ইবতেদায়ি ৫ম শ্রেণি বৃত্তি পরীক্ষার নীতিমালা প্রকাশ, দেখুন এখানে

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি  © সংগৃহীত

মাদ্রাসার ইবতেদায়ি ৫ম শ্রেণি বৃত্তি পরীক্ষার নীতিমালা প্রকাশ করা হয়েছে। আজ শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের ওয়েবসাইটে এ নীতিমালা প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকাশিত নীতিমালাটি ‘ইবতেদায়ি ৫ম শ্রেণি বৃত্তি পরীক্ষা নীতিমালা-২০২৫’ নামে অভিহিত করা হয়েছে।  এ নীতিমালার আলোকে ইবতেদায়ি ৫ম শ্রেণি বৃত্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালিত হবে বলে জানা গেছে। 

বৃত্তি পরীক্ষার পরিধি ও আওতা

বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড অনুমোদিত মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে সর্বোচ্চ শতকরা ৪০ জন (চতুর্থ শ্রেণির সকল প্রান্তিকের সামষ্টিক মূল্যায়নের ফলাফলের ভিত্তিতে) ইবতেদায়ি ৫ম শ্রেণি বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটি সময়ে সময়ে এ সংখ্যা পুনঃনির্ধারণ করতে পারবে।

একজন শিক্ষার্থী কোনো মাদ্রাসা থেকে বৃত্তি পরীক্ষার জন্য রেজিস্ট্রেশনভুক্ত হওয়ার পর সে অন্য কোনো মাদ্রাসা থেকে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না।

কোনো সরকারি/আধাসরকারি/স্বায়ত্তশাসিত দপ্তরের কর্মকর্তা/কর্মচারী সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসার ক্যাচমেন্ট এলাকায় বদলি হলে এবং প্রচলিত নিয়মানুযায়ী উক্ত পরীক্ষার্থী ৫ম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে থাকলে তাকে ইবতেদায়ি ৫ম শ্রেণি বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে অনুমতি দেয়া যাবে। এ ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশনের পূর্বে শিক্ষার্থীকে তার পূর্বতন মাদ্রাসা থেকে প্রাপ্ত ছাড়পত্র ও অভিভাবকের বদলি সংক্রান্ত আদেশের কপিসহ সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসা প্রধান বরাবর আবেদন করতে হবে।

বহিরাগত ছাত্র-ছাত্রীর পরীক্ষায় অংশগ্রহণের বিষয়ে কোনো প্রকার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসা প্রধানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উল্লেখ্য, অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীর ফলাফল বাতিল করা হবে।

নীতিমালা দেখুন এখানে 

নিম্নের বিষয় ও কোডে বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে

কুরআন মাজিদ (কোড-৩০১) পূর্ণমান ১০০; আরবি (১ম ও ২য় পত্র)-৩০৩ কোড, পূর্ণমান-(৫০+৫০)=১০০; বাংলা ও ইংরেজি (৩০৬, ৩০৭ কোড), পূর্ণমান-(৫০+৫০)=১০০; গণিত ও বিজ্ঞান (৩০৮, ৩১৭ কোড), পূর্ণমান-(৬০+৪০)=১০০। মোট= ৪০০ নম্বর।

প্রতিটি বিষয়ে পূর্ণমান হবে ১০০ এবং পরীক্ষার সময় ২.৩০ ঘণ্টা। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পরীক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় বরাদ্দ থাকবে।

বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ে পূর্ণমান হবে (৫০+৫০)=১০০, পরীক্ষার সময় হবে (১ ঘন্টা ১৫ মিনিট + ১ ঘন্টা ১৫ মিনিট)=২ ঘন্টা ৩০ মিনিট। বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ে একই দিনে ভিন্ন ভিন্ন কোডে পরীক্ষা হবে এবং উত্তরপত্রও আলাদা হবে। গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ে পূর্ণমান হবে (৬০+৪০)=১০০, পরীক্ষার সময় হবে (১ ঘন্টা ৩০ মিনিট+১ ঘন্টা)= ২ ঘন্টা ৩০ মিনিট। গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ে একই দিনে ভিন্ন ভিন্ন কোডে পরীক্ষা হবে এবং উত্তরপত্রও আলাদা হবে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কর্তৃক প্রণীত মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক থেকে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড অনুমোদিত প্রশ্নকাঠামো অনুসারে ইবতেদায়ি ৫ম শ্রেণি বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। বৃত্তি পাওয়ার জন্য প্রতি বিষয়ে ন্যূনতম শতকরা ৪০ নম্বর পেতে হবে। সর্বোচ্চ নম্বরের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের মেধা/কোটাভিত্তিক বৃত্তি প্রদান করা হবে।

ইবতেদায়ি ৫ম শ্রেণি বৃত্তি পরীক্ষায় দুই ধরনের বৃত্তি প্রদান করা হবে। তা হলো-ট্যালেন্টপুল ও সাধারণ বৃত্তি।

সব ধরনের বৃত্তির ৫০ শতাংশ ছাত্রদের এবং ৫০ শতাংশ ছাত্রীদের জন্য নির্ধারিত থাকবে। তবে নির্ধারিত কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে ছাত্রের বৃত্তি ছাত্রী দ্বারা এবং ছাত্রীর বৃত্তি ছাত্র দ্বারা পূরণ করা হবে।

ইবতেদায়ি ৫ম শ্রেণি বৃত্তি প্রদানের নিয়মাবলি হলো-

ট্যালেন্টপুল বৃত্তি 

ট্যালেন্টপুল বৃত্তি দেয়া হবে উপজেলা ওয়ারি (উপজেলা পর্যায়ে) এবং ওয়ার্ড ওয়ারি (সিটি কর্পোরেশন পর্যায়ে)। প্রতিটি উপজেলায়/ওয়ার্ডে পূর্বনির্ধারিত সংখ্যক ট্যালেন্টপুল বৃত্তি উপজেলায়/ওয়ার্ডে সর্বোচ্চ নম্বরধারী ছাত্র ও ছাত্রীদের মেধার ক্রমানুসারে সমান হারে বণ্টন করা হবে।

বিজোড় সংখ্যা ট্যালেন্টপুল বৃত্তি প্রদানের ক্ষেত্রে সর্বশেষটি ছাত্র বা ছাত্রী বিবেচনা না করে অধিক নম্বর বিবেচনায় নির্বাচন করা হবে।

ট্যালেন্টপুল সম্পূরক বৃত্তি 

কোনো উপজেলায়/ওয়ার্ডে ট্যালেন্টপুল কোটায় শিক্ষার্থী পাওয়া না গেলে তা জেলা কোটা অর্থাৎ একই জেলার মেধার ক্রমানুসারে পরবর্তী যোগ্য শিক্ষার্থী দ্বারা পূরণ করা হবে এবং তা সম্পূরক তালিকায় প্রকাশিত হবে। ট্যালেন্টপুল সম্পূরক বৃত্তির জন্য সমান নম্বরের ক্ষেত্রে ৫.৫ অনুচ্ছেদে বর্ণিত নিয়ম অনুসরণ করা হবে।

সাধারণ বৃত্তি

সাধারণ বৃত্তি দেয়া হবে উপজেলা ওয়ারি (উপজেলা পর্যায়ে) এবং ওয়ার্ড ওয়ারি (সিটি কর্পোরেশন পর্যায়ে)। প্রতিটি উপজেলা/ওয়ার্ডে নির্ধারিত সংখ্যক শিক্ষার্থীকে সাধারণ বৃত্তি প্রদান করা হবে। কোনো উপজেলা/ওয়ার্ডে যোগ্য ছাত্র পাওয়া না গেলে ঐ ছাত্রের বৃত্তি ছাত্রী দ্বারা এবং যোগ্য ছাত্রী পাওয়া না গেলে ঐ বৃত্তি যোগ্য ছাত্র দ্বারা পূরণ করা হবে।

এভাবে যদি কোনো উপজেলা/ওয়ার্ডের বৃত্তি উপজেলা/ওয়ার্ডের ছাত্র বা ছাত্রী দ্বারা পূরণ করা হয় তা হলে সেটিকে সাধারণ বৃত্তি হিসেবেই বিবেচনা করা হবে এবং ঐ সংখ্যা মূল তালিকায় প্রকাশিত হবে (সম্পূরক তালিকায় প্রকাশিত হবে না)। সম্পূরক বৃত্তির ক্ষেত্রে ৫.৫ অনুচ্ছেদে বর্ণিত নিয়ম/নির্দেশনা অনুসরণ করা হবে।

সম্পূরক সাধারণ বৃত্তি 

কোনো উপজেলা/ওয়ার্ডে সাধারণ কোটায় শিক্ষার্থী পাওয়া না গেলে তা জেলা কোটা অর্থাৎ একই জেলার মেধার ক্রমানুসারে পরবর্তী যোগ্য শিক্ষার্থী দ্বারা পূরণ করা হবে এবং তা সম্পূরক তালিকায় প্রকাশিত হবে। সাধারণ সম্পূরক বৃত্তির জন্য সমান নম্বরের ক্ষেত্রে ৫.৫ অনুচ্ছেদে বর্ণিত নিয়ম অনুসরণ করা হবে।

সমান নম্বরধারীর ক্ষেত্রে

একাধিক শিক্ষার্থী প্রাপ্ত সর্বমোট নম্বর একই হলে অগ্রাধিকারভিত্তিতে যথাক্রমে প্রথমে কুরআন মাজিদ, আরবি (১ম ও ২য় পত্র), বাংলা ও ইংরেজি এবং গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ে বেশি নম্বরপ্রাপ্ত প্রার্থীকে অগ্রাধিকার দেওয়াহবে। যদি দুই বা ততোধিক প্রার্থীর সকল বিষয়ে প্রাপ্ত নম্বর একই হয় সেক্ষেত্রে একই নম্বরধারী সকলকে বৃত্তি দেওয়া হবে।

বৃত্তি পরীক্ষা গ্রহণ 

জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটি এবং নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্তমূলে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড বৃত্তি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন, ফরম পূরণ, প্রশ্ন প্রণয়ন, খাতা মূল্যায়ন, ফলাফল প্রস্তুতকরণ এবং ফলাফল প্রকাশসহ যাবতীয় আনুষাঙ্গিক কার্যাদি সম্পন্ন করবে।

বৃত্তি পরীক্ষার ফি 

পরীক্ষার্থী প্রতিবোর্ড ফি-৪০০/- (চারশত) টাকা এবং পরীক্ষার্থী প্রতি কেন্দ্র ফি- ২০০/- (দুইশত) টাকা। কেন্দ্র ফি থেকে সকল প্রশাসনিক/ব্যবস্থাপনা ব্যয় ও প্রত্যবেক্ষদের সম্মানী নির্বাহ করতে হবে। তবে, জাতীয়স্টিয়ারিং কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী ফি কমানো বা বাড়ানো যাবে।

বৃত্তি পরীক্ষার ব্যাংক হিসাব 

বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড অনলাইনে পরীক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন এবং ফরম পূরণের ব্যবস্থা করবে এবং ফি আদায় করবে। এ জন্য বোর্ড ইবতেদায়ি ৫ম শ্রেণি বৃত্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত আলাদা ব্যাংক হিসাব খুলবে। বোর্ড ফি-এর যাবতীয় টাকা এই হিসাবে জমা হবে এবং বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড সেই হিসাব থেকে বৃত্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় ব্যয় নির্বাহ করবে।

অডিট

ইবতেদায়ি ৫ম শ্রেণি বৃত্তি পরীক্ষা পরিচালনার জন্য অর্থ ব্যয়ের যাবতীয় হিসাব ও বিল ভাউচার সংশ্লিষ্ট দপ্তর/কেন্দ্র সংরক্ষণ করবে এবং নির্ধারিত সময়ে ব্যয় বিবরণী (SoE) বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে প্রেরণ করবে। অডিটে কোনো ত্রুটি বা অনিয়ম চিহ্নিত হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ দায়ী থাকবেন।

সাধারণ বৃত্তি ও মেধা বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ও টাকার পরিমাণ

ইবতেদায়ি ৫ম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষা-২০২৫-এ ১৩ (তেরো) টি সিটি কর্পোরেশন (প্রস্তাবিত বগুড়াসহ) ও মোট ৪৯৫ (চারশত পঁচানব্বই) টি উপজেলায় সাধারণ বৃত্তি ও মেধা বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ও টাকার পরিমাণ নিম্নরূপভাবে নির্ধারিত হবে। উল্লেখ্য যে, জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী জাতীয়ভাবে মোট সাধারণ ও ট্যালেন্টপুল বৃত্তির সংখ্যা ও টাকার পরিমাণ কমানো বা বাড়ানো যাবে।

ইবতেদায়ি ৫ম শ্রেণি: সাধারণ বৃত্তি-৪৫০ টাকা (মাসিক)। উপজেলাভিত্তিক বৃত্তিপ্রাপ্ত ছাত্র/ছাত্রীর সংখ্যা হবে ৭ (ছেলে)+৭ (মেয়ে)=১৪ জন; আর ট্যালেন্টপুল বৃত্তি প্রাপ্তরা পাবে ৬০০ টাকা করে (মাসিক)। ৩ (ছেলে)+৩ (মেয়ে)=০৬ জন।

সিটি কর্পোরেশন/শহর পর্যায়ে বৃত্তিপ্রাপ্ত ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ও টাকার পরিমাণ হবে-

ইবতেদায়ি ৫ম শ্রেণি সাধারণ বৃত্তি -৪৫০ টাকা (মাসিক)। ১৩টি সিটি কর্পোরেশন-এর (প্রস্তাবিত বগুড়াসহ) মোট ওয়ার্ড সংখ্যা ৫০১টি। ১ (ছেলে)+১ (মেয়ে)=২ জন। আর ট্যালেন্টপুল বৃত্তি প্রাপ্তরা পাবে ৬০০ টাকা করে (মাসিক)। ১ (ছেলে)+১ (মেয়ে)=২ জন।

বি. দ্র. বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী ফলাফল ঘোষণার পর থেকে তিন বছর পর্যন্ত বৃত্তির অর্থ পাবে।


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!