বাস্তব অভিজ্ঞতা নাকি প্রযুক্তিগত দক্ষতা?
- ইমরান আহমেদ মশিউ
- প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২৫, ০৮:১৪ PM , আপডেট: ২৬ আগস্ট ২০২৫, ০৮:০৬ PM
বর্তমান বিশ্বে প্রতিযোগিতা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে, আবার হারিয়েও যাচ্ছে। এই পরিবর্তনের যুগে টিকে থাকতে হলে যে বিষয়টি সবচেয়ে জরুরি, তা হলো দক্ষতা উন্নয়ন। একইসঙ্গে প্রযুক্তি শেখা এবং ব্যবহার করার ক্ষমতাও হয়ে উঠেছে অপরিহার্য। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়—কোনটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ? বাস্তব বা প্র্যাকটিক্যাল অভিজ্ঞতা, নাকি প্রযুক্তিগত দক্ষতা?
কেন দক্ষতা উন্নয়ন জরুরি
একজন মানুষের জীবনে দক্ষতা মানে শুধু কর্মজীবনের সাফল্য নয়, ব্যক্তিগত উন্নয়নও। দক্ষ মানুষ সবসময় অন্যদের চেয়ে আলাদা অবস্থানে থাকেন। উদাহরণস্বরূপ, একজন যিনি ভালোভাবে যোগাযোগ করতে পারেন, নেতৃত্ব দিতে পারেন বা সমস্যার সমাধান করতে পারেন, তিনি সহজেই সাফল্যের পথে এগিয়ে যান। দক্ষতা উন্নয়ন আমাদেরকে নতুন সুযোগ গ্রহণ করতে সাহায্য করে এবং দ্রুত পরিবর্তিত সময়ের সাথে খাপ খাওয়াতে শেখায়।
কেন প্রযুক্তি শেখা জরুরি
আমরা বর্তমানে বসবাস করছি চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে। এখানে প্রযুক্তি ছাড়া কিছুই কল্পনা করা যায় না। ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি—সব ক্ষেত্রেই প্রযুক্তির প্রভাব বিস্তার করেছে। প্রযুক্তি শেখা মানে কেবল মোবাইল বা কম্পিউটার ব্যবহার জানা নয়; বরং এর গভীরে গিয়ে শেখা প্রয়োজন প্রোগ্রামিং, ডেটা অ্যানালাইসিস, ডিজিটাল মার্কেটিং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কিংবা ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের মতো বিষয়গুলো।
প্রযুক্তি জানলে স্থানীয় বাজার ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজের সুযোগ তৈরি হয়। একজন উদ্যোক্তা প্রযুক্তির সহায়তায় অনলাইন ব্যবসা শুরু করতে পারেন, একজন শিক্ষক সারা বিশ্বে অনলাইন ক্লাস নিতে পারেন, আবার একজন চিকিৎসক টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে দূরের রোগীকে সেবা দিতে পারেন। অর্থাৎ প্রযুক্তি শেখা মানে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হওয়া।
বাস্তব অভিজ্ঞতা নাকি প্রযুক্তিগত দক্ষতা?
অনেকেই মনে করেন শুধু বাস্তব অভিজ্ঞতাই যথেষ্ট। সত্যি বলতে, দীর্ঘদিন কাজ করলে সেই কাজের উপর দক্ষতা তৈরি হয়, যেটি নিঃসন্দেহে মূল্যবান। উদাহরণস্বরূপ, একজন কৃষক যিনি বছরের পর বছর জমিতে কাজ করছেন, তিনি আবহাওয়া, মাটি কিংবা বীজ সম্পর্কে ভালো জানেন। তবে যদি সেই কৃষক প্রযুক্তি ব্যবহার করে আধুনিক কৃষি পদ্ধতি না শেখেন, তবে তিনি প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বেন।
অন্যদিকে, প্রযুক্তিগত দক্ষতাসম্পন্ন একজন ব্যক্তি স্বল্প অভিজ্ঞতা নিয়েও সফল হতে পারেন। উদাহরণ হিসেবে ধরা যাক একজন ডিজিটাল মার্কেটারকে, যিনি প্রযুক্তির সহায়তায় কয়েক বছরের মধ্যেই একটি বড় ব্যবসা দাঁড় করিয়ে ফেলতে পারেন।
তবে এর মানে এই নয় যে বাস্তব অভিজ্ঞতা অপ্রয়োজনীয়। বরং বাস্তব অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা—দুটিই সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। অভিজ্ঞতা শেখায় কিভাবে বাস্তব সমস্যার মোকাবিলা করতে হয়, আর প্রযুক্তি শেখায় কিভাবে আধুনিক সমাধান তৈরি করতে হয়।
লেখক: ইমরান আহমেদ মশিউ