শিক্ষকদের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ১২:১৩ PM
মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়াসহ তিন দাবিতে কর্মবিরতি করে টানা কয়েকদিন ধরে রাজধানীতে নানা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। এরই মাঝে তাদের পক্ষ থেকে ঘোষণা এসেছে, আজকের (বুধবার) মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করা না হলে তিন দফা থেকে এক দফা জাতীয়করণের আন্দোলন শুরু করবে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা।
আন্দোলনরত এ শিক্ষক-কর্মকর্তাদের দাবি সরকারকে মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ। সংগঠনটি বলছে, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রধান চালিকাশক্তি শিক্ষক সমাজ দীর্ঘদিন ধরে সীমিত বেতনে দায়িত্ব পালন করছেন। ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি, জীবনযাত্রার ব্যয় ও অর্থনৈতিক চাপের কারণে তাদের দৈনন্দিন জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এমতাবস্থায় তাদের তিন দফা দাবি সম্পূর্ণ ন্যায্য ও যৌক্তিক, যা অবিলম্বে বাস্তবায়ন করা সরকারের নৈতিক দায়িত্ব।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) এক যৌথ বিবৃতিতে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইউসুফ আহমাদ মানসুর ও সেক্রেটারি জেনারেল শেখ মাহবুবুর রহমান নাহিয়ান এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের চলমান লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির প্রতি সংহতি প্রকাশ করে এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: আজ প্রজ্ঞাপন জারি না হলে তিন দফা থেকে এক দফা আন্দোলনের হুঁশিয়ারি শিক্ষকদের
বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় উল্লেখ করেন, শিক্ষক-কর্মচারীদের তিন দফা দাবির মধ্যে তাদের বাড়ি ভাড়া ভাতা মূল বেতনের ২০ শতাংশ নির্ধারণ করা, যা বর্তমানে অনেকের ক্ষেত্রে মাত্র ৫০০ টাকায় সীমাবদ্ধ থেকে মানবিক জীবনযাপনের সাথে অসঙ্গত। চিকিৎসা ভাতা ১,৫০০ টাকা নির্ধারণ করা, কারণ বর্তমান ৫০০ টাকায় কোনোভাবে ন্যূনতম চিকিৎসা ব্যয়ও বহন করা সম্ভব নয়। উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশে উন্নীত করা, যাতে সরকারি কর্মচারীদের মতো তাদেরও সম্মানজনক জীবনযাপন নিশ্চিত হয়। এই তিনটি দাবি শিক্ষকদের কোনো বিলাসিতা নয়, বরং জীবনধারণের ন্যূনতম প্রয়োজন ও ন্যায্য অধিকার।
তারা আরও বলেন, শিক্ষক সমাজ জাতির বিবেক। তাদের উপেক্ষা মানে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে উপেক্ষা করা। একটি সভ্য ও শিক্ষিত জাতি গঠনে তাঁদের ভূমিকা অপরিসীম, অথচ তাদের ন্যায্য দাবি বাস্তবায়নে টালবাহানা দুঃখজনক। শান্তিপূর্ণ অবস্থান ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মুখে সরকার যদি দমনমূলক আচরণ করে, সভা-সমাবেশে বাধা দেয় বা আন্দোলনকারীদের হেনস্তা করে, তা হবে নাগরিক অধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সরাসরি লঙ্ঘন। সরকারকে স্মরণ রাখতে হবে, দমননীতির মাধ্যমে কখনো ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয় না; বরং এতে সামাজিক ক্ষোভ ও অসন্তোষ বাড়ে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে আহ্বান জানাচ্ছে, অবিলম্বে শিক্ষকদের তিন দফা দাবি মেনে নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হোক। শিক্ষাক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা ও শিক্ষক সমাজের মর্যাদা রক্ষায় এটি সময়োপযোগী এবং অপরিহার্য পদক্ষেপ। শিক্ষক সমাজের ন্যায্য দাবিকে দমন নয়, বরং সম্মান জানিয়ে বাস্তবায়নই প্রকৃত উন্নয়নমুখী রাজনীতির পরিচায়ক। সরকার দ্রুত ইতিবাচক সিদ্ধান্ত না নেয়ার ফলে শিক্ষাক্ষেত্রে অচলাবস্থা সৃষ্টি হলে দায়ভার সরকারকেই বহন করতে হবে।