এবার খুললো মেডিকেল কলেজ, শ্রেণিকক্ষে ফিরে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা

শ্রেণিকক্ষে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা
শ্রেণিকক্ষে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা  © সংগৃহীত

দেশের মেডিকেল-ডেন্টালসহ সব চিকিৎসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সশরীরে খুলছে আজ সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর)। দীর্ঘদিন পর প্রিয় কলেজের প্রাঙ্গণে ফিরে শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা দেখা গেছে। যদিও শুরুতে সব বর্ষের ক্লাস সশরীরে হবে না। পাশাপাশি অনলাইনেও ক্লাস চলমান থাকবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

প্রাথমিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজের প্রথম, দ্বিতীয় ও পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থীদের সশরীরে পাঠদান শুরু হয়েছে। তাছাড়া ডেন্টালের ১ম, ২য় এবং শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীদের সশরীরে পাঠদান শুরু হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় পরবর্তী সময়ে অন্যান্য বর্ষের ক্লাস চালু করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।

খুলনা মেডিকেল কলেজে (খুমেক) ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে উচ্ছ্বাসের আমেজ দেখা গেছে। কলেজটির অধ্যক্ষ মো. আবদুল আহাদ বলেন, মেডিকেল কলেজে প্রথম দিনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রায় শতভাগ উপস্থিতি দেখা গেছে। সেখানে উৎসবমুখর পরিবেশ দেখা গেছে। এরই মধ্যে আবাসিক হলে উঠেছেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে সামান্য কিছু সংস্কারের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন অধ্যক্ষ।

এছাড়া ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের (মমেক) বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস কোর্সে এক হাজার ১০০-এর ওপরে ও বিডিএস কোর্সে ২০০-এর ওপরে শিক্ষার্থী রয়েছেন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে এর আগে সেশন জটের আশঙ্কা দেখা গেলেও পাঠদান কার্যক্রম আবারও আগের মতো শুরু হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন তাঁরা। তাঁরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে মেডিকেল কলেজে এসেছেন। এছাড়া যা আশা করা হয়েছিল, তার চেয়েও বেশি শিক্ষার্থী উপস্থিত হয়েছেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর চট্টগ্রামেও সব সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও নার্সিং ইনস্টিটিউট খুলেছে। সরকারি নির্দেশনা মেনে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করার কথা জানিয়েছেন মেডিকেল অনুষদের ডিন ও চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. সাহেনা আক্তার।

তিনি বলেন, কলেজ খোলার ব্যাপারে আমাদের সব প্রস্তুতি রয়েছে। সরকারি মেডিকেল কলেজের পাশাপাশি বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোকেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যদিও মেডিকেল কলেজগুলোতে জুমের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।  

ডা. সাহেনা বলেন, শতভাগ শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় আনতে কাজ চলছে। এখন পর্যন্ত বেশিরভাগ শিক্ষার্থী টিকার প্রথম ডোজ সম্পন্ন করেছে। আর কিছুদিনের মধ্যেই সকল শিক্ষার্থী টিকার আওতায় এসে যাবে। 

সশরীরে ক্লাস শুরুর ক্ষেত্রে যেসব নির্দেশনা মানতে হবে-

ক) স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের শিক্ষার্থী হোস্টেল (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) ক্লাস শুরুর ৩ দিন পূর্বে খুলে দিতে হবে;

খ) সশরীরে ক্লাস পরিচালনার ক্ষেত্রে যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে;

গ) শিক্ষার্থীদেরকে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে প্রশিক্ষণ প্রদান এবং স্বাস্থ্যবিধির উপকরণসমূহ সহজলভ্যের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে;

ঘ) ক্লাস শুরু করার ক্ষেত্রে শুরুতে ক্লাসের সংখ্যা ও সময় কম রাখা যেতে পারে;

ঙ) সশরীরে উপস্থিতির পাশাপাশি অনলাইনে ক্লাস চলমান থাকবে;

চ) মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর মেডিকেল কলেজ ও অন্যান্য চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়ার পূর্বে একটি গাইডলাইন পুস্তিকা আকারে প্রস্তুত করে সংশ্লিষ্ট সকলের নিকট প্রেরণ করবেন; 

ছ) অধ্যক্ষগণ সশরীরে ক্লাস পরিচালনা কার্যক্রম নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরে প্রতিবেদন প্রেরণ করবেন। এক মাসের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অন্যান্য সেশনের ক্লাস শুরুর বিষয়ে যথাসময়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে।


সর্বশেষ সংবাদ