ববিতে ঈদ, প্রহরায় ব্যস্ত নিরাপত্তা কর্মীরা

ববিতে ঈদ, প্রহরায় ব্যস্ত নিরাপত্তা কর্মীরা
ববিতে ঈদ, প্রহরায় ব্যস্ত নিরাপত্তা কর্মীরা  © টিডিসি

চারপাশে যখন ঈদের আনন্দ, প্রিয়জনের কাছে ফেরার উচ্ছ্বাস, তখন কেউ কেউ থেকে যান নিরবে নিজের কর্তব্যে। তাদের জন্য ঈদ মানেই—দায়িত্ব, ত্যাগ আর চাপা কষ্ট। এমনই কিছু মানুষ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যরা।

মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) ১ জুন থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত ছুটিতে গেলেও, পরিবারের টানে বাড়ি ফেরা হয়নি ৪০ জন আনসার সদস্যের মধ্যে ৩২ জনের। ঈদের দিনে যখন অন্যরা পরিবারে কাটান ভালোবাসার মুহূর্ত, তখন এরা প্রহরায় থাকেন নিঃশব্দে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে দায়িত্ব পালনরত আনসার সদস্য সোহেল রানা বলেন, “২০১৯ সাল থেকে এই বাহিনীতে কাজ করছি। ঈদের সময় পরিবারের কাছে যেতে না পারার কষ্টটা সবচেয়ে বেশি হয়। আমার ছোট্ট একটা মেয়ে আছে, বয়স মাত্র ৩ বছর। কোরবানি দিতে পারি না, প্রতিবেশীরা যা দেয়, সেটুকুই আমার পরিবার খায়, তাও আমাকে ছাড়া। চাকরিতে আসার পর থেকে কোনো উৎসব ঠিকভাবে উপভোগ করতে পারিনি।”

তিনি বলেন, “যখন এক-দু’দিন ছুটি মেলে, ততক্ষণে পরিবারের সবাইকে কাঁদিয়ে আবার ফিরে আসতে হয় কাজে। এই আসা-যাওয়াতেই আনন্দটা হারিয়ে যায়।”

আরেক আনসার সদস্য মাহাফুজুল হাসান শিফু বলেন, “আমাদের পরিবার তো দুইটা—একটা বাড়িতে, একটা এখানে ক্যাম্পাসে। একসঙ্গে খাই, একসঙ্গে সময় কাটাই। তাও মাঝে মাঝে সন্তান আর স্ত্রীর কথা খুব মনে পড়ে। মা ফোনে বলল, ‘বাড়িতে আসবি না?’ আমি তখন মাকে বুঝিয়ে বললাম, ঈদের পরেই যাব।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভবনে দায়িত্বে থাকা কামরুল ইসলাম বলেন, “যেহেতু আমরা সবাই পরিবারের সঙ্গে থাকতে পারি না, একটু তো খারাপ লাগে। তবে এটাকেই আমরা কর্মস্থল, পরিবার ভেবে নিয়ে দিনটা কাটাই। ঈদের দিনটিতে একসঙ্গে যতটুকু পারি, নিজেরা আয়োজন করি।”

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্লাটুন কমান্ডার (এপিসি) ইউসুফ আলী বলেন, “১২ বছরের চাকরিজীবনে মাত্র একবার পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে পেরেছি। তবুও দায়িত্বে থাকতে পারাটাই গর্বের। বেতন-বোনাস সময়মতো পাই, এটুকু শান্তি দেয়। ঈদের দিন সবাই মিলে কিছু আয়োজন করি—খুশিটা ভাগ করে নিই।”

প্রাসঙ্গত, বর্তমানে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪০ জন আনসার সদস্য কর্মরত আছেন, যাদের মধ্যে ৩১ জন পুরুষ এবং ৯ জন নারী। এদের মধ্যে এবারের ঈদে মাত্র ৮ জন সদস্য ছুটি পেয়েছেন। প্রতিমাসে তারা ১৬ হাজার টাকা বেতন পান এবং ঈদের বোনাসসহ ২৯ হাজার টাকা পেয়েছেন। বিবাহিত সদস্যরা রেশন হিসেবে প্রতি মাসে ২৮ কেজি চাল, ২৮ কেজি গম, ২ লিটার তেল, ২ কেজি ডাল এবং ২ কেজি চিনি পান।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence