বিড়ালপ্রেমীদের মন জয়ে ডাকসু প্রার্থীদের ‘বিড়াল প্রযোজনা’

বিড়ালপ্রেমীদের মন কাড়তে বিড়ালের সাথে ছবি তুলে অভিনব প্রচারণা ডাকসু প্রার্থীদের
বিড়ালপ্রেমীদের মন কাড়তে বিড়ালের সাথে ছবি তুলে অভিনব প্রচারণা ডাকসু প্রার্থীদের  © টিডিসি সম্পাদিত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ নির্বাচন (ডাকসু) নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা থাকলেও আগামী ৯ সেপ্টেম্বরেই তা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এ উপলক্ষ্যে ঢাবি ক্যাম্পাসে উৎসব আমেজ বিরাজ করছে। নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে প্রার্থীরা ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বেছে নিচ্ছেন অভিনব নানা পদ্ধতি। এরই অংশ হিসেবে অন্যান্য কৌশলের পাশাপাশি বিড়াল ও প্রাণীপ্রেমীদের মন কাড়তে বিড়ালের সাথে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা চালাচ্ছেন ডাকসুর প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা।

এর আগে দেখা গেছে, কোনো কোনো প্রার্থী ব্যালট নম্বর ৩২ এর সঙ্গে ধানমন্ডি ৩২ এর মিল রেখে; জারি গানের মাধ্যমে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করে; ভিডিও কন্টেন্ট বানিয়ে, কবিতা আবৃত্তি করে; গান গেয়ে; টাকার আদলে লিফলেট বানিয়ে; ১ বছর ফ্রি ইংরেজি পড়ানোর ঘোষণা দিয়ে, পোস্টার-লিফলেট না বানিয়ে এবং অভিযোগ-পরামর্শ বাক্স নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এসব প্রচারণার মাঝে বিড়াল নিয়ে প্রচারণার বিষয়টি অনেকের মন কেড়েছে।

খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, সর্বপ্রথম শিবির সমর্থিত প্যানেলের ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী সাদিক কায়েমের ছবির সাথে একটি বিড়াল যুক্ত করে তার নির্বাচনী প্রচার চালান তার ভক্তরা। এরপর ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান ঢাবির ড. শহীদুল্লাহ হলে প্রচারণা চালাতে গিয়ে বিড়ালকে আদর করছেন, এমন একটা ছবি ফেসবুকে দিলে তা মুহুর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। পরে বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ পেজে জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদের বিড়ালের সাথে খুঁনশুটির ছবি ও ভিডিও পোস্ট করে ভোট চাওয়া হয়। এরপর একই প্যানেলের ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক পদপ্রার্থী মোঃ মাজহারুল ইসলাম বিড়ালে সঙ্গে নিজের ছবি দিয়ে ফেসবুকে লেখেন, ফরহাদ ভাইয়ের সাথে বিলাইয়ের ছবি একদমই যাচ্ছে না। বিলাইয়ের ছবি যায় সিবগা ভাই, সাদিক ভাই, মহি ভাই আর এই ছবিওয়ালা মশাইয়ের (নিজ)। সারাদিন প্রচারণা করে এই বিলাই নিয়ে কাহিনী এখনও বুঝছিনা।

তাছাড়াও, ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেল থেকে জিএস প্রার্থী আল সাদী ভূঁইয়া, স্বতন্ত্র এজিএস প্রার্থী তাহমিদ আল মুদ্দাসসির চৌধুরী, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক ফাতিমা তাসনিম জুমাসহ অনেকেরই বিড়ালকেন্দ্রিক প্রচারণা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখা যাচ্ছে।

আরও পড়ুন: ডাকসু নির্বাচন ৯ সেপ্টেম্বরই হচ্ছে, হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত

ভিপিপ্রার্থী সাদিক কায়েমের সঙ্গে বিড়ালের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে ক্যাপশনে তার এক ভক্ত ও ঢাবি শিক্ষার্থী মিরাজ উদ্দীন সিফাত লেখেন, সাদিক ভাইকে কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্যে আমি উপলব্ধি করেছি— তিনি এমন একজন মানুষ, যার গুণাবলি যে কাউকেই সহজেই মোহিত করবে। পানিকে যেমন যে পাত্রে রাখা হয়, তা সেই আকৃতি ধারণ করে; ঠিক তেমনই সাদিক ভাই মানুষের প্রতি ব্যবহারেও হয়ে ওঠেন সর্বজনপ্রিয় ও অমায়িক। দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে যেকোনো প্রয়োজনে তিনি সর্বোচ্চ আন্তরিকতা নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ান।

তিনি লেখেন, তার এই কোমলতা তাকে দুর্বল করে তোলে না। প্রয়োজনের মুহূর্তে তিনি হয়ে ওঠেন দৃঢ় ও কঠোর— যেন দায়িত্বশীলতার অটল প্রতীক। ভিশন ও মিশনের প্রতি তার নিবেদন সত্যিই প্রশংসনীয়। এসব প্রশংসা নিছক বলার জন্য বলা নয়। সাদিক ভাইয়ের সান্নিধ্যে যিনি এসেছেন, তিনিই সাক্ষ্য দেবেন—তিনি কেমন মানুষ এবং লিডার হিসেবে কেমন। বিড়ালপ্রেমী সাদিক ভাই, ব্যালট নং–২২ এ ভোট চাই।

মাজহারুল ইসলাম নামে একজন ফেসবুকে লেখেন, ডাকসু নির্বাচনে প্রার্থীদের হঠাৎই বিড়াল প্রেম! মেয়েদের ভোট টানার কৌশল হিসেবে পদ্ধতিটা মন্দ না!

মো. আতিকুর রহমান নামে এক শিক্ষার্থী ফেসবুকে লেখেন, বৈচিত্র্যময় ডাকসু, সব ধরনের রুচিশীল ভোটারদের আকৃষ্ট করার জন্য প্রার্থীদের চেষ্টার যেন কোন ত্রুটি নেই, আর তারই ধারাবাহিকতায় যুক্ত হয়েছে প্রচারের নতুন ধরন পুসি-প্রোমোশন। শেষ সময়ে পুসি (বিড়াল) লাভারদের ভোট আকর্ষণের জন্য প্রার্থীদের এই অভিনব পদ্ধতি।

হাস্যরস করে নাহিদ হাসান সজীব নামে একজন ফেসবুকে লেখেন, ডাকসু উপলক্ষ্যে তিনটি বিড়াল ভাড়া দিতে চাই।

 


সর্বশেষ সংবাদ