সাহসী সাংবাদিকতার সম্মাননা পেলেন বেরোবিসাসের ৫ সাংবাদিক
- বেরোবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৩ আগস্ট ২০২৫, ১০:০৯ PM , আপডেট: ০৪ আগস্ট ২০২৫, ০৩:২০ PM
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সাহসীকতার সঙ্গে সংবাদ সংগ্রহ ও নির্ভীক সাংবাদিকতার জন্য সম্মাননা পেয়েছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (বেরোবিসাস) পাঁচ সাংবাদিক।
রবিবার (৩ আগস্ট) বিকেলে ঢাকায় তথ্য ভবন মিলনায়তনে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট আয়োজিত অনুষ্ঠানে তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম এ সম্মাননা সাংবাদিকদের হাতে তুলে দেন।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সম্মাননা পাওয়া পাঁচ সাংবাদিক হলেন সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন, সহসভাপতি, মো. আবু সাঈদ, কোষাধ্যক্ষ মো. আল আমিন সাদিক সায়েম, কার্যনির্বাহী সদস্য, সাজ্জাদুর রহমান ও সদস্য মো. তাওহীদুল হক সিয়াম।
মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সাংবাদিকতা কখনো শুধু খবর লেখা নয়। এটি হচ্ছে সত্যের পক্ষে দাঁড়ানো, অন্যায়ের বিরুদ্ধে কলম ধরা, এবং অনেক সময় নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও জনগণের পক্ষে কথা বলা। সাহসী সাংবাদিকতা মানে হচ্ছে নিপীড়কের মুখোশ খুলে সত্যকে সামনে আনা, যেটা সহজ নয়, আর সেই কঠিন কাজগুলো করার পথেই আমাদের হাঁটতে হয়। এ সম্মাননা কেবল আমার একার নয়। এই সম্মান সেই সাংবাদিকের, যিনি প্রতিদিন ভয়কে জয় করে, চাপকে উপেক্ষা করে, সত্য প্রকাশে নির্ভীক ভূমিকা রাখছেন।আমার সহকর্মীরা, আমার পরিবার এবং আমার পাঠকেরা, যারা সবসময় আমার পাশে থেকেছেন, তাদের সহায়তা ছাড়া আজকের এই মুহূর্ত অসম্ভব ছিল।’
আরও পড়ুন: ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি: কলেজগুলোর বিজ্ঞান ইউনিটের আসন সংখ্যা জেনে নিন
আল আমিন সাদিক সায়েম বলেন, ‘“আজ যে সম্মান আমাকে প্রদান করা হয়েছে, তা ছিল একেবারেই অপ্রত্যাশিত। ১৬ জুলাইয়ের পরিস্থিতি ছিল অত্যন্ত ভয়াবহ, ছাত্রলীগ পুলিশ নির্মমভাবে হামলা চালিয়ে যাচ্ছিল সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর, ক্যাম্পাস সাংবাদিক হিসেবে,তখন আমার একমাত্র দায়িত্ব হয়ে ওঠে, এই নির্মমতাকে জাতির সামনে তুলে ধরা, সেদিন এই নির্মমতার বিচার কিংবা প্রতিরোধের জন্য আমাদের পাশে কেউ ছিলনা, তখন নিজের মোবাইল ফোনটিই হয়ে ওঠে বিবেকের প্রতিচ্ছবি,হয়ে ওঠে আমার প্রতিবাদের অস্ত্র। সব কিছুর শেষ আছে এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার একদিন হবে, সেই লক্ষ্যেই ক্যামেরা নিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম, সেই নির্মমতার দৃশ্য জাতির সামনে তুলে ধরার জন্য।’
তাওহিদুল হক সিয়াম বলেন, ‘সাহসী সাংবাদিকতার জন্য সম্মাননা পাওয়া আমার জন্য এক গর্বের ও অনুপ্রেরণার মুহূর্ত। এটি শুধু আমার ব্যক্তিগত অর্জন নয়, বরং সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে নিবেদিত প্রতিটি সংবাদকর্মীর প্রতি সমাজের স্বীকৃতি। এই পুরস্কার আমাকে আরও দায়বদ্ধ করেছে নির্ভীকভাবে মানুষের পক্ষে কথা বলার এবং সাংবাদিকতার নীতিকে অটলভাবে ধারণ করার। আমি এই সম্মাননা উৎসর্গ করছি তাদের, যারা ভয় ও বাধা উপেক্ষা করে সত্য প্রকাশে দৃঢ় থাকেন।’
আরও পড়ুন: সাজিদের মৃত্যু: উচ্চতর তদন্তের সুপারিশ কমিটির
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাউসার আলম, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ প্রমুখ।
শহীদ সাংবাদিক, আহত ও সাহসী সাংবাদিকতায় মোট তিনটি ক্যাটাগরিতে ছয় শতাধিক সাংবাদিক থেকে বাছাই করে সারা দেশের মোট ১৯৭ জন সাংবাদিককে এ সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে পাঁচজন শহীদ সাংবাদিক ছিলেন।