বান্ধবীর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ ইবি ছাত্র ও ছাত্রীর

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো  © সংগৃহীত

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর বিরুদ্ধে বান্ধবীর ছবি ব্যবহার করে ভুয়া ফেসবুক একাউন্ট খুলে একাধিক শিক্ষার্থীকে যৌন হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন বিরোধী কমিটির নিকট সামাজিক ও মানসিক হেনস্তার বিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থী। 

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থী হলেন- ইংরেজি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের সুরাইয়া ইয়াসমিন শোভা এবং মার্কেটিং বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের নাফিজ আহমেদ। আর অভিযুক্ত শিক্ষার্থী হলেন লোকপ্রশাসন বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের জান্নাতুল মাওয়া স্নেহা।

পৃথক দুই অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, তারা দুজনেই তাদের সহপাঠী দ্বারা (জান্নাতুল মাওয়া স্নেহা; বিভাগ লোক প্রশাসন ২০-২১) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যৌন হেনস্তার শিকার হয়েছেন। তাদের নাম ও ছবি বিকৃতভাবে ব্যবহার করে বিভিন্ন অসঙ্গতিপূর্ণ, অপমানজনক ও কুরুচিপূর্ণ কনটেন্ট প্রকাশ ও প্রচার করা হচ্ছে, যা তাদের ব্যক্তিগত মর্যাদা, সামাজিক অবস্থান ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর গুরুতর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় তদন্ত সাপেক্ষে দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তারা। 

জানতে চাইলে ভুক্তভোগী সুরাইয়া ইয়াসমিন শোভা বলেন, আমার উপর ওর কোন ব্যক্তিগত আক্রোশ থাকার কথা না কারণ আমাদের বিভাগ আলাদা। ও ওর বিভাগের কয়েকজনের সাথে এ কাজ করেছে যারা আমার খুব ক্লোজ ফ্রেন্ড। আমি একদিন ওদের ক্লাসে গিয়েছিলাম তখন ও আমার সাথেও টুকটাক কথা বলে। আমরা শুরুর দিকে ওকেই সন্দেহ করেছিলাম। যেদিন আমি ওদের ক্লাসে যাই সেদিনই আমার নাম, ছবি ব্যবহার করে কুরুচিপূর্ণ পোস্ট করা হয়। আমার মনে হয়েছে ও সেক্সুয়ালি ফ্রাস্ট্রেটেড একটা মেয়ে। আমাদের ফ্রেন্ড সার্কেলের সবাই ক্যাম্পাসে মোটামুটি পরিচিত মুখ যেটা ওর নাই। এ জায়গা থেকে ওর হিংসা বা কষ্ট হতে পারে। 

স্নেহার ব্যাপারে কীভাবে নিশ্চিত হলেন এমন প্রশ্নের জবাবে শোভা বলেন, গতকাল আমরা ওকে থানায় নিয়ে গিয়েছিলাম। ও আমাদের ফোন চেক করতে না দিলেও থানায় একপর্যায়ে ওর ফোন চেক করে আমাদের নাম খোলা ফেইক অ্যাকাউন্ট, AI দিয়ে এডিট করা আমাদের এক ফ্রেন্ডের নগ্ন ছবি, সেই অ্যাপ, আমাদের ভাইরাল হওয়া এডিটেড ছবিগুলো পাওয়া গেছে। তখনি আমরা নিশ্চিত হয়ে যাই যে এসব কাজ ওই করেছে। 

তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে আমরা দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা এবং ওর বিভাগের শিক্ষকদের জানানোর পর অস্বীকার করে যে আইডিটা ও খুলছে কিন্তু আইডির একসেস অন্য কারো কাছে ছিল, সে এসব করেছে। এটা মোটেও বিশ্বাসযোগ্য কথা না। এরকম মানসিক বিকারগস্ত একটা মেয়ের সাথে আমরা নিরাপদবোধ করছি না। আমরা চাই স্নেহাকে ক্যাম্পাস থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হোক। 

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ছাত্রীকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল করা হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যৌন হয়রানি প্রতিরোধকল্পে গঠিত কমিটির আহবায়ক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন বেগম রোকসানা মিলি বলেন, বিষয়টি আমি মৌখিক ভাবে গতকাল শুনেছি। সে আমার বিভাগের ছাত্রী। সে আমার বিভাগের ছাত্রীদের সম্পের্কেই বলেনি, অন্য বিভাগও জড়িয়েছে। তবে আজকের লিখিত অভিযোগটি এখনো আমার হাতে এসে পৌঁছেনি। অভিযোগপত্র হাতে এলে আমি কমিটির বাকি সদস্যদের সাথে বসে সিদ্ধান্ত নিব।


সর্বশেষ সংবাদ