সুবিধাবাদী অনুপ্রবেশকারীরা আন্দোলন ছিনতাই করেছে, অভিযোগ নেপালের জেন-জির
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৬:৪০ PM
নেপালে চলমান বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেয়া জেন-জি গোষ্ঠীগুলো ধ্বংসাত্মক কাজ থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে নিয়েছে বলে দাবি করেছে। তাদের ভাষ্য, এখন আন্দোলন ‘সুবিধাবাদী অনুপ্রবেশকারীরা ছিনতাই করেছে’। এ আন্দোলনের একপর্যায়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি ও প্রেসিডেন্টও পদত্যাগ করেন। এরপরও ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ চলেছে। অনেক বিক্ষোভকারী আন্দোলন ‘অনুপ্রবেশকারীরা’ পরিচালনা করছে জানিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, বিক্ষোভকারীদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মঙ্গলবারের বিক্ষোভ নেপালের জেন-জিদের আয়োজিত। এটি স্পষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে পরিচালিত হয়েছিল। তা ছিল জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা এবং দুর্নীতির অবসান। তাদের আন্দোলন অহিংস ছিল এবং শান্তিপূর্ণ নাগরিক সম্পৃক্ততার নীতিতে প্রোথিত। তারা (বিক্ষোভকারী) পরিস্থিতি ‘দায়িত্বের সঙ্গে পরিচালনা’, নাগরিকদের সুরক্ষা ও সরকারি সম্পত্তি রক্ষায় সক্রিয়ভাবে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছেন।
বুধবার থেকে আর কোনো বিক্ষোভের পরিকল্পনা নেই জানিয়ে বলা হয়েছে, প্রয়োজনে সামরিক বাহিনী ও পুলিশ কারফিউ বাস্তবায়ন করতে পারে। নেপালের সেনাবাহিনীও অভিযোগ করেছে, বিভিন্ন ‘ব্যক্তি এবং নৈরাজ্যবাদী গোষ্ঠী’ অনুপ্রবেশ করে ব্যক্তিগত ও সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি করছে।
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুসহ সারা দেশে চলা অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা বন্ধে সেনাবাহিনী বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করেছে। দেশটির রাষ্ট্রপতি রাম চন্দ্র পৌডেল এবং নেপালি সেনাবাহিনী পৃথকভাবে আলোচনার আহবান জানানোর পর জেন-জি প্রতিনিধিরা সেনাপ্রধান অশোকরাজ সিগদেলের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন।
আরও পড়ুন: আমরণ অনশনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ শিক্ষার্থী
আলোচনায় শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা, অস্থায়ী সরকার গঠন ও আন্দোলনের দাবি নিয়ে আলোচনা হয়। এর আগে মঙ্গলবার জেন জিদের বিক্ষোভে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের অভিযোগে পদত্যাগ করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং পাশাপাশি দুর্নীতি মোকাবিলার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করছিলেন হাজারো তরুণ-তরুণী।
সোমবার গভীর রাতে ফেসবুক ও ইউটিউবসহ ২৬টি সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর দেয়া নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয় সরকার। তবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করার পরও কাঠমান্ডু ও বিভিন্ন সরকারি দপ্তর, সংসদ ভবন, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়সহ বহু স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর হয়েছে। এর আগে শত শত বিক্ষোভকারী দেশটির সংসদ ভবনে ঢুকে আগুন ধরিয়ে দেয়।
তারা দেয়ালে গ্রাফিতি এবং দুর্নীতিবিরোধী বার্তা স্প্রে-পেইন্ট করে। বিক্ষোভকারীরা সরকারি অফিসগুলোর প্রধান প্রশাসনিক কমপ্লেক্স সিংহ দরবারে ও শীর্ষ নেতাদের বাসভবনে হামলা চালায়। বুধবার সুপ্রিম কোর্ট ঘোষণা করে, গুরুতর ক্ষতির কারণে বিচারাধীন মামলার সমস্ত শুনানি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। যদিও আন্দোলনকারীরা দাবি করছে, ভাঙচুর ও সহিংসতায় তাদের সম্পৃক্ততা নেই। শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই দাবি আদায় করতে চান তারা।