ইবিতে নতুন তিন অনুষদ, পূরণ হলো শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি

যুগান্তকারী সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়
যুগান্তকারী সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়  © টিডিসি ফটো

শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) আরও তিনটি নতুন অনুষদ বাড়ানো হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে একদিকে শিক্ষার্থীরা পাবে শিক্ষার সুষ্ঠু মান। অপরদিকে, গবেষণারও সুযোগ আরও বিস্তৃত হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন মহল।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, একাডেমিক কার্যক্রম আরো বেশি গতিশীল করতে গত ১২ নভেম্বর অনুষদ বিন্যাসে পরিবর্তন আনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি অনুষদের অধীনে ৩৩টি বিভাগ পরিচালিত হতো। এখন থেকে এসব বিভাগ পুনঃবিন্যাস করে আটটি অনুষদের অধীন অন্তভূক্ত করা হয়েছে।

অনুষদ পুনঃবিন্যাস অনুযায়ী, মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদকে বিভক্ত করে কলা অনুষদ এবং সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ করা হয়েছে। ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদকে ভেঙ্গে করে বিজ্ঞান অনুষদ, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ এবং জীব বিজ্ঞান অনুষদ করা হয়েছে। তবে ধর্মতত্ত্ব অনুষদ, আইন ও শরীয়াহ অনুষদ এবং ব্যবসায় প্রশসন অনুষদে কোন ধরনের পরিবর্তন আনা হয়নি।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং টেনোলজি অনুষদ ও ডিগ্রির দাবিতে ২০০৮ সাল থেকে আন্দোলন করে আসছে বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থীরা। তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফয়েজ মুহাম্মদ সিরাজুল হক একই অনুষদের শিক্ষক হওয়ায় আন্দোলনকারীরা তাদের দাবি পূরণের স্বপ্ন দেখেন। এছাড়া সে সময় উপাচার্য শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণের প্রতিশ্রুতি দিলেও বিভিন্ন প্রতিকূলতার কারণে তা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে একই দাবিতে আবারও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চলমান রাখে।

এরপর বর্তমান প্রশাসন দায়িত্ব গ্রহণের পর বিষয়টি আমলে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্গানোগ্রামে অন্তভূক্ত করে। এরপর অর্গানোগ্রমটি শিক্ষা মন্ত্রণালয় জমা দিলে চলতি বছরের ২১ জুন সেটি অনুমোদন দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। অর্গানোগ্রামে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচটি অনুষদের পরিবর্তে আটটি করার প্রস্তব করা হয়। সর্বশেষ গত ১৩ নভেম্বর অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ করেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া গত বুধবার নতুন এই তিন অনুষদে ডিন নিয়োগ দেয় প্রশসান।

এদিকে, অনুষদ বৃদ্ধির খবর শোনা মাত্রই উল্লসিত হয়ে উঠে শিক্ষার্থীরা। খবর পেয়ে মুহুর্তের মধ্যেই বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশসনকে ধন্যবাদ জানায় তারা। এছাড়া প্রশাসনের এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে বিভিন্ন মহলের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছাও জানানো হয়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রোনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী কামরুজ্জমান বলেন, আমাদের দীর্ঘ দিনের দাবি পূরণ করেছে প্রশাসন। এ জন্য প্রশসনের সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। এর আগে আমরা একই অনুষদে থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং এবং টেকনোলজির আলাদা মান পেতাম না। এখন অনুষদ আলাদা হওয়াতে দুটি মানই পাব। এর মাধ্যমে আমাদের শিক্ষার মান বৃদ্ধি এবং ভবিষ্যতে চাকুরির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার বাড়বে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ আসকারী বলেন, সমসাময়িক প্রেক্ষাপট এবং চাহিদা অনুয়ায়ী নতুন আঙ্গিকে অনুষদ ভাগ করা হয়েছে। এর ফলে একদিকে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে, অন্যদিকে চাকুরির বাজারে ডিগ্রিও মূল্যায়ন হবে। অচিরেই বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন বিভাগ নিয়ে কৃষি বিজ্ঞান অনুষদ অন্তভূক্ত করণের ইচ্ছা আছে বলে জানান উপাচার্য।


সর্বশেষ সংবাদ