বিদ্যালয়ের জমির সীমানা নির্ধারণ নিয়ে সংঘর্ষ, প্রধান শিক্ষক আহত 

প্রধান শিক্ষককে মারধর করে আম্বিয়া আক্তারসহ আরও কয়েকজন
প্রধান শিক্ষককে মারধর করে আম্বিয়া আক্তারসহ আরও কয়েকজন  © সংগৃহীত

নেত্রকোনার মদনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি দখলের অভিযোগ উঠে আম্বিয়া আক্তার নামে এক নারীর বিরুদ্ধে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমানের আবেদনের প্রেক্ষিতে সার্ভেয়ার জমির সীমানা নির্ধারণ করতে গেলে সার্ভেয়ারকে লাঞ্ছিত ও প্রধান শিক্ষককে মারধর করে আম্বিয়া আক্তারসহ আরও কয়েকজন।

শুক্রবার(২০ জুন) উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নে শ্রীধরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এমন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মদন থানায় প্রধান শিক্ষক ও সার্ভেয়ার পৃথক পৃথক ভাবে অভিযোগ দায়ের করেন। 

জানা গেছে, শ্রীধরপুর গ্রামের গোলাপ মিয়ার স্ত্রী আম্বিয়া আক্তার। শ্রীধরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাংশ জমি রাতের আধাঁরে গত ২৫ মে ঘর তৈরি করে দখলে নিয়ে যায়। পরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমান জমি উদ্ধারের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।

এমন কি বিদ্যালয়ের জমি সার্ভেয়ার ধারা সীমানা নির্ধারণের জন্যও আবেদন করেন। এরই প্রেক্ষিতে শুক্রবার বিকেলের দিকে সার্ভেয়ার নাসির উদ্দিন বিদ্যালয়ের জমির সীমানা নির্ধারণ করার জন্য গেলে সার্ভেয়ারকে বাঁধা প্রদান করে। বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমানের সাথে তর্ক বির্তক হয়।

এক পর্যায়ে তারা প্রধান শিক্ষককে মারপিট করে এবং সার্ভেয়ার নাসির উদ্দিনকে লাঞ্ছিত করে। পরে এলাকাবাসী প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমানকে উদ্ধার করে মদন হাসপাতালে ভর্তি করে। এ নিয়ে প্রধান শিক্ষক উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশে ও সার্ভেয়ার ইউএনওর পরামর্শ ক্রমে পৃথক পৃথক অভিযোগ দায়ের করেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আম্বিয়া আক্তার জানান, এ জমিটি আমার ত্রিশ বছর আগে ক্রয় করা। রাস্তায় মাটি কেটে এ জমিটি ক্রয় করেছি। জমি নিয়ে আমি কোর্টে মামলাও দায়ের করেছি। এখন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জোড় করে আমার জমিটি নিয়ে যেতে চায়। আমি আমার জমি ছাড়বো না। জমিতে পিলার পোঁতে ও দিব না।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমান বলেন, এখানে একটি গর্তছিল। সরকারি বরাদ্দ দিয়ে গর্ত ভরাট করেছি। এর পরেই সে রাতের আধাঁরে জমিটি দখলে নিয়ে নেয়। সার্ভেয়ার জমির সীমানা নির্ধারণ করতে আসলে আমাকে মারধর করে।

সার্ভেয়ার নাসির উদ্দিন জানান, প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমান বিদ্যালয়ের জমির সীমানা নির্ধারণ করার জন্য একটি আবেদন করেন। এরই প্রেক্ষিতে জমির সীমানা নির্ধারণ করতে আসলে আম্বিয়াসহ কয়েকজন আমাকে বাঁধা প্রদান করে। এমনকি আমাকে লাঞ্ছিত করেছে। প্রধান শিক্ষককে মারধর করেছে এ নিয়ে ইউএনও স্যারের পরামর্শ ক্রমে আম্বিয়াসহ কয়েক জনে বিরুদ্ধে মদন থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছি।

মদন থানার ওসি তদন্ত দেবাংশু জানান, সার্ভেয়ারকে লাঞ্ছিত ও প্রধান শিক্ষককে মারধরের ঘটনায় অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ নিয়ে ইউএনও অলিদুজ্জামান জানান, এ বিষয়ে সার্ভেয়ার আমাকে জানিয়েছে বিদ্যালয়ে সীমানা নির্ধারণ করে খুঁটি পোঁততে গেলে অবৈধ দখলদার তাকে লাঞ্ছিত করেছে এবং প্রধান শিক্ষককে মারধর করেছে, এ নিয়ে থানায় মামলা দেয়ার জন্য নিদের্শনা দিয়েছি।


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!