বন্ধুত্ব থেকে বিয়ে, এবার একসঙ্গে বিসিএস ক্যাডার 

অভিজিৎ দেব ও স্বর্ণা শাহা তুশী
অভিজিৎ দেব ও স্বর্ণা শাহা তুশী  © সংগৃহীত

‘তোর কি আমার নাম মনে আছে’—মেসেঞ্জারে পাঠানো এই একটি টেক্সট থেকেই শুরু হয়েছিল গল্প। প্রথমে বন্ধুত্ব, পরে প্রেম আর সবশেষে বিয়ে। এবার সেই পথচলায় যুক্ত হয়েছে নতুন অধ্যায়। সম্প্রতি প্রকাশিত ৪৪তম বিসিএসের ফলাফলে দুজনেই এক একসঙ্গে বিসিএস ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন।     

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ওই দুই শিক্ষার্থী হলেন অভিজিৎ দেব ও স্বর্ণা শাহা তুশী। ৪৪তম বিসিএসে অভিজিৎ প্রাণিসম্পদ ক্যাডারে এবং স্বর্ণা কৃষি ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। এর আগেও স্বর্ণা ৪৩তম বিসিএসে কৃষি ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হন। 

জানা গেছে, অভিজিৎ ও স্বর্ণা ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হন বাকৃবিতে। অভিজিৎ ভেটেরিনারি অনুষদে পড়াশোনা শেষে মেডিসিন বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেন। অন্যদিকে, স্বর্ণা কৃষি অনুষদে ভর্তি হয়ে কীটতত্ত্ব বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। তাদের প্রথম দেখা ২০১৬ সালের মার্চে। ধীরে ধীরে বন্ধুত্ব গাঢ় হয়, রূপ নেয় ভালোবাসায়। দীর্ঘ ছয় বছরের সম্পর্ক শেষে ২০২৩ সালের ৯ জুলাই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। 

দাম্পত্য জীবনের পাশাপাশি চলতে থাকে বিসিএস প্রস্তুতির ব্যস্ততা। এ প্রসঙ্গে স্বর্ণা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা ছিলাম বেস্টফ্রেন্ড। গ্র্যাজুয়েশনের পর থেকেই বিসিএসের প্রস্তুতি নেই। আমি ৪৩তম বিসিএসের সার্কুলারের পর থেকেই সিরিয়াস হই, আর অভি ইন্টার্নশিপ চলাকালীন প্রস্তুতি শুরু করে।’ 

বিয়ের পর দুই পরিবারের ভূমিকা প্রসঙ্গে স্বর্ণা বলেন, ‘আমাদের দুই পরিবার শুরু থেকেই খুব সহায়ক ছিল। বিয়ের এক সপ্তাহ পরই ছিল ৪৩তম বিসিএসের ভাইভা। তখন পরিবারকে সময় দিতে পারিনি, ঢাকায় থেকে প্রস্তুতি নিয়েছি। তারা সবসময় পাশে থেকেছেন।’ 

সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার অনুভূতি জানিয়ে স্বর্ণা বলেন, ‘আমি যেহেতু ৪৩তম বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্ত ছিলাম, তাই ৪৪তম বিসিএসের ফল প্রকাশের দিন অভির ফল নিয়ে বেশি উত্তেজনা ছিল। কারণ সে শুধু প্রাণিসম্পদ ক্যাডারেই আবেদন করেছিল। তার স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় আমি সত্যিই আনন্দিত। তবে এখানেই থামতে চাই না—আমাদের দুজনেরই ইচ্ছা, উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যাওয়া ও পিএইচডি সম্পন্ন করা।’  

কোভিডকালীন সময়ের কথা মনে করে স্বর্ণা বলেন, ‘হলে থাকতে না পেরে বাসায় চলে আসি। আমার কাছে বই ছিল না। অভি তখন ঢাকায় ছিল। ও কুরিয়ারে বই পাঠাতো, সিনিয়রদের কাছ থেকে নোট এনে দিত। আমার মানসিক দৃঢ়তা ধরে রাখতে সে সবসময় অনুপ্রেরণা দিয়েছে।’


সর্বশেষ সংবাদ