ঋণগ্রস্তদের কোরবানির ব্যপারে ইসলামের যে বিধান
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৫:২০ PM , আপডেট: ১৩ জুন ২০২৫, ০২:৫২ PM
কোরবানি ইসলাম ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। ঈদুল আজহায় সামর্থ্যবান মুসলমানদের জন্য কোরবানি করা ওয়াজিব। তবে অনেকেই প্রশ্ন করেন, ঋণগ্রস্ত কেউ কোরবানি দিতে পারবে কি না? ইসলামি শরিয়তের আলোকে এর রয়েছে সুস্পষ্ট নির্দেশনা। ইসলামি বিধান অনুযায়ী, কোরবানি ওয়াজিব হয় সেই মুসলমান নারী-পুরুষের ওপর, যিনি প্রাপ্তবয়স্ক, মানসিকভাবে সুস্থ, মুকিম (অর্থাৎ মুসাফির নন) এবং ১০ জিলহজ ফজরের সময় থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত যেকোনো সময় প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হন।
কী পরিমাণ সম্পদ হলে কোরবানি ওয়াজিব
নেসাব পরিমাণ সম্পদের মান নির্ধারণ করা হয় সাড়ে সাত ভরি (৭.৫) স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি (৫২.৫) রুপার মূল্যের সমান সম্পদ দ্বারা। স্বর্ণ বা রুপার যেকোনো একটির নেসাব না থাকলেও যদি উভয় মিলে, অথবা নগদ অর্থ, অলংকার, প্রয়োজনের অতিরিক্ত বাড়ি-জমি, গাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য বা আসবাবপত্রসহ অন্যান্য সম্পদ একত্রে ওই পরিমাণের সমান হয়, তাহলেও কোরবানি ওয়াজিব হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: যেসব কারণে দ্রুত নষ্ট হয় স্মার্টফোন
ঋণগ্রস্ত হলে কী হবে
কেউ যদি ঋণগ্রস্ত হন, তাহলে দেখতে হবে—ঋণ পরিশোধের পর তার কাছে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদ অবশিষ্ট থাকে কি না। যদি থাকে, তাহলে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব। আর যদি ঋণ শোধের পর তার মালিকানায় নেসাব পরিমাণ সম্পদ না থাকে, তবে কোরবানি তার ওপর ওয়াজিব নয়।
এক বছরে সম্পদ থাকা শর্ত নয়
যাকাতের জন্য নেসাব পরিমাণ সম্পদ এক বছর মালিকানায় থাকা শর্ত হলেও কোরবানির ক্ষেত্রে তা নয়। বরং জিলহজ মাসের ১০ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত যেকোনো সময় যদি কেউ নেসাবের মালিক হন, তাহলেই তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে। এক্ষেত্রে বছর অতিক্রমের কোনো শর্ত নেই। (সূত্র: আহসানুল ফাতাওয়া: ৭/৫০৬)
কোরবানির গুরুত্ব
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন-‘সুতরাং তোমার প্রভুর উদ্দেশে সালাত আদায় করো ও কোরবানি করো।’ (সুরা কাওসার: ২)
অন্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন-‘যার কোরবানির সামর্থ্য রয়েছে, অথচ সে কোরবানি করে না, সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে।’ (সুনানে ইবনে মাজা: ৩১২৩)
সুতরাং, যদি ঋণগ্রস্ত কেউ নিজের দেনা শোধ করে দেওয়ার পর প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদ রাখেন, তাহলে তার ওপর কোরবানি আবশ্যক। অন্যথায় নয়। বিষয়টি ইসলামের দৃষ্টিকোণে অত্যন্ত স্পষ্ট এবং সুসংহত।