সাজিদের মৃত্যু: উচ্চতর তদন্তের সুপারিশ কমিটির

সাজিদ আবদুল্লাহ
সাজিদ আবদুল্লাহ  © সংগৃহীত

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শাহ আজিজুর রহমান হলের পুকুর থেকে আল কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী সাজিদ আবদুল্লাহর লাশ ভেসে ওঠার ঘটনায় সরকারের উচ্চপর্যায়ের তদন্ত সংস্থার মাধ্যমে তদন্তের সুপারিশ করেছে প্রশাসনের গঠিত ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি।

রবিবার (৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র নজরুল কলা ভবনের তৃতীয় তলায় ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সভাপতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির আহ্বায়ক ও কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন।

কমিটির সদস্য হিসেবে রয়েছেন শাহ আজিজুর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. এ টি এম মিজানুর রহমান, লালন শাহ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. গাজী মো. আরিফুজ্জামান খান, আল-হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহা. খাইরুল ইসলাম।

কমিটির সদস্যরা জানান, ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি তাদের প্রতিবেদনে মৃত্যুর ঘটনায় কাউকে দোষী হিসেবে চিহ্নিত করতে পারেনি। তবে সাজিদের মৃত্যু যে পানিতে ডুবে হয়নি, সে বিষয়ে অনেকটা নিশ্চিত হতে পেরেছেন তারা।

আরও পড়ুন: প্রতি ভুলে কাটা যাবে দশমিক ২৫, সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির ভর্তি পরীক্ষায় আরও যা থাকছে

পানিতে ফেলার আগেই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আল কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সাজিদ আবদুল্লাহকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে ফরেনসিক প্রতিবেদনে জানা গেছে। রবিবার (৩ আগস্ট) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গঠিত ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির কাছে ভিসেরা প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন পুলিশের সদস্যরা।

ফরেনসিক রিপোর্ট অনুযায়ী, সাজিদ আবদুল্লাহকে প্রথমে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এরপরে তার মৃতদেহ পানিতে ফেলা হয়েছে। সাজিদের মৃত্যু ময়নাতদন্তের ৩০ ঘণ্টা আগে হয়েছে বলেও চূড়ান্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাজিদ আব্দুল্লাহ পানিতে ডুবে মারা গেছে এমন ঘটনার কোন শক্তিশালী প্রমাণ কমিটির হস্তগত হয়নি। এ ছাড়া ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন অনুযায়ী সাজিদের ফুসফুস ও পাকস্থলীর ভেতরে পানি পাওয়া যায়নি, যা তিনি পানিতে ডুবে মারা যাননি, সে বিষয়ে নিশ্চয়তা দেয়। 

এ ছাড়া যেদিন সাজিদকে সর্বশেষ দেখা গেছে, তার পরও রাতে সাজিদের মোবাইলে কল দিলে তা রিসিভ হয়েছে বলে জানা গেছে। রিসিভ হওয়ার সময় একটি কলের লোকেশন ছিল শেখপাড়া, বসন্তপুর এলাকায় এবং পরের কল রিসিভের টাওয়ার লোকেশন ছিল বিজ্ঞান ভবনের আশপাশে। এতদ্রুত স্থান পরিবর্তনের বিষয়টিও ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির কাছে সন্দেহের উদ্রেক করেছে বলে তারা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে।

আরও পড়ুন: ‘তারুণ্যের প্রথম ভোট, ধানের শীষের জন্য হোক’

কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব পাওয়ার পর অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে প্রতিটি তথ্য বিশ্লেষণ করেছি, যাচাই-বাছাই করেছি। কমিটির সদস্যরাও রাত-দিন পরিশ্রম করে সাজিদের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করেছে। আমরা ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি ছিলাম। আমাদের কাজ ছিল সাজিদের মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত ফ্যাক্টসগুলো তুলে ধরা। আমরা সেটা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে করতে পেরেছি। আমরা প্রশাসনের কাছে সুপারিশ করেছি সরকারের উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটির মাধ্যমে সাজিদের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করতে।’


সর্বশেষ সংবাদ