‘পাত্তা দেয়নি’ ঢাবি, রাশেদ এখন তুরস্কের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:৩২ AM , আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:৪২ AM
তুরস্কের বারটিন বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী সৈয়দ রাশেদ হাসান চৌধুরী। মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) তুরস্ক থেকে নিজের ফেসবুকে দেওয়া এক দীর্ঘ স্ট্যাটাসে তিনি নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রাশেদের গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলায়। তিনি অ্যাকাডেমিক পর্যায়ে সর্বোচ্চ (৪-এ ৪) সিজিপিএ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স-মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। এরপর তুরস্কের আঙ্কারা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষক হিসেবে যোগ দেন।
রাশেদ তুরস্কে পিএইচডি ডিগ্রি শেষ করার মাত্র আড়াই মাসের মাথায় তুরস্কের বারটিন বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগদান করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে তিনি বেসিক ইসলামিক সায়েন্স বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন।
বিভিন্ন উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয়েছে রাশেদের জীবন। শিকার হয়েছেন লাঞ্ছনা-বঞ্চনার। তবে তিনি থেমে যাননি। শুধুমাত্র স্রষ্টার উপর ভরসা করে আজ তিনি এ পর্যন্ত পৌঁছেছেন।
রাশেদ বলেন, আমার অ্যাকাডেমিক তিনটি পর্যায়ে সর্বোচ্চ সিজিপিএ ছিল। অধিক নম্বর পেয়ে ফ্যাকাল্টি ফার্স্ট হয়েছি। বিশ্বের প্রভাবশালী বাংলাদেশ ও তুরস্কের প্রেসিডেন্টদের কাছ থেকে গোল্ড মেডেল অর্জন করেছি। আমার বিশ্ববিখ্যাত স্কোপাস (Q2-Q4) ও ওয়েব অফ সাইন্সে কয়েক ডজন আর্টিকেল প্রকাশিত হয়েছে।
এতো এতো পরিশ্রমের ফলাফলে পাত্তাতো পেলামই না, উল্টো বিভিন্ন ক্ষেত্রে লাঞ্ছনা ও অপদস্ততার শিকার হয়েছি। -রাশেদ
দেশে নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার ইচ্ছা ছিলো রাশেদের। তিনি বলেন, এতো এতো পরিশ্রমের ফলাফলে পাত্তাতো পেলামই না, উল্টো বিভিন্ন ক্ষেত্রে লাঞ্ছনা ও অপদস্ততার শিকার হয়েছি।
দেশে পাত্তা না পেলেও বিদেশে সঠিক মূল্যায়ন পেয়েছেন তিনি। তুরস্কের বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান প্রক্রিয়া নিয়ে রাশেদ বলেন, তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্যাকাল্টি মেম্বার পদের জন্য রেজাল্ট, আর্টিকেল, বই, সাইটেশনসহ আরো বিভিন্ন বিষয়ে ১০০ পয়েন্টের পরীক্ষা নিয়ে থাকেন।
‘‘আমার প্রচুর অ্যাকাডেমিক কাজ থাকায় সবকিছু যোগ করলে ৪২৮ পয়েন্ট হয়ে যায়। তাই সিনেট বোর্ড লেকচারার পদের জন্য নমিনেশন না করে উল্টো সহকারী অধ্যাপক পদের জন্য চূড়ান্তভাবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে সুপারিশ করে। পরে তুরস্কের ইউজিসি সহকারী অধ্যাপক হিসেবে আমাকে মনোনীত করেন।’’
রাশেদ চলতি বছরের ৩০ জুলাই তুরস্কের আঙ্কারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিজিপিএ ৪.০০ এর মধ্যে ৪.০০ পেয়ে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট নির্বাচিত হয়ে পিএইচডি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির সমাবর্তনে অংশ নেন।
এর আগে তিনি ২০১৯ সালের জুলাইয়ে আঙ্কারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-২০১৯ স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় সর্বোচ্চ সিজিপিএ ৪.০০ এর মধ্যে ৪.০০ এবং থিয়োলজি ফ্যাকাল্টিতে রেকর্ড সংখ্যক মার্কস পেয়ে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হন।
এমন সাফল্যে তিনি প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের কাছ থেকে মোস্ট সাকসেসফুল স্টুডেন্ট এ্যাওয়ার্ড-২০১৯ লাভ করেন। এছাড়া তিনি ২০১৮ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশে তার অ্যাকাডেমিক সাফল্যের জন্য রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের কাছ থেকে স্বর্ণপদক লাভ করেন।