স্নাতকের পর এবার স্নাতকোত্তরেও স্বর্ণপদক পাচ্ছেন ইস্ট ওয়েস্টের সুমনা ইয়াছমিন
- গোলাম রাব্বি, ইস্ট ওয়েস্ট প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৪:৩০ PM , আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৫:২৯ PM
ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ২৩তম সমাবর্তন আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) অনুষ্ঠিত হবে। এবারের সমাবর্তন অনুষ্ঠানটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিন কিলোমিটার দূরে আফতাবনগর খেলার মাঠে আয়োজন করা হচ্ছে। সমাবর্তনে ডিগ্রি প্রদান করা হবে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের ২ হাজার ৮৬১ জন শিক্ষার্থীকে। অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বর্ণপদক দেওয়া হবে চার জন শিক্ষার্থীকে।
সমাবর্তনে স্বর্ণপদকে মনোনয়ন প্রাপ্ত চারজন শিক্ষার্থীর একজন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী সুমনা ইয়াছমিন। স্নাতকোত্তরে সাফল্যের সাথে সিজিপিএ ৪.০ নিয়ে পাঠ্যক্রম সম্পন্নের স্বীকৃতি স্বরূপ এবারের সমাবর্তনে স্বর্ণপদক পাচ্ছেন তিনি।
সুমনা ইয়াছমিন ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের গেল বছরের সমাবর্তনে স্নাতক পর্যায়ে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইন্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে স্বর্ণপদক পান এবং এবছর একই বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিতে স্বর্ণপদক পাওয়ার জন্য মনোনীত হয়েছেন৷ তার দাদা ও নানা বাড়ি চাঁদপুরে হলেও তার জন্ম ও বেড়ে উঠা ঢাকায়। ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ থেকে তিনি সফলতার সঙ্গে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন।
ছোটবেলা থেকেই তার শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন ছিল। বন্ধুদের পড়া বুঝিয়ে দেওয়া থেকে আস্তে আস্তে বুঝতে পারে পড়ানো বিষয়টি তার ভিতর থেকে প্রাকৃতিক ভাবে আসে, অন্যদেরকে বুঝানোর মধ্যে একটা তৃপ্তি খুঁজে পান কৃতী এ শিক্ষার্থী।
সুমনা ইয়াছমিন পছন্দের পাবলিক প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্তোষজনক অবস্থান না পাওয়ার পর ভালো ফলাফল করার প্রত্যয় করেন তিনি। তিনি জানান, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় একটি প্রথম শ্রেণীর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। যেখানে টিউশন ফি অন্যান্য প্রথম শ্রেণীর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এগুলোর তুলনায় কম এবং ভালো রেজাল্টের উপরস স্কলারশিপের ব্যবস্থা থাকায় তিনি ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।
এ বিভাগে পড়া সম্পর্কে তিনি বলেন, কম্পিউটার সায়েন্সের বর্তমান এবং নিকট ভবিষ্যতের চাহিদার কথা চিন্তা করে ইস্ট ওয়েস্টে কম্পিউটার সায়েন্সের ব্যাপক সুনাম থাকায় কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইন্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়ার সিদ্ধান্ত নেন।
স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে ও ভালো ফলাফল করার তীব্র চেষ্টা করতে থাকেন, প্রচণ্ড চেষ্টায় একবার ভালো রেজাল্ট হওয়ার পর সেটা ধরে রাখার এবং স্কলারশিপের সুবিধা নেওয়ার জন্য উদ্যোগ নেন৷ সেখান থেকেই শেষ পর্যন্ত রেজাল্ট ধরে রাখার প্রচেষ্টা চলতে থাকে। শেষ পর্যন্ত সফলতা পান এবং স্বপ্ন পূরণ করেন। গেল বছরে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে স্নাতক প্রোগ্রামে তিনি স্বর্ণপদক পেয়ে নিজের ও পরিবারের স্বপ্ন পূরণ করেন৷
পরবর্তীতে সমাজ, নিজস্ব ও ক্যারিয়ার জীবনে শিক্ষার গুরুত্ব, বয়স আর অভিজ্ঞতা বাড়ার সাথে নিজেই ধীরে ধীরে বুঝতে পারে ভালো ফলাফল, ক্লাস পজিশন এবং স্কলারশিপের জন্য পরিবার, শিক্ষক- শিক্ষিকা এবং বন্ধু বান্ধবদের ভালোবাসা আরো ভালো করার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। পাশাপাশি তার বাবা-মা, ভাই-বোনের গর্ব, বন্ধুবান্ধব, সিনিয়র, জুনিয়রদের তার প্রতি বেশি বিশ্বাস তো ছিল সুমনার নিত্যদিনের শক্তি।
স্নাতক প্রোগ্রাম শেষে, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইন্জিনিয়ারিং বিভাগে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিতে ভর্তি হন। এবারও খুঁজে পান তার একই সফলতা এবং পূরণ করেন স্বপ্ন। সিজিপিএ ৪ নিয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী হিসেবে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের এবারের ২৩ তম সমাবর্তনে স্বর্ণপদকে মনোনীত হন৷
বর্তমানে তিনি, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের ফুল টাইম লেকচারার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। ভবিষ্যতে কম্পিউটার সায়েন্সের উপর বিদেশে উচ্চশিক্ষা নেওয়ার পর নিজের অবস্থান আরো শক্ত করে গবেষণায় নিয়োজিত থাকতে চান সুমনা ইয়াছমিন৷
স্বর্ণপদক পাওয়ার বিষয়ে সুমনা ইয়াছমিন বলেন, স্বর্ণপদকে নাম আসায় অবশ্যই অনেক আনন্দবোধ করছি, তার থেকে বেশি দায়িত্ববোধ অনুভব হচ্ছে। যা পেয়েছি তা ধরে রাখতে হবে, সাথে নিজের ইম্প্রুভমেন্ট চালিয়ে যেতে হবে, সামনে পথ আরো অনেক বাকি। স্বর্ণপদক পাওয়ার পিছনে সবচেয়ে বড় অবদান তার পরিবার ও তার শিক্ষক শিক্ষিকাদের বলেও জানান।
জুনিয়রদের প্রতি সুমনা বলেন, ভালো রেজাল্ট করার পাশাপাশি নিজের স্কিল ডেভেলপমেন্টে মনোনিবেশ করতে হবে। প্রফেশনাল জগতে ভালো রেজাল্টের পাশাপাশি ভালো টেকনিক্যাল স্কিলও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্কিল যা প্রতি পদে পদে দরকার হবে তা হলো কমিউনিকেশন স্কিল। পড়াশোনার পাশাপাশি রিসার্চের মনোনিবেশ করা উচিত এবং নিজেকে ভালোবাসতে আর নিজেকে সুস্থ রাখতে শিখাটা জরুরি।