেই কাঙ্খিত ফল। এমনি কয়েকজন শিক্ষার্থী যারা স্বপ্নটা ছুঁয়ে দেখেছেন, পেয়েছেন অ্যাকাডেমিক জীবনের প্রত্যাশিত ফল। এটা ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক (ইউএপি) আচার্য ‘স্বর্ণপদক’ মনোনীত তিন শিক্ষার্থীরা কথা।
দেশের অন্যতম স্বনামধন্য বেসরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক (ইউএপি) আগামী ২৬ জুলাই আয়োজন করতে যাচ্ছে তাদের ১১তম সমাবর্তন। যেখানে মিলিত হবেন হাজারো স্বপ্নবাজ। আনুষ্ঠানিকভাবে প্রায় ২ হাজার গ্র্যাজুয়েট গ্রহণ করবেন তাদের বহুল প্রত্যাশিত ডিগ্রি। সমাবর্তনে আচার্য ‘স্বর্ণপদক’ এর জন্য মনোয়ন পেয়েছেন ব্যচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের শিক্ষার্থী গাজী শাহবাজ মোহাম্মদ, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী বিদীতা সরকার দিবা এবং একই বিভাগের শিক্ষার্থী রিপা রাণী বিশ্বাস।
নিঃসন্দেহে সাফল্যের মোড়কে মোড়ানো এই গল্পের পেছনে রয়েছে অগণিত পরিশ্রম, নির্ঘুম রাত, আত্মত্যাগ আর অধ্যবসায়ের এক দীর্ঘ ও অনন্য যাত্রা। ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক (ইউএপি)-এর কৃতী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস-এর সঙ্গে এক প্রাণবন্ত আলাপচারিতায় উঠে এসেছে তাদের স্বপ্নপূরণের নানামাত্রিক দিক, সংগ্রাম আর অর্জনের রঙিন গল্প। তারা জানালেন, এই অর্জনের পথ মোটেও সহজ ছিল না। কারণ সাফল্য কখনোই হঠাৎ করে আসে না। এর পেছনে থাকতে হয় দীর্ঘদিনের প্রস্তুতি, দৃঢ় প্রত্যয় আর অটুট মানসিকতা। শুধু কঠোর অধ্যবসায় নয়, সময়ের সঠিক ব্যবহার, আত্মবিশ্বাস এবং লক্ষ্যভিত্তিক পরিকল্পিত পথচলাই তাদের এই সফলতার মূল চাবিকাঠি।
তারা বলছেন, জীবনে কিছু পেতে হলে প্রথমেই প্রয়োজন লক্ষ্য নির্ধারণ করা। এরপর সেই লক্ষ্যে অটল থাকা, নিজেকে প্রতিনিয়ত শাণিত করা এবং প্রতিটি মুহূর্তকে কাজে লাগানো। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই সাফল্যের দুয়ার খুলে যায়। তরুণ শিক্ষার্থীদের প্রতি তাদের পরামর্শ, আত্মবিশ্বাস আর শৃঙ্খলার সাথে সামনে এগিয়ে যাওয়ার মনোভাবই গড়ে তুলবে কাঙ্ক্ষিত ভবিষ্যৎ। আচার্য স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত তিনজন কৃতী শিক্ষার্থীর গল্পে উঠে এসেছে স্বপ্নপূরণের অনন্য এক যাত্রা, যেখানে ছিল আবেগ, আত্মত্যাগ, অধ্যবসায় ও অসীম অনুপ্রেরণার কথা।
আচার্য স্বর্ণ পদক পুরস্কারের খবর শুনে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েছিলেন বিদিতা সরকার দিবা। স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, ‘পুরস্কারের কথা জানতে পেরে সত্যি অনেক আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছি। মনে পড়ে যাচ্ছে প্রথম সেমিস্টারের দিনগুলোর কথা; যখন প্রথম ক্লাসে গিয়ে দেখি সবাই অনেক মেধাবী, ভালো স্কুল-কলেজ থেকে এসেছে। আমি ভীষণ নার্ভাস ছিলাম। অন্য শহর থেকে এসে, কারো পরিচিত নেই, একা লাগতো। প্রায় প্রতিরাতে মা’কে ফোন করে কাঁদতাম। কিন্তু মা একটা কথাই বলতেন, ‘তুমি সবসময় ভালো করেছো, এখনো করবে। চিন্তা করো না।’ এই কথাটাই আমাকে প্রতিদিন নতুন করে শুরু করতে সাহায্য করেছে। আর সবসময় ছায়ার মতো পাশে ছিলেন বাবা, আমার রিয়েল হিরো। কোনো সমস্যায় পড়লেই বাবাকে ফোন করতাম, সমাধান উনার কাছেই থাকতো। এই পদকটা শুধুই আমার না, এটা মা-বাবার জন্য।’
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে দিবা বলেন, ‘সত্যি বলতে, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনটা ছিল অনেক চ্যালেঞ্জিং, কিন্তু একদমই অমূল্য। প্রথম দিকে ভয়, অনিশ্চয়তা আর শেষ দিকে আত্মবিশ্বাস আর প্রাপ্তির অনুভূতি। বন্ধুরা, শিক্ষকরা এবং প্রতিটি ক্লাস, প্রজেক্ট, উপস্থাপনা, সবকিছু মিলে এক অনন্য অভিজ্ঞতা। তিনি জানান, পড়ালেখার পাশাপাশি সেমিনার, ওয়ার্কশপ, একাডেমিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন, পাশাপাশি টিউশনিও করিয়েছেন। নিজের স্টাডি রুটিন ছিল অত্যন্ত ডিসিপ্লিনড। পড়া মুখস্থ না করে কনসেপ্ট বোঝার চেষ্টা করতেন এবং নিয়মিত গ্রুপ স্টাডি করতেন। তাঁর সবচেয়ে বড় শক্তি ছিলেন মা-বাবা।
আচার্য স্বর্ণ পদক পাওয়া এই মেধাবী শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমার বিশ্ববিদ্যালয়, বিশেষ করে আমার বিভাগের শিক্ষকরা, সবসময় গাইড করেছেন, উৎসাহ দিয়েছেন। ক্লাসের বাইরে যতবার যেই সাহায্য দরকার হয়েছে, পেয়েছি। আমার আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলতেও তাঁদের ভূমিকা অনেক বড়। আমার ছোট ভাই-বোনদের আমি বলবো, প্রথম দিকে ভয় পেতে পারে, সেটা স্বাভাবিক। কিন্তু নিজের ওপর বিশ্বাস রাখো। পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের স্কিল ডেভেলপ করো এবং সবসময় শেখার আগ্রহ ধরে রাখো। কষ্ট করলে সাফল্য আসবেই।
বর্তমানে দিবা ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক’র কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে লেকচারার হিসেবে কর্মরত। নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করা তাঁর বহুদিনের স্বপ্ন ছিল। তিনি বলেন, ‘এটা ছিল আমার স্বপ্ন, নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করা। আমি চাই, ভবিষ্যতেও শিক্ষকতা ও রিসার্চ একসাথে চালিয়ে যেতে এবং আমার স্টুডেন্টদের জন্য কিছু করতে। এই অর্জনটা শুধু আমার না, আমার পরিবারের, শিক্ষকদের, বন্ধুদের, এমনকি আমার সেই ছোট শহরটার, যেখান থেকে আমি এসেছি। আমি চাই, আমার এই গল্পটা অন্যদের অনুপ্রেরণা দিক, যেন সবাই বিশ্বাস করে, কোনো অবস্থানই ছোট নয়। ইচ্ছা থাকলে, সবকিচ্ছু সম্ভব।’
আচার্য স্বর্ণপদকের জন্য মনোনীত আরেকজন গাজী শাহবাজ মোহাম্মদ জানালেন, তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়জীবন ছিল তুলনামূলকভাবে সহজ ও সাবলীল। তিনি বলেন, ‘তেমন ভিন্ন কিছু আসলে অনুভব করছি না। বন্ধু-বান্ধব শিক্ষকদের সহযোগিতায় অনেক সহজেই বিশ্ববিদ্যালয় সময়টা পার করেছি। স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রমে যুক্ত ছিলাম, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাব অ্যাক্টিভিটির সাথে যুক্ত ছিলাম। বন্ধুদের সাথে মাঝেমধ্যে সংগীত চর্চাও করতাম। ভালো ফলাফলের জন্য ওইভাবে কখনো পড়া হয়নি, ক্লাস মনোযোগ দিয়ে করতাম। বন্ধুদের সাথে গ্রুপ স্টাডি করতাম পরীক্ষার আগে।’ তিনি বলেন, ‘আশেপাশের সবাই অনেক সাপোর্ট করেছে, পরিবার, বন্ধু, শিক্ষক; সবাই। দুশ্চিন্তা না করে বর্তমানকে উপভোগ করার চেষ্টা করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের অল্প সময় দেখতে দেখতে চলে যাবে, ভালো বা মন্দ সময় আসতেই পারে, মনোবল শক্ত রাখতে হবে। অনেক দূর নিয়ে ভাবছি না, আপাতত কিছু প্রফেশনাল কোয়ালিফিকেশন অর্জন করতে চাই।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে অনন্য এক গল্প গড়েছেন আচার্য স্বর্ণ পদক মনোনীত রিপা রাণী বিশ্বাস। বিভাগে প্রথমে ভর্তি হয়ে পেয়েছিলেন আইডি নম্বর ‘এক’। তার বাবা তখন বলেছিলেন, ‘এই রোলটা যেন প্রতি সেমিস্টারে ধরে রাখতে পারো।’ সেই অনুপ্রেরণাই হয়ে ওঠে রিপার চালিকাশক্তি। রিপা বলেন, ‘আচার্য স্বর্ণ পদক পেতে যাচ্ছি, এই অনুভূতি সত্যিই অসাধারণ। এটি শুধু আমার ব্যক্তিগত অর্জন নয়, বরং আমার পরিবার, শিক্ষকদের এবং বন্ধুদের সমর্থন ও সহযাত্রার ফল। এই সম্মান আমাকে আরও উৎসাহিত করছে ভবিষ্যতে আরও ভালো কিছু করার জন্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নিটা ছিল অনেকটা চ্যালেঞ্জের, অনেকটা শেখার, আবার অনেকটা আবেগের। আমি যখন ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হই, ভর্তি তারিখ ঘোষণার সাথেই আমি আবেদন করি এবং প্রথমেই ভর্তি হয়ে যাই। সে সময় আমার আইডি দেওয়া হয় এক অর্থাৎ আমি ছিলাম আমাদের ব্যাচের প্রথম শিক্ষার্থী। যখন জানলাম আমার রোল হবে ‘এক’, তখন পাশেই বসে থাকা বাবা শুধু একটি কথাই বলেছিলেন, ‘এই রোলটা যেন প্রতি সেমিস্টারে ধরে রাখতে পারো।’ বাবার সেই কথাটাই ছিল আমার সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঈশ্বরের কৃপায়, আমি আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সবগুলো অর্থাৎ ৮টি সেমিস্টারেই ভিসি এ্যাওয়ার্ড পেতে সক্ষম হয়েছি। তবে এই পথটা কখনই সহজ ছিল না। আমি নারায়ণগঞ্জের বন্দর এলাকায় থাকি, আর প্রতিদিন ক্লাস করতে আমাকে প্রায় ৬-৭ ঘণ্টা যাতায়াত করতে হতো। অনেক সময় শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকলেও, চেষ্টা করতাম যেন একটি ক্লাসও মিস না হয়। এই পুরো যাত্রায় আমার বন্ধুদের অবদান অনস্বীকার্য। তারা সবসময় আমার পাশে ছিল, নোট শেয়ার করা থেকে শুরু করে, বুঝতে না পারলে কনসেপ্ট ক্লিয়ার করে দেওয়ার মতো সব কিছুতেই সাহায্য করেছে। তাদের সহযোগিতা ও নিঃস্বার্থ ভালোবাসা ছাড়া এই অর্জন কখনোই সম্ভব হতো না ।’
বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে মূল্যায়ন করে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় শুধুই পড়ালেখার জায়গা নয়, এটা শেখার এক বিশাল প্ল্যাটফর্ম। ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক’র পরিবেশ আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে। এখানকার সিনিয়র, জুনিয়র, শিক্ষক সবার সহযোগিতা আমাকে নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে। ক্লাস, পরীক্ষা, প্রজেক্ট, গ্রুপ স্টাডি সবকিছু মিলিয়ে এই চার বছর আমার জীবনের অমূল্য সম্পদ হয়ে থাকবে।’
রিপা যুক্ত ছিলেন বিভিন্ন প্রোগ্রামিং কনটেস্ট, হ্যাকাথন, সেমিনার ও ওয়ার্কশপে। তিনি ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি ক্লাবের প্রেসিডেন্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বলেন, ‘পড়াশোনার পাশাপাশি আমি বিভিন্ন প্রোগ্রামিং কনটেস্ট, হ্যাকাথন, ওয়ার্কশপ ও সেমিনারে অংশগ্রহণ করেছি। এসব প্রতিযোগিতা ও ইভেন্টে অংশ নিয়ে শুধু প্রযুক্তিগত দক্ষতা নয়, বরং সমস্যা সমাধান, টিমওয়ার্ক এবং প্রেসার ম্যানেজমেন্ট শেখার সুযোগ পেয়েছি। আমি বিভাগের ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি ক্লাবের সাথেও যুক্ত ছিলাম এবং শেষ সেমিস্টারে ক্লাবের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। ভালো ফলাফল করার জন্য আমি সবসময় নিজের ওপর বিশ্বাস রেখেছি, ‘আমি পারবো’ এই মানসিকতা থেকেই প্রতিটি কাজের প্রতি দায়বদ্ধ থেকেছি। সময়মতো অ্যাসাইনমেন্ট, প্রজেক্ট ও টাস্কগুলো শেষ করার চেষ্টা করতাম। গ্রুপ স্টাডি আমার বড় সহায়ক ছিল বন্ধুদের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি এবং নিজের শেখা অন্যদের শেখাতে চেষ্টাও করতাম, এতে করে বিষয়গুলো আরও পরিষ্কার হতো। যেহেতু আমি কম্পিউটার সায়েন্সে পড়েছি, তাই অনলাইন রিসোর্স ছিল আমার পড়ালেখার অপরিহার্য অংশ। বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকে কনসেপ্ট বুঝে নেওয়া, টিউটোরিয়াল দেখা, ডকুমেন্টেশন পড়া এগুলো নিয়মিত করতাম। সব মিলিয়ে পড়াশোনার বাইরে নিজেকে বিভিন্ন দিক থেকে সমৃদ্ধ করার চেষ্টা করেছি, যা আমার একাডেমিক ও ব্যক্তিগত উন্নয়নে বড় ভূমিকা রেখেছে।’
নিজের শিক্ষাজীবনে অনলাইন রিসোর্সের ভূমিকা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমার পরিবার সবসময় আমাকে মানসিকভাবে সাপোর্ট দিয়েছে। আমার শিক্ষকগণ পথনির্দেশক হিসেবে পাশে ছিলেন। বন্ধুদেরও কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই যারা সবসময় পাশে ছিল, সাহায্য করেছে এবং অনুপ্রাণিত করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে শুধু একাডেমিক জ্ঞানই দেয়নি, বরং বাস্তব জীবনের জন্যও প্রস্তুত করেছে। বিভিন্ন ক্লাব, প্রোগ্রাম ও প্রজেক্টের সুযোগ আমাকে নিজের স্কিল উন্নত করার জায়গা দিয়েছে। শিক্ষকরা সবসময় গাইড করেছেন, আর পরিবেশটাও ছিল শেখার উপযোগী। জুনিয়রদের প্রতি আমার পরামর্শ হবে, শুধু সিজিপিএ’র পেছনে না ছুটে, আসল শেখার প্রতি আগ্রহ রাখো। নিয়মিত পড়াশোনার পাশাপাশি স্কিল ডেভেলপমেন্টে মনোযোগ দাও। আজকের চাকরির বাজারে শুধু বইয়ের জ্ঞান যথেষ্ট নয়, বরং হাতে-কলমে শেখা এবং বাস্তব অভিজ্ঞতা অনেক বড় সম্পদ।’
জুনিয়রদের উদ্দেশ্যে রিপা পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘নিজের আগ্রহ খুঁজে বের করো, বুঝে নাও তুমি কোন দিকটাতে ভালো করো, এবং সেই অনুযায়ী নিজেকে প্রস্তুত করো। নতুন কিছু শেখার ভয় পেও না। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা, নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস রাখো, কারণ আত্মবিশ্বাস থাকলে যে কোনো কিছুই অর্জন করা সম্ভব। আমার পেশাগত লক্ষ্য হলো, একজন দক্ষ ও দায়িত্বশীল প্রযুক্তিবিদ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা, যেখানে আমি প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে বাস্তব জীবনের সমস্যাগুলোর কার্যকর সমাধান দিতে পারি। আমি চাই এমন একটি ক্যারিয়ার গড়তে, যেখানে আমি ক্রমাগত শেখার সুযোগ পাবো এবং নতুন কিছু তৈরি করার মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারবো।’