জকসু নির্বাচনও হবে জবি প্রেসক্লাবের স্বচ্ছ নির্বাচনের মতো: জবি উপাচার্য

জবি প্রেসক্লাবের দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন উপাচার্য
জবি প্রেসক্লাবের দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন উপাচার্য  © টিডিসি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেছেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব একটি স্বচ্ছ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন কমিটি উপহার দিয়েছে। আমি আশা রাখি, আগামী দিনে আমাদের জকসু নির্বাচন ও জাতীয় নির্বাচনও জবি প্রেসক্লাবের নির্বাচনের মতো স্বচ্ছ হবে।’

শুক্রবার (১৫ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কনফারেন্স কক্ষে জবি প্রেসক্লাবের ২০২৫-২৬ কার্যনির্বাহী পরিষদের দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ও শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. রইছ উদ্‌দীন, বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মঞ্জুর মুর্শেদ ভূঁইয়া, মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান ও গবেষণা সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. ইমরানুল হক, ইউনিভার্সিটি টিচার্স লিংক (ইউটিএল) সদস্যসচিব ও ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান এবং ক্রীড়াশীল ছাত্র সংগঠনের নেতারাসহ অন্য আমন্ত্রিত অতিথিরা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলে জবি প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক ফাতেমা আলী ও কার্যনির্বাহী সদস্য জুনায়েদ মাসুদ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড মো. রেজাউল করিম বলেন, জবি ছাত্রসংসদ জকসু নির্বাচন হবে জবি প্রেসক্লাবের স্বচ্ছ নির্বাচনের মতো। প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা পরিশিলীত সাংবাদিকতা করে।

জবির ঐক্য নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, জবি গুচ্ছ থেকে বের হয়ে সবার আগে ভর্তি কার্যক্রম শেষ করে ক্লাস শুরু করেছে, এটাও একটি অনন্য দিক। সাংবাদিকদের একমাত্র ভূমিকা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ ও সত্য তথ্য প্রচার করা। বাংলাদেশের বিভিন্ন আন্দোলনে সাংবাদিকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য, জবির আন্দোলনেও সেই ভূমিকা ছিল।

উপাচার্য বলেন, ‘আমরা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো সংস্কার শুরু করেছি। অবকাশ ভবনের বয়স খুব বেশি নয়, তবে সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।’

আরও পড়ুন: সেন্ট গ্রেগরী কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল সোমবার

অনুষ্ঠানে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সংগঠক মাসুদ রানা বলেন, সাংবাদিকতা শুধু পেশা নয়, বাংলাদেশ যখনই সংকটে পড়েছে, সাংবাদিকরা সাহসী ভূমিকা পালন করেছে। আর প্রেসক্লাব যে যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করেছে, তারা শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে যে ত্যাগ করেছে, তা সামনেও ধরে রাখবে।

ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রায়হান হাসান রাব্বি বলেন, ‘আমাদের যৌক্তিক আন্দোলনে প্রেসক্লাবে ছিলো, সাংবাদিক ও শিক্ষার্থী হিসেবে। সামনের কমিটিও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে অতীতের সেই ধারা বহাল রাখবে। আশা রাখি শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের তারাও ভূমিকা রাখবে।’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা ক্ষমতার মুখোমুখি দাড়িয়েছে। ক্ষমতাকে প্রশ্ন করেছে। তারা অতীতে যেভাবে অন্যায়ের সাথে যে আপোষ করেনি, আগামী কমিটির কাছেও এ প্রত্যাশাই আমরা করি।’

তিনি আরও বলেন, অবকাশ ভবনের দিকে প্রশাসনের নজর দিতে হবে। কোনো বড় দুর্ঘটনা ঘটার আগেই যেন প্রশাসন ভবন সংস্কারে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদি হাসান হিমেল বলেন, ‘সাংবাদিকতা ভূমিকা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠায় অনস্বীকার্য। বিগত কমিটি বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার মাধ্যমে জবির পাশেই ছিল, সামনের কমিটির থেকেও তা প্রত্যাশা রাখি। জবি প্রেসক্লাব যেমন অতীতে সাদাকে সাদা আর কালাকে কালা বলেছিল বর্তমান কমিটিও সেটা করবে।’

সদ্য সাবেক সভাপতি সুবর্ণ আসসাইফ বলেন, ‘দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামে জবি প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা জবিয়ানদের সঙ্গে ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে। আমাদের নতুন নেতৃত্ব ভবিষ্যতে জগন্নাথকে আরও অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে এই প্রত্যাশা করি।’

সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহনাফ তাহমিদ ফাইয়াজ সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আমরা আমাদের সর্বোচ্চ দিয়ে দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করেছি। বস্তুনিষ্ঠতা ও সততার সঙ্গে সাংবাদিকতা করার চেষ্টা করেছি। আশা করি নতুন নেতৃত্ব সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে।’

আরও পড়ুন: একই দিনে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি, কুয়েট উপাচার্য পেলেও বঞ্চিত ববি

ইউনিভার্সিটি টিচার্স লিংকের (ইউটিএল) সদস্যসচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক বেলাল হোসেন বলেন, বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সাংবাদিকতার পেছনে অনেক কিছু চলে। বিগত সময়গুলোতে প্রেসক্লাব যেমন বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার মাধ্যমে বিশবিদ্যালয়ের পাশে ছিল, সামনের কমিটিও সেই ধারা বহাল রাখবে। বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার মাধ্যামে বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশের সামনে তুলে ধরবে। কোন ঘটনার আসল ঘটনা তুলে ধরার মধ্যমে সত্য প্রতিষ্ঠা করবে।

প্রেসক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘প্রেসক্লাবের একমাত্র লক্ষ্যই হলো সত্য প্রচার করা। আর এই বিষয়ে আপোষহীন ছিলো, অতীতেও থাকবে। আমরা ১৭ বছর একটা অন্ধকার জগতে ছিলাম। প্রেসক্লাবের আমাদের একটা গ্রহণ যোগ্য ও দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী নির্বাচন উপহার দিয়েছেন। তারা অতীতে যেমন বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা করেছেন, সামনেও সে ধারা বহাল রাখবেন।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার জাহিদুল ইসলাম সাদেক বলেন, একটি স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব এর নতুন কার্যনির্বাহী পরিষদ গঠিত হয়েছে। আশা করি বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব শিক্ষার্থী, বিশ্ববিদ্যালয় এবং দেশের কল্যাণে কাজ করে যাবে।

নবনির্বাচিত কমিটির সভাপতি মো. মেহেদী হাসান ও সাধারণ সম্পাদক ইউছুব ওসমান-এর নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর করেন বিদায়ী সভাপতি সুবর্ণ আসসাইফ ও সাধারণ সম্পাদক আহনাফ তাহমিদ ফাইয়াজ।


সর্বশেষ সংবাদ