ঢাবির হল ভবনে ধস, প্রভোস্ট বললেন ইঁদুরের উৎপাত!
- রায়হান আহমেদ, ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৭ এপ্রিল ২০১৯, ০৮:১৮ PM , আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৯, ০৮:৪৩ PM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম (এফএইচ) হলের এক্সটেনশন ভবনের নিচ তলায় মাটি ধস ও ভবনের একটা অংশ হেলে পড়েছে। এতে সেখানে বসবাসরত শিক্ষার্থীরা চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, হলের এক্সটেনশন ভবনের পূর্ব কোণায় ওয়াশরুমের কিছু অংশ মাটির নিচে দেবে গেছে। এছাড়াও ভবনটির পিছনে গিয়ে দেখা যায়, ভবনের একটা অংশও নিচের দিকে হেলে পড়েছে।
ওই ভবনে বসবাসরত শিক্ষার্থীরা জানান, তারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় আছেন এবং যেকোনো সময় সেখানে ভয়ংকর বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, পুরনো এ ভবনটি মূলত চারতলা বিশিষ্ট। কিন্তু প্রকৌশলীর নিষেধ সত্ত্বেও নতুন করে ভবনের আরও ১ তলা বর্ধিত করার কাজ শুরু করেছে হল প্রশাসন। ফলে উপরের বাড়তি চাপ পড়েছে নিচের দিকে। এ কারণেই পুরনো এ ভবনের নিচ তলায় মাটি ধসে যায়।
সানজিদ সাব্বির শাকিল নামে এ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, কিছুদিন আগে হঠাৎ করে ভবনের দক্ষিণ দিকের ওয়াশরুমের কিছু অংশ মাটির নিচে দেবে গেছে। এমনকি ভবনের দক্ষিণ অংশ অন্য অংশ থেকে কিছুটা নিচু মনে হচ্ছে। আমি থাকি তৃতীয় তলায়। নিচের তলা যদি ধ্বসে পড়ে তাহলে উপরের সবগুলো ফ্লোর ধ্বসে পড়বে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমরা সবাই চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে বাস করছি। আমরা যেহেতু প্রথম বর্ষের সেহেতু বড় ভাইদের কথার বাইরে গিয়েও কিছু বলতে পারছি না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রথম বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমাদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ঢাবিতে ১৫ অক্টোবরের মতো আরেকটি ট্র্যাজেডি নেমে আসতে পারে। তিনি আরো বলেন, আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা হল প্রভোস্টের সাথে এ বিষয়ে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন, ‘আমরা ইঞ্জিনিয়ার এনে পর্যবেক্ষণ করেছি। এটা তেমন জটিল কিছু নয়, অতিরিক্ত ইঁদুর বৃদ্ধির ফলে এমনটা হয়েছে! আমরা দ্রুত এর ব্যবস্থা নেবো।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ফজলুল হক মুসলিম হলের প্রভোস্ট ড.অলিউর রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এটা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমরা বুয়েট থেকে ইঞ্জিনিয়ার এনে এটা পরীক্ষা করিয়েছি। তারা বলেছেন এতে শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। নিচে ইঁদুরের সমস্যার কারণে মাটি ধ্বসে গিয়েছিল যা পুরো ভবনের উপর কোনো প্রভাব ফেলবে না।
উল্লেখ্য, ১৯৮৫ সালের ১৫ অক্টোবর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের জরাজীর্ণ একটি ভবন যেটি টিভি রুম হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিলো সেটি ধসে পড়ে। এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রায় ৪০ জন ছাত্র, কর্মচারী ও অতিথি প্রাণ হারান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এই বেদনাদায়ক দিনটিকে স্মরণ করে প্রতিবছর ১৫অক্টোবর ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়।