বঙ্গোপসাগরভিত্তিক টেকসই উন্নয়ন ও সমুদ্রসচেতনতা নিয়ে আইইউবিতে আন্তর্জাতিক সেমিনার

সেমিনারে অতিথিরা
সেমিনারে অতিথিরা  © টিডিসি

রাজধানীর বসুন্ধরায় অবস্থিত ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে (আইইউবি) বঙ্গোপসাগরকেন্দ্রিক অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও টেকসই উন্নয়ন নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার (২৯ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিএমকে লেকচার গ্যালারিতে ‘বঙ্গোপসাগরভিত্তিক অর্থনৈতিক সম্ভাবনার চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সেমিনারটি  অনুষ্ঠিত হয়। এটি যৌথভাবে আয়োজন করে আইইউবির সেন্টার ফর বে অব বেঙ্গল স্টাডিজ (সিবিওবিএস) এবং গ্লোবাল স্টাডিজ অ্যান্ড গভর্ন্যান্স বিভাগ (জিএসজি) ও ইউনেস্কো।

সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চলা এ সেমিনারে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক, কূটনীতিক ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অবসরপ্রাপ্ত রিয়ার অ্যাডমিরাল খুরশেদ আলম, যিনি বর্তমানে সিবিওবিএসের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বঙ্গোপসাগরের কৌশলগত গুরুত্ব, বিপুল সমুদ্রসম্পদ, জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি এবং টেকসই নীল অর্থনীতির সম্ভাবনা ও নীতিগত চ্যালেঞ্জ নিয়ে বিশ্লেষণ উপস্থাপন করেন।

আরও পড়ুন: প্রতারক চক্রের হাতে ড্যাফোডিল শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত তথ্য, র‌্যাব-ডিবি সেজে টাকা দাবি পরিবারে

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রিয়ার অ্যাডমিরাল ড. খন্দকার আখতার হোসেন এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপুই (Marie Masdupuy)। তারা সমুদ্রনির্ভর গবেষণা, উচ্চশিক্ষা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

আইইউবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান দিদার এ হোসেন ও বিশিষ্ট কূটনীতিক এবং সিবিওবিএসের উপদেষ্টা তারিক এ. করিম বক্তব্যে বঙ্গোপসাগরকে আঞ্চলিক সংযোগ ও কৌশলগত নিরাপত্তার কেন্দ্র হিসেবে উপস্থাপন করেন।

সেমিনারে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ওয়াহিদুল আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. কে এম আজম চৌধুরী ও মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাপ্টেন শেখ শহিদ আহমেদ সমুদ্রসম্পদের অজানা দিক, জীববৈচিত্র্য, জলবায়ুর ওপর প্রভাব এবং মানবজীবনের সঙ্গে গভীর সম্পৃক্ততা তুলে ধরেন।

ইউনেস্কোর বাংলাদেশ কমিশনের উপমহাসচিব জুবাইদা মান্নান বলেন, ‘ওশান লিটারেসি’ বা সমুদ্রসচেতনতা বিদ্যালয় পর্যায় থেকেই শিক্ষা কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম পরিবেশ ও সমুদ্রসম্পদের গুরুত্ব বুঝতে পারে।

আরও পড়ুন: আবু সাঈদ হত্যা মামলায় বেরোবির সাবেক ভিসিসহ ২৬ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

পরবর্তী পর্বে আইইউবির শিক্ষার্থীরা ‘বাংলাদেশে কীভাবে ওশান লিটারেসি বাড়ানো যায়’ সে বিষয়ে মতামত ও সুপারিশ তুলে ধরেন। তাদের মতে, পাঠ্যক্রমে সমুদ্রবিষয়ক শিক্ষা অন্তর্ভুক্তি, সচেতনতামূলক কর্মসূচি এবং গবেষণার সুযোগ বাড়ানো প্রয়োজন।

সেমিনারের সমাপ্তি ঘোষণা করেন আইইউবির প্রোভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড্যানিয়েল ডব্লিউ. লুন্ড। তিনি বলেন, ‘এ ধরনের অ্যাকাডেমিক উদ্যোগ ভবিষ্যতের গবেষণা, শিক্ষা ও নীতিনির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। এ সেমিনার বঙ্গোপসাগরকেন্দ্রিক টেকসই উন্নয়ন কাঠামো গঠনে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা সমুদ্রসম্পদ ব্যবস্থাপনা ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।


সর্বশেষ সংবাদ