ঐতিহাসিক রৌপ্য জয়ে জাবেদ-খই খইকে এক লাখ করে পুরস্কার

টেবিল টেনিসের সংবাদ সম্মেলন
টেবিল টেনিসের সংবাদ সম্মেলন   © সংগৃহীত

সৌদি আরবের রিয়াদে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে টেবিল টেনিসে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ। মিশ্র দ্বৈত ইভেন্টে মো. জাবেদ আহমেদ ও খই খই সাই মারমার দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে প্রথমবারের মতো রৌপ্য পদক জেতেন। এটিই বাংলাদেশের টেবিল টেনিসে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক অর্জন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

গায়ানাকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে বাংলাদেশ। এরপর কোয়ার্টারে মালদ্বীপকে হারিয়ে সেমিফাইনালে জায়গা পায় জাবেদ–খই খই জুটি। নিয়ম অনুযায়ী, সেমিফাইনালে উঠলেই ব্রোঞ্জ নিশ্চিত হয়, কিন্তু সেখানেই থেমে যাননি তারা। সেমিফাইনালে বাহরাইনকে ৩-১ সেটে হারিয়ে ফাইনালে উঠেন। যদিও শিরোপা লড়াইয়ে শক্তিশালী তুরস্কের কাছে পরাজিত হয় বাংলাদেশ, তবু রৌপ্য পদক জিতে নতুন ইতিহাস  রচনা করেন তারা। পরে ১৪ নভেম্বর বিকেল সাড়ে তিনটায় দেশে ফেরেন এই পদকজয়ীরা।

এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের ডাচ বাংলা ব্যাংক অডিটোরিয়ামে টেবিল টেনিস ফেডারেশনের আয়োজনে এক সংবাদ সম্মেলনে তাদের সম্মাননা দেওয়া হয়। সেখানে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আহমেদ সনেট জানান, জাবেদ ও খই খইকে এক লাখ টাকা করে পুরস্কার দেওয়া হবে। ফেডারেশনের আর্থিক সংকট থাকলেও দেশের টেবিল টেনিস ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সাফল্যকে সম্মান জানাতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। পাশাপাশি আশা করেন, ‘এনএসসি, অলিম্পিক ও মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পুরস্কার বা সংবর্ধনা পাওয়ার সময় এখনো শেষ হয়ে যায়নি। আমরা আশাবাদী তারা টেবিল টেনিসের এই কৃতি সাফল্য অর্জনকারীদের অবশ্যই সম্মানিত করবেন।’

এ সময়ে জাতীয় দলের কোচ মোস্তফা বিল্লাহ বলেন, এটি টেবিল টেনিসের ৫৩ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অর্জন। তার ভাষায়, খেলোয়াড়দের পেশাদারিত্ব, নিষ্ঠা এবং সর্বোচ্চ চেষ্টা থেকেই এসেছে সাফল্য। তিনি মনে করেন, ইসলামিক সলিডারিটি গেমস অলিম্পিক বা এশিয়ান গেমসের মতো মর্যাদাপূর্ণ না হলেও এই রৌপ্য জয় বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের জন্য বড় অর্জন।

পদকজয়ী জাবেদ আহমেদ বলেন, ‘আমাদের এই অর্জন একদিনে আসেনি। বিগত দিনের পরিশ্রম ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমেই এই ফলাফল। দেশের হয়ে আমরা সব সময় ইতিবাচক ফলাফলের চেষ্টা করি, কখনো ক্লিক করে আবার করে না। এবার আমাদের পারফরম্যান্স, চেষ্টা,ভাগ্য সহ সব কিছুই কাজ করেছে এজন্য পদক।’

উদীয়মান তারকা খই খই মারমা বলেন, ‘গত ইসলামিক গেমসে বাংলাদেশ কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত খেলেছিল। এবার আমাদের লক্ষ্য ছিল অন্তত কোয়ার্টার পর্যন্ত যাওয়া এরপর সম্ভব হলে এগিয়ে যাওয়া। কোয়ার্টার প্রতিপক্ষ পাওয়ার পর জাভেদ ভাই বলল চান্স আছে। চেষ্টা করলাম হয়ে গেল। আমি চাই একদিন আমরা অলিম্পিকে কোয়ালিফাই করে খেলব। হোক সেটা সিঙ্গেল, ডাবল কিংবা টিম ইভেন্টে।’

ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সনেট জানান, ‘আমরা অবশ্যই চাই খেলেয়াড়দের আর্থিক স্বচ্ছলতা। ফেডারেশনের সেই সামর্থ্য নেই, এজন্য জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ, অলিম্পিক ও সরকার এবং অন্য স্পন্সরদের সহায়তা প্রয়োজন। জাভেদ ও খৈ খৈ’য়ের এই সাফল্যের পর আশা করি তারা টেবিল টেনিসের প্রতি আরও আগ্রহী হবেন। আমরা ইরানী ও ভারতীয় কোচের সঙ্গে আলোচনা করছি। আর্থিক কারণে খানিকটা চিন্তায় রয়েছি এরপরও একজন কোচ আনবই। ভেন্যুর সমস্যা রয়েছে, ডিসেম্বরে ১৫ থেকে বাকি সময় ব্যাডমিন্টন ব্যবহার করবে। ফলে তখন কোনো খেলা করা যাবে না।’


সর্বশেষ সংবাদ