স্থায়ী সনদ না নিলে কার্যক্রম বন্ধ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনে আসছে বড় পরিবর্তন
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৫, ০৫:২২ PM , আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৩:২২ PM
দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয় ১৯৯২ সালে। তখন সংখ্যাটি ছিল মাত্র দুইটি। তবে বর্তমানে এই সংখ্যা ১১৬টি। এত বিপুলসংখ্যক বিশ্ববিদ্যালয়কে পরিচালনার জন্য ২০১০ সালের আইনটি সময়োপযোগী নয় বলেই সরকার মনে করছে। এ কারণে আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কার্যক্রম আরও সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে ২০১০ সালের আইন সংশোধন করে তা যুগোপযোগী করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সংশোধিত আইনের খসড়ায় বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় একাধিক কঠোর শর্ত ও বিধিনিষেধ প্রস্তাব করা হয়েছে।
আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, আইন লঙ্ঘন করলে অনূর্ধ্ব পাঁচ বছর কারাদণ্ড বা ৫০ লাখ টাকা জরিমানা, অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। বর্তমানে এই জরিমানার পরিমাণ মাত্র ১০ লাখ টাকা। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার অনুমতির সাত বছরের মধ্যে স্থায়ী সনদ নিতে না পারলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও সংশোধনী খসড়া সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, “আইনের সংশোধন প্রক্রিয়া এখনও চলমান। খসড়া চূড়ান্ত হয়নি। কিছু বিষয় নিয়ে এখনও কাজ চলছে।”
স্থায়ী সনদের বাধ্যবাধকতা
আইনে বলা হচ্ছে, সাময়িক অনুমতির সাত বছর ও নবায়নের অতিরিক্ত পাঁচ বছর—মোট ১২ বছরের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে স্থায়ী সনদ নিতে হবে। তা না হলে ভর্তিসহ সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে।
ব্যাংকে জমার অঙ্ক বাড়ছে
ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য বর্তমানে ৫ কোটি টাকা ব্যাংকে জমা রাখার শর্ত রয়েছে, যা বাড়িয়ে ৮ কোটি টাকা করা হচ্ছে। অন্য মেট্রোপলিটন এলাকায় ৫ কোটি এবং অন্যান্য এলাকায় ৩ কোটি টাকা জমা রাখার কথা বলা হয়েছে।
জমির পরিমাণ
আগে যেখানে ১ বা ২ একর জমির কথা ছিল, সেখানে এখন যেকোনো এলাকায় ৫ একর নিষ্কণ্টক জমি থাকার শর্ত রাখা হচ্ছে।
উপাচার্য নিয়োগে কড়াকড়ি
ভিসি হতে হলে ২০ বছর স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। শিক্ষাজীবনে তৃতীয় শ্রেণি পেলে ভিসি হওয়া যাবে না। একজন ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি ভিসি থাকতে পারবেন না। পদ শূন্য হওয়ার চার মাস আগেই তিনজন যোগ্য প্রার্থীর নাম সরকারের কাছে পাঠাতে হবে। প্রো-ভিসি ও ট্রেজারার নিয়োগেও শিক্ষাগত যোগ্যতায় পরিবর্তনের প্রস্তাব রয়েছে।
শাস্তির মাত্রা বাড়ছে
আইন লঙ্ঘন করলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড, ৫০ লাখ টাকা জরিমানা, অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। আগে এই জরিমানা ছিল ১০ লাখ টাকা।
যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি
বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধে নির্ধারিত কমিটি গঠনের বাধ্যবাধকতা রাখা হচ্ছে। সাম্প্রতিক বিভিন্ন অভিযোগ ও আলোচনার পর এই প্রস্তাব যুক্ত করা হয়েছে।