‘উচ্চ মাধ্যমিকে পাস না করালে আত্মহত্যা করব’

যশোর রোডের উপর পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ
যশোর রোডের উপর পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ  © সংগৃহীত

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করানোর দাবিতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের যশোর রোড অবরোধ করে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন বনগাঁ কুমুদিনী স্কুলের কিছু শিক্ষার্থী। ওই পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলেও তাদের দাবি, সকলকে পাশ করিয়ে দিতেই হবে। এই দাবি না মানলে রাস্তাতেই অনশন আন্দোলনের হুমকিও দিয়েছেন তারা। পরীক্ষার আগে নানা সমস্যার মুখোমুখি হওয়ার জেরেই একসঙ্গে এত জন ইংরেজিতে অকৃতকার্য হয়েছেন বলে মনে করছেন বনগাঁ কুমুদিনী স্কুলের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

চলতি বছর উত্তর ২৪ পরগনার ওই স্কুলের ২৭৯ জন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে ৩৭ জন পরীক্ষার্থী ইংরেজি-সহ অন্যান্য বিষয়ে ফেল করেছেন। সোমবার (১৩ জুন) সকাল থেকে বনগাঁর ওই স্কুলের সামনে যশোর রোডের উপর পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন ওই শিক্ষার্থীরা।

তাদের অনেকের দাবি, শিক্ষাবর্ষের মাঝেই পাঠ্যক্রমের নানা পরিবর্তন করা হয়েছে। কখনও অনলাইন, কখনও বা অফলাইনে পরীক্ষা দিতে হবে বলা হয়েছিল তাদের। অঙ্কিতা পাল নামে এক ছাত্রীর কথায়, ‘‘সিলেবাস বার বার পাল্টাছে। অনলাইনে পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল, অফলাইনে তা দিতে হয়েছে। সকলেই এক বিষয়ে ফেল করতে পারে না। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের পাস করিয়ে না দেওয়া হয়, আমরা আন্দোলন করব। এ রাস্তা থেকে উঠব না।’’

একই দাবিতে বারাসত প্রিয়নাথ বালিকা বিদ্যালয়ের উচ্চ মাধ্যমিক অনুত্তীর্ণ পড়ুয়ারাও যশোর রোডে পথ অবরোধ শামিল হন। ওই স্কুলের ৭০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪০ জন অনুর্ত্তীর্ণ হয়েছেন। আন্দোলনকারীদের দাবি, তাদেরকে ইচ্ছাকৃতভাবে ফেল করানো হয়েছে। যদিও এ বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তারা সদুত্তর দিচ্ছেন না বলেও দাবি ছাত্রীদের।

বনগাঁর যশোর রোডের মতোই পথ অবরোধ হয় হুগলির চুঁচুড়ায়। চুঁচুড়ার ঘড়ির মোড়ে সোমবার সকাল থেকেই বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন উচ্চ মাধ্যমিকে অসফল ছাত্র-ছাত্রীরা। দেশবন্ধু গার্লস নারী শিক্ষামন্দির, জ্যোতিষচন্দ্র বিদ্যাপীঠ-সহ বেশ কয়েকটি স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা অবরোধে শামিল হন। অবরোধের জেরে রাস্তায় যানজট দেখা দেয়। পরে চুঁচুড়া থানার পুলিশ গিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের বুঝিয়ে অবরোধ তোলার চেষ্টা করে।

পরীক্ষার আগে নানা সমস্যার মুখোমুখি হওয়ার জেরেই একসঙ্গে এত জন ইংরেজিতে অকৃতকার্য হয়েছেন বলে মনে করছেন আন্দোলনকারীরা। একসঙ্গে এত জনের ফেল করা অসম্ভব বলেই দাবি তাদের।

প্রীতিকা দে নামে বনগাঁ কুমুদিনী স্কুলের এক ছাত্রী বলেন, ‘‘স্কুল থেকে আমাদের সকলকে অকৃতকার্য দেখিয়েছে। কিন্তু, আমরা এমন পরীক্ষা দিইনি যে পাস করব না। আমরা কী করে একটি বিষয়ে (ইংরেজিতে) ফেল করলাম? এত জন একসঙ্গে কী করে অকৃতকার্য হয়? এটা আমরা কিছুতেই মানতে পারছি না। আমরা আন্দোলন করছি। আমাদের পাস করিয়ে দিয়ে হবে। তা না হলে এখানেই অনশনে বসব, নয়তো আত্মহত্যা করব।’’ আর এক পডুয়া অঙ্কিতা দাসের দাবি, ‘‘মাধ্যমিকে আমি ফার্স্ট ডিভিশন পেয়েছিলাম। উচ্চ মাধ্যমিক রেজাল্টও ভাল হওয়ার কথা। এতটা খারাপ পরীক্ষাও দিইনি। আমাদের পাস করাতেই হবে।’’


সর্বশেষ সংবাদ