পাকিস্তানে বাড়ছে গাধার দাম ও চাহিদা

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি  © সংগৃহীত

পাকিস্তানে হঠাৎ করেই বেড়ে চলেছে গাধার দাম এবং তার চাহিদা। পশুবাজারে সাধারণ ও কর্মক্ষম গাধার দাম এখন অতীতের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির নেপথ্যে রয়েছে চীনের ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং ঐতিহ্যবাহী ওষুধ শিল্পের চাহিদা।

চীনের জনপ্রিয় ওষুধ ‘ইজিআও’ (Ejiao) তৈরির মূল উপাদান হচ্ছে গাধার চামড়া। গাধার চামড়াকে প্রক্রিয়াজাত করে এই ওষুধ তৈরি করা হয়। যা ক্লান্তি দূরীকরণ, রক্ত উৎপাদন এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ব্যবহৃত হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনে এ ওষুধের বাজার ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত হয়েছে, আর সেই সাথে গাধার চামড়ার চাহিদাও আকাশচুম্বী হয়েছে।

এই পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছে পাকিস্তান। দেশটির পশু ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, কয়েক বছর আগেও যে গাধা ৩০ হাজার পাকিস্তানি রুপিতে বিক্রি হতো। বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ১.৫ থেকে ২ লাখ রুপিতে। করাচির ল্যায়ারি পশুবাজারে একটি সুস্থ গাধার দাম গড়ে ১ লাখ ৫৫ হাজার রুপি পর্যন্ত উঠেছে। এমনকি অসুস্থ বা দুর্বল গাধার জন্যও চীনা ক্রেতারা ৪০ হাজার রুপি পর্যন্ত দিতে প্রস্তুত।

পাকিস্তানের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গাধার সংখ্যার দিক থেকে দেশটি বিশ্বে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। ইথিওপিয়া ও সুদানের পরেই পাকিস্তানের অবস্থান। ২০২৪ সালে দেশটিতে গাধার সংখ্যা প্রায় ৬০ লাখ ছাড়িয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ১ লাখ বেশি।

তবে এই গাধা রপ্তানির কারণে সমস্যায় পড়ছেন স্থানীয় কৃষক ও পশুপালকরা। তারা দীর্ঘদিন ধরে গাধা ব্যবহার করে আসছেন পণ্য পরিবহণ, কৃষিকাজ এবং গ্রামীণ চাহিদা পূরণে। গাধার সংখ্যা কমে গেলে স্থানীয়দের কাজে বড় ধরনের বিঘ্ন ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

পাকিস্তানের খাদ্য নিরাপত্তা ও গবেষণা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, গাধার গুরুত্ব বিবেচনায় রেখে সরকার বিশেষ গাধা খামার গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছে। অন্যদিকে, খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের পশু ও দুগ্ধ উন্নয়ন দফতরের পরিচালক আসাল খান জানান, চীনের কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তাদের কাছে গাধা কেনার প্রস্তাব দিয়েছে, তবে এসব প্রস্তাবের সঙ্গে গাধার চামড়ার ব্যবহার জড়িত হওয়ায় বিষয়টি এখনো সরকারিভাবে অনুমোদিত নয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, একদিকে যেমন গাধা রপ্তানি পাকিস্তানের অর্থনীতিতে সাময়িক সুফল আনছে। অন্যদিকে এটি কৃষি ও গ্রামীণ পণ্য বিপণন ব্যবস্থায় দীর্ঘমেয়াদে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। ফলে এই সংকট মোকাবিলায় প্রয়োজন ভারসাম্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত এবং স্থায়ী নীতিমালা।


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!