ঢাকা কলেজ শিক্ষকের বক্তব্য ভাইরাল
‘সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের দিয়েই কাউন্টার মব করতে হবে’
- ঢাকা কলেজ প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:০৫ AM , আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:১০ AM
রাজধানীর সরকারি সাত কলেজকে নিয়ে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিরভার্সিটির প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। রাজধানীতে নতুন এই বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে চলছে দ্বন্দ্ব ও বিতর্ক। এ নিয়ে ঢাকা কলেজে নিয়মিত হচ্ছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি। এত উত্তেজনা ও মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে শিক্ষার্থী ও শিক্ষার্থীরা।
উত্তজনাময় এমন পরিস্থিতির মধ্যে সরকারি সিদ্ধান্ত নিয়ে ঢাকা ‘সেন্ট্রাল ইউনিরভার্সিটির গঠনের বিরুদ্ধে বেফাস মন্তব্যে করেছেন ঢাকা কলেজ শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সমাজবিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক আ.ক.ম রফিকুল আলম। ‘সেন্ট্রাল ইউনিরভার্সিটির বিরুদ্ধে ছাত্রদের দিয়েই কাউন্টার মব করতে হবে’ বলে মন্তব্য করেন তিনি। তার এমন মন্তব্যে তীব্র সমালোচনা করছেন শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন:উপকূলীয় কিশোরীরা মাসিক নিয়ে আতঙ্কে থাকে: উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় সাত কলেজকে প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি অথবা হাইব্রিড মডেল ও স্কুলিং পদ্ধতি অথবা এধরণের যে কোন পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের রূপরেখা অবিলম্বে বাতিল করার দাবিতে অনলাইন জুম মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে এই জুম মিটিংয়ে ঢাকা কলেজ শিক্ষক রফিকুল আলমের এমন মন্তব্য ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
জুম মিটিংয়ে রফিকুল আলমকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় আন্দোলনের উৎপত্তি ঢাকা কলেজ থেকে। ঢাকা কলেজের শিক্ষকরা প্রতিনিয়তই একটা চাপের মধ্যে থাকেন। ছাত্র সংগঠনগুলোর সাথে আমাদের প্রায়ই কথা হয়। তারা বলেছে যে তারা স্কুলিং মডেল চায় না এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে দরকার সাত কলেজের জন্য।
শিক্ষকদের স্বার্থ নিশ্চিতের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাত কলেজের শিক্ষক সম্পাদকরা ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দের সাথেও কোথাও বৈঠক করতে পারলে ভালো হয়। ছাত্রদেরকে নামাইতে না পারলে আন্দোলনটা (শিক্ষকদের) ফলপ্রসু হবে না। ছাত্রদের দিয়েই কাউন্টার মব বা যাই বলেন করতে হবে। ইডেন কলেজ ওইদিন যেটা করেছে চমৎকার করেছে। এভাবে প্রত্যেক কলেজ থেকে যদি করা যায় তাহলে রেজাল্ট আসবে স্যার। এই ব্যাপারে আমাদের আরও জোরালোভাবে দরবার বা যাই করা লাগে করতে হবে।
শিক্ষকের বিতর্কিত মন্তব্যের বিষয়ে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রোমান জাবির ফেসবুকে লেখেন, শিক্ষকগণ যদি আমাদের সমস্যা সমাধানের জন্য নিজে থেকে কাজ করত তাহলে আমরা কখনো আন্দোলনই করতাম না! এখন যখন আমরা আন্দোলন করতেছি অধিকার আদায়ের জন্য, তখন হাসিনা স্টাইলে আমাদের উপর মব তৈরি করার পরিকল্পনা। হাসিনার তৈরি করা লাঠিয়াল বাহীনি আর যাইহোক সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে কথা বলবে না। আমাদের শিক্ষকগণের মধ্যে কয়েকজন এই উক্তির জ্বলন্ত প্রমাণ।
এ বিষয়ে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থী নাঈম হাওলাদার বলেন, রফিকুল স্যারের একটি মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, আমরা শিক্ষকদের থেকে সবসময় নৈতিকতা শিখি, সেখানে তিনি একজন শিক্ষক হয়ে কিভাবে শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি দাড় করানো যায়, কিভাবে মব করে শিক্ষার্থীদের একটি যৌক্তিক আন্দোলনকে প্রতিহত করা যায় সেটা নিয়ে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার সমিতির সাথে পরিকল্পনা করতেছে।
তিনি আরও বলেন, কিছুদিন আগে ঢাকা কলেজের উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীরা স্নাতক শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি হয়, পাশাপাশি ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশের বিরোধিতা করে, আইনের খসড়ায় উচ্চমাধ্যমিকের সবকিছু স্পষ্ট থাকার পরেও যখন তাদের হঠাৎ উত্থান হয় ঠিক তখনই আমার সন্দেহ জাগে যে, এর পিছনে কোনো অদৃশ্য শক্তি কাজ করছে কিনা! কিন্তু কোনো তথ্য প্রমাণ না থাকার কারণে কথা বলার সুযোগ হয়নি। আজকে যখন সম্পাদক সাহেবের বক্তব্যটি ভাইরাল হয়, তখন তার কথার প্রেক্ষিতে আমার সব সন্দেহ যেনো বাস্তবে রূপ নিয়েছে।