নির্বাচন বানচালের চেষ্টা হলে বিএনপি দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে প্রস্তুত: মির্জা ফখরুল
- যশোর প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৩৩ PM
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করা হলে তার পরিণাম ভালো হবে না। দেশবাসীকে সাথে নিয়ে সকল ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে বিএনপি প্রস্তুত আছে।
তিনি বলেন, আমরা অনেক সহ্য করেছি। বিএনপি রাজপথে ভেসে আসা কোনো রাজনৈতিক দল নয়। এ দেশের মানুষের আস্থা অর্জনের মাধ্যমে আমরা মা, মাটি ও মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করি। ফলে আমাদের ফেলনা মনে করলে ভুল করবেন।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বিকেলে যশোর টাউন হল ময়দানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মরহুম তরিকুল ইসলামের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকীর স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এসব কথা বলেন।
স্মরণ সভার মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক নার্গিস বেগম ও খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ যশোর জেলার সব থানা বিএনপির সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন স্তরের পেশাজীবী নেতৃবৃন্দ।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন অস্থিতিশীল করার চেষ্টার পরিণাম ভালো হবে না। একটি দল দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে ঘোলা করার চেষ্টা করছে। যার পরিণাম কখনো ভালো হবে না। আজ এই শোকাহত পরিবেশ, অমরা আপনাদের বলতে চাই, এই সরকার যদি ব্যর্থ হয় তাহলে তার পরিণাম হবে ভয়াবহ। এই সরকারকে বিএনপিসহ দেশের প্রগতিশীল ও স্বৈরাচার বিরোধী মুভমেন্ট করা সব রাজনৈতিক দলগুলো ব্যাপকভাবে সহায়তা প্রদান করে আসছি।
আরও পড়ুন: তারেকের অনশনের পূর্ণ সংহতি জ্ঞাপন বিএনপির: রিজভী
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে বলব, দ্রুত একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে তার যোগ্যতার পরিচয় দিতে হবে। ব্যর্থতার দায় নিয়ে আপনাদের বিদায় হোক, সেটা বিএনপি চায় না। কিন্তু যদি নির্বাচন নিয়ে কোনো টালবাহানা করেন তবে তার পরিণাম হবে ভয়াবহ। বিএনপি জানে কীভাবে নির্বাচন আদায় করতে হয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজীবন সংগ্রামী কিংবদন্তি নেতা মরহুম তরিকুল ইসলাম আজন্ম মা, মাটি মানুষের জন্য রাজনীতি করেছেন। আজীবন তিনি যশোরের উন্নয়নে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন। কখনো কোনো অন্যায় অনিয়মের সাথে আপোশ করেননি। শত অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করেও তিনি আদর্শের প্রতি ছিলেন অবিচল। ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারের পতনের জন্য তিনি দীর্ঘদিন আন্দোলন সংগ্রাম করেছিলেন, কিন্তু আজ সেই স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশে তিনি আর আমাদের মাঝে নেই। তিনি স্বৈরাচার মুক্ত বাংলাদেশ দেখে যেতে পারেননি। আজকের বাংলাদেশে তাঁর খুব বেশি প্রয়োজন ছিল। তিনি সারা জীবন আপনাদের জন্য, যশোর তথা দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের উন্নয়নে কাজ করেছেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও বলেন, নির্বাচনের আগে কোনো গণভোট নয়। এটা হলে দেশে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। তিনি সরকারকে অবিলম্বে গণতন্ত্রের দিকে ফিরে যাওয়ার পথ পরিষ্কার করার আহ্বান জানান। গণতন্ত্রকে আর হরণ করবেন না, জনগণের অধিকারকে নষ্ট করবেন না। বিএনপি স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিশ্বাসী। যারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায় এবং কিছুসংখ্যক রাজনৈতিক দল অসৎ উদ্দেশ্যে একটি গল যোগ সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করছে, জনগণ তাদেরকে ক্ষমা করবে না। প্রয়োজনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট হতে পারে বলেও তিনি তার বক্তৃতায় উল্লেখ করেন।
সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত এই স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন, জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু । জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকনের সঞ্চালনায় স্মরণসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্যে রাখেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, বিএনপির সাবেক তথ্য বিষয়ক সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, কৃষকদলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ুব, ঝিকরগাছা থানা বিএনপির সভাপতি সাবিরা নাজমুল মুন্নী, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ প্রমুখ।