‘আমাকে চেনো, আমি ঢাবির শিক্ষক, তোমার চাকরি কীভাবে হয় দেখে নেব’

  • ভুল ইংরেজিতে সাংবাদিককে হুমকি উপাচার্যের

অধ্যাপক ড. শওকত আলী
অধ্যাপক ড. শওকত আলী  © সংগৃহীত ও সম্পাদিত

আমাকে চেনো, আমি ঢাবির শিক্ষক, তোমার চাকরি কিভাবে হয় দেখে নেব বলে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী ও ক্যাম্পাস সাংবাদিককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকত আলীর বিরুদ্ধে। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক তাবিউর রহমানের বিরুদ্ধে নিয়োগ জালিয়াতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে সিন্ডিকেটে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। তবে দীর্ঘদিনেও ভিসি রেজুলেশনে স্বাক্ষর না করার ব্যাপারে মন্তব্য নিতে ভিসিকে ওই সাংবাদিক কল করলে হুমকি দেন তিনি। এর আগেও এই উপাচার্য এক সাংবাদিকের সার্টিফিকেট আটকে দিবেন বলেও হুমকি দেন।

জানা যায়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক তাবিউর রহমানের বিরুদ্ধে নিয়োগ জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে। গত ২৬ নভেম্বর ১১৮তম সিন্ডিকেট সভায় তাবিউর রহমান প্রধানের নিয়োগের জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়ায় সরকারি চাকুরীবিধি ২০১৮ অনুয়ায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট। দীর্ঘদিনেও বিশ্ববিদ্যালয়টির ভিসি রেজুলেশনে স্বাক্ষর না করলে চরম সমালোচনার সৃষ্টি হয়। অভিযোগ উঠেছে, জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া ওই শিক্ষককে বাঁচাতে সক্রিয় হয়ে ওঠেছে একটি চক্র। 

আরও পড়ুন: শূন্য পদের সঠিকতা যাচাই শেষ হয়নি, ৭ম গণবিজ্ঞপ্তি কবে?

এ অভিযোগের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার প্রতিনিধি ও ইতিহাস ও প্রত্নত্ত্বত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী এম কে পুলক আহমেদ উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকত আলীর কাছে মন্তব্যের জন্য যোগাযোগ করলে ওই সাংবাদিককে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন ভিসি। শুধু তাই নয়, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ওই সাংবাদিক কিভাবে চাকরি পায় সেটিও দেখে নেওয়ার হুমকি দেন উপাচার্য শওকত।

একাধিক সিন্ডকেট সদস্য এ সিদ্ধান্তের সত্যতা নিশ্চিত করলেও উপাচার্য এরকম কোন সিদ্ধান্ত হয়নি বলে দাবি করেন। এর আগে এ ব্যাপারে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে ভিসি মন্তব্য করেছিলেন, যে আগামী সপ্তাতে স্বাক্ষর করবেন। এর পর এতদিনেও স্বাক্ষর না করায় এবং উপাচার্যের পরের বারের মন্তব্য নিয়ে ধোয়াশা তৈরি হয়েছে। তবে সাংবাদিকদের হাতে আসা সিন্ডকেটের এজেন্ডায় দেখা যায়, ১১৮তম সিন্ডিকেটের ১৪ টি এজেন্ডার মধ্যে ১১তম এজেন্ডায় বলা আছে, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক জনাব তাবিউর রহমান প্রধান ও জনাব মাহমুদুল হকের বিষয়ে ১১৩তম সিন্ডকেটে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পর্যালোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ। 

নিয়মানুযায়ী, সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের পর উপাচার্য সবগুলো সিদ্ধান্তে স্বাক্ষর করেন। কিন্তু ১১৮তম সিন্ডিকেটে অনুষ্ঠিত হওয়ার ২০দিন পার হলেও এখন উপাচার্য এসকল সিদ্ধান্তে স্বাক্ষর করেনি। এরই মধ্যে গনিত বিভাগের অধ্যাপক ড. তাজুল ইসলামের নেতৃত্ব শিক্ষক তাবিউর রহমান এবং তার বিভাগের বেশ কয়েকজন শিক্ষকসহ উপাচার্যের সাথে দেখা করেন বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুন: বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষায় যোগ্যপ্রার্থীর তালিকা প্রকাশ, নির্বাচিত ১০ হাজারের বেশি

সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে উপাচার্যকে ফোন দেয়া হলে এ সময় তিনি সাংবাদিকের সাথে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করেন। তিনি আরো বলেন, ‘এগুলো সব ভুয়া নিউজ, তোমাকে কোন সিন্ডিকেট মেম্বার এসব তথ্য দিয়েছে আমি সব জানি। তোমার সম্পর্কেও সব জানি। তুমি আমাকে চেনো না এখনো, তোমাকে আমি দেখে নেবো। কোথায় চাকরি হয় সেটাও দেখে নিব। তোমার নামে মামলা করব।’ এসময় উপাচার্য ‘ইউ নট দ্য মানে এ... এ... সাংবাদিকতা। রং আইডিয়া, রং পারপাস। হাউ ডিয়ার ইউ আর। ডু ইউ নো আন্ডারস্ট্যান্ড’ ভুলভাল ইংরেজিতেও ওই সাংবাদিককে হুমকি দেওয়ার চেষ্টা করেন।

এ বিষয়ে সাংবাদিক পুলক বলেন, রাষ্ট্রের সেনসিটিভ তথ্য ছাড়া সকল তথ্য পাওয়ার অধিকার জনগনের রয়েছে। সাংবাদিক হিসেবে আমি উপাচার্যের কাছে একটা বিষয় জানতে চেয়েছিলাম, উনি উত্তেজিত হয়ে আমার নামে মামলার হুমকি দিয়েছেন। একজন সাধারণ শিক্ষক ও একজন ছাত্রকে মামলার হুমকি দিতে পারেন না। আমি নিরাপত্তা শঙ্কায় রয়েছি।

এ ব্যাপারে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলীকে গতকাল মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) দু’বার তার মুঠোফোনে কল করা হলে দু’বারেই অন্যজন ফোন রিসিভ করে বলেন স্যার (ভিসি) ব্যস্ত আছেন বলে কল কেটে দেন। এর পর কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেনি। পরে আজ বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) একাধিকবার কল করা হলেও তিনি কল কেটে দেন।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence