ভাস্কর্য ইস্যুতে কমিটি গঠন করল নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়
- নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৫, ০৭:৩৭ PM , আপডেট: ২২ জুন ২০২৫, ১০:১৩ PM
ঈদুল আযহার ছুটি চলাকালীন সময়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কবি নজরুলের গানের নামে স্থাপিত ‘অঞ্জলি লহ মোর’ ভাস্কর্যটির একটি বড় অংশ ভেঙে ফেলার পর সংস্কার কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
রবিবার (২২ জুন) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে লোকাল প্রজেক্ট ইমপ্লিমেন্টেশন কমিটির সভায় এই কমিটি গঠন করা হয়। ট্রেজারার অধ্যাপক ড. জয়নুল আবেদীন সিদ্দিকীকে আহ্বায়ক এবং উপ-প্রধান প্রকৌশলী মো. মাহবুবুল ইসলামকে সদস্য-সচিব করে গঠিত ১৫ সদস্যবিশিষ্ট কমিটিকে আগামী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়নাধীন; জলাশয়ের চতুর্দিকে রিটেইনিং স্ট্রাকচার নির্মাণসহ সৌন্দর্যবর্ধন কাজ চলমান রয়েছে। কাজটি সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রণয়নকৃত এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত মূল নকশা এবং পরামর্শক কর্তৃক প্রদত্ত ডিটেইল ড্রইং পর্যালোচনাপূর্বক সংস্কারের বিষয়ে প্রতিবেদন প্রদানের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কাজের বিপরীতে ডিপিপি’র বরাদ্দকৃত অর্থের মধ্যেই সংস্কার কাজ সম্পন্নের বিষয়ে সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
১৫ সদস্যবিশিষ্ট কমিটিতে আরও রয়েছেন কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইমদাদুল হুদা, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. সাখাওয়াত হোসেন সরকার, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. বখতিয়ার উদ্দিন, চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. তপন কুমার সরকার, চারুকলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান নগরবাসী বর্মণ, ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রায়হানা আক্তার, অগ্নিবীণা হলের প্রভোস্ট মো. হারুনুর রশিদ, অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. তানজিল হোসেন, চারুকলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল মঞ্জুর এলাহী, লোক প্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. অলি উল্লাহ, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের পরিচালক প্রকৌশলী মো. হাফিজুর রহমান, প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী জুবায়ের হোসেন, নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ মোফাছিরুল ইসলাম।
এর আগে গত ১৭ জুন পূর্ব নির্ধারিত কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই ‘অঞ্জলি লহ মোর’ ভাস্কর্যটি ভাঙচুর শুরু হয়। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা শুরু হলে বুধবার (১৮ জুন) অনলাইনে এক জরুরি সভা করে কাজ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
জানা যায়, ২০১৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩টি পুকুর সংস্কার ও সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৪ কোটি ১৭ লাখ ৭৪ হাজার টাকার বাজেট অনুমোদন করা হয়। পরবর্তীতে নকশা অনুযায়ী কাজ শুরু হলেও পরিকল্পনার বাইরে গিয়ে ভাস্কর্যটি স্থাপন করেন সাবেক উপাচার্য সৌমিত্র শেখর। এর ব্যয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বহন করে তবে পরে তা পরিকল্পনায় সংযোজন করা হয়নি।
এদিকে ভাস্কর্য ভাঙা-গড়ায় প্রশাসনের অনিয়মের তদন্ত, মূল নকশা অনুসারে ভাস্কর্যটি সংস্কার এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয়কারীদের থেকে জরিমানা আদায় ও শাস্তির আওতায় আনার ৩ দফা দাবিতে রবিবার উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।