খুবিতে ১৪০ গাছ কেটে নির্মিত হচ্ছে টিএসসি ভবন

কেটে ফেলা গাছগুলো
কেটে ফেলা গাছগুলো  © টিডিসি ফটো

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি ভবন) নির্মাণের জন্য গাছ কাটায় শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ১ লাখ ১৬ হাজার ৪৭২ বর্গফুট আয়তনের টিএসসি ভবন নিমার্ণে ১৪০টি নানা প্রজাতির ছোট,বড় ও মাঝারি সাইজের গাছ কেটে নির্মিত হবে এই স্থাপনা।

এরই মধ্যে অর্ধেকের বেশি গাছ কাটা হয়ে গেছে, বাকি গুলো দ্রুত কাটা হবে। শিক্ষার্থীদের দাবি বিকল্প জায়গায় টিএসসি নির্মাণ করলে এত গাছ কাটা পড়তো না। তবে প্রশাসনের দাবি ক্যাম্পাসে জায়গা সংকটের কারনে বিভিন্ন ভবনে নির্মাণে মাস্টার প্লানের অংশ হিসাবে অপরিকল্পিত যেসব জায়গায় গাছ ছিল তার অংশ হিসাবে এসব গাছ কেটে টিএসসি নির্মাণ করা হচ্ছে। 

আরও পড়ুন: শাবি বন্ধ হলেও চলবে ভর্তি কার্যক্রম

এদিকে খুবিতে নির্বিচারে বৃক্ষ নিধনের বিরুদ্ধে  প্রতীকী প্রতিবাদ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।গতকাল হাদি চত্বরে গাছের ডালপালায় 'আমি বাঁচতে চায়' লেখা দিয়ে প্রতিবাদ করেছে।বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ আয়োজনের মাধ্যমে প্রশাসনের এমন কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

ইংরেজি ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মোস্তাক আহমেদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সম্প্রতি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের দোহাই দিয়ে নির্বিচারে গাছ কাটা হয়েছে। অতীতেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন ঘৃণ্য কাজের নজির রয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে কিছুদিনের মধ্যেই ক্যাম্পাস বৃক্ষহীন হয়ে যাবে। কয়েকটা অট্টালিকা ছাড়া আর কোনোকিছুই অবশিষ্ট থাকবে না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্যাম্পাস সংলগ্ন ২০৩ একর খালি জমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে ক্যাম্পাস সম্প্রসারণের যে উদ্যোগ নিয়ে রেখেছে, সেটি দ্রুত সম্পাদনের ব্যবস্থা করে উন্নয়ন প্রকল্পগুলো (শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল, টিএসসিসহ নতুন ভবনগুলো) সেখানে বাস্তবায়ন করতে পারতো। অথচ সেদিকে তাদের পর্যাপ্ত দৃষ্টি নেই বলেই মনে হচ্ছে।

আরও পড়ুন: হল না ছাড়ার ঘোষণা শিক্ষার্থীদের, ভিসির পদত্যাগ দাবি

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভারপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড খান গোলাম কুদ্দুস বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো গত উন্নয়নে বিভিন্ন ভবন নির্মাণ যেমন এ্যাকাডেমিক ভবন, আবাসিক হল,প্রশাসনিক ভবন,জিমনেসিয়াম, টিএসসি নির্মান মাস্টার প্লাননুযায়ী করা হয়েছে এবং করা হচ্ছে। এগুলো নির্মাণ করতে যেয়ে আগে থেকে অপরিকল্পিত ভাবে যেসব গাছ গুলো ছিল।বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনে সেগুলো ভবন নির্মাণ কেটে ফেলা হচ্ছে।

সৌন্দর্য বর্ধক কমিটি প্রতি বছর মাস্টার প্লানের বাইরের ক্যাম্পাসের ফাকা জায়গায়  নানা প্রজাতির ফলজ,বনজ, স্থায়ী ফুল  গাছ রোপন করেন। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তিগতউদ্দোগে বিভিন্ন গাছ রোপন করে থাকেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ১ লাখ ১৬ হাজার ৪৭২ বর্গফুট আয়তনের টিএসসি ভবন নিমার্ণের মোট চুক্তি মূল্য ৫৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে শুধু অডিটোরিয়ামের আয়তন হবে ৩২ হাজার ৮০৯ বর্গফুট এবং সেখানে ১ হাজার ৭১০টি আসন ব্যবস্থা থাকবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মেয়াদ ধরা হয়েছে দুই বছর। ৪তলা বিশিষ্ট এই ভবনে সাধারণ বিদ্যুৎ ব্যবস্থার পাশাপাশি জেনারেটর এবং ৫ কিলোওয়াট সক্ষমতাসম্পন্ন সোলার সিস্টেম, সিসি টিভি, অগ্নি নির্বাপন যন্ত্র ও ৫টি লিফট সুবিধা থাকবে।



সর্বশেষ সংবাদ