টাকার অভাবে ভালো কলেজে ভর্তি হতে না পারা আকাশের ৬ বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স

ইয়াদুল ইসলাম আকাশ
ইয়াদুল ইসলাম আকাশ  © টিডিসি

ইয়াদুল ইসলাম আকাশ। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় তিনি  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়‌সহ (ঢাবি) ৬ টি বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছেন। তিনি মানবিক থেকে ঢাবি ‘খ’ ইউনিটে ১৩৬৭তম হয়েছেন। এছাড়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ‘ঘ’ ইউনিটে ৫৯তম,  জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ‘খ’ ইউনিটে ১০৪তম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ‘ক’ ইউনিটে ৮১২তম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ‘খ’ ইউনিটে ১৬১৪তম এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনালস-এ (বিইউপি) ২১১তম স্থান অর্জন করেছেন। ভর্তি পরীক্ষায় নিজের সাফল্য, সংগ্রাম নতুন ভর্তি পরীক্ষার্থীদের জন্য কিছু টিপস নিয়ে মুখোমুখি হয়েছেন দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের। তার কথাগুলো শুনেছেন সহ-সম্পাদক তাহমিনা আক্তার।  

ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়ে আপনার অনুভূতি কী?  
আমার বাবা-মা দু’জনের কেউই প্রাথমিক পাস করেনি। আমি পঞ্চম শ্রেণি থেকে আলিম পর্যন্ত চারটি বোর্ড পরীক্ষাতেই  জিপিএ-৫ সহ (গোল্ডেন এ+) ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছি। কিন্তু টাকার অভাবে ভালো কোনো কলেজে ভর্তি হতে পারিনি। তারপরও ঢাবিসহ ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছি। আমি আমার গ্রাম, বংশ এবং মাদ্রাসা থেকে ঢাবিতে চান্স পাওয়া প্রথম ব্যক্তি। এটা আল্লাহর এক  অশেষ মেহেরবান। চান্স পাওয়ার পর যখন আব্বু আম্মু মুখের দিকে তাকিয়েছি, তখন বুঝতে পেরেছি সফলতার আসল শান্তি।  

কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং কোন বিষয়ে ভর্তি হতে চান? 
আমার ইচ্ছে ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে ভর্তি হওয়ার। কিন্তু আমি ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যয়নের সুযোগ পেয়েছি। সেখানেই ভর্তি হব। 

ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি কীভাবে নিয়েছেন?  
ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি আমি নবম শ্রেণি থেকেই নিয়েছিলাম। তখন করোনার কারণে মাদ্রাসা বন্ধ থাকায় সাধারণ জ্ঞানের বই কিনে পড়া শুরু করি। এরপর আলিম প্রথম বর্ষ থেকে বাংলা ও ইংরেজি মূল বই ভালোভাবে পড়া শুরু করি। অ্যাডমিশনের সময়টাতে আমি দৈনিক ১৪ ঘণ্টার বেশি পড়াশোনা করেছি।

ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতিতে আপনার অনুপ্রেরণা কী ছিল? 
আমার অনুপ্রেরণা ছিল আমার বাবা-মা। তাদের দুজনের কেউই প্রাথমিক শিক্ষায় শিক্ষিত নন। তবুও আমায় ঘিরে রয়েছে তাদের হাজারো স্বপ্ন। আমার বাবা অন্যের জমিতে চাষ করে, মাটি কেটে আমার পড়ালেখার খরচ জুগিয়েছেন। আমার মা দর্জির কাজ করে আমার খাতা-কলম কেনার টাকা জোগাতেন।  ঈদে আমার মা নতুন কাপড় বানিয়ে অন্যের ঈদ আনন্দ বাড়িয়ে তুলতেন। কিন্তু ঈদে পড়ার মতো নতুন কেনার সামর্থ্য ছিল না তার। এ বিষয়টি আমায় খুবই অনুপ্রাণিত করতো। আমি মনে বল পেতাম যে আমাকে ভালো কিছু করতেই  হবে, পরিবারের হাল ধরতে হবে।

পরীক্ষার হলে কোন কৌশল অবলম্বন করে পরীক্ষা দিয়েছেন?
 আমি সর্বদা চেষ্টা করতাম যাতে ভুল না দাগাই। নেগেটিভ মার্ক যেন না আসে, সে বিষয়ে আমি সচেতন ছিলাম। আর যদি প্রায় ৮০% উত্তর সঠিকভাবে জানতাম তাহলে সবগুলো উত্তর করে আসতাম।   

ভবিষ্যতে যারা ভর্তি পরীক্ষা দিবে তাদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
একাদশ শ্রেণি থেকেই অ্যাডমিশনের পড়ালেখা শুরু করতে হবে। এইচএসসি প্রথম বর্ষ থেকেই বাংলা ও ইংরেজি মূল বই একদম ভেঙে ভেঙে সিলেবাসের পুরোটা পড়তে হবে। পাশাপাশি অ্যাডমিশন রিলেটেড পাঠ্য বইগুলো পড়া। সাধারণ জ্ঞানের পড়াশোনা একটু বেশি তাই একাদশ শ্রেণি থেকে যে কোনো লেখকের সাধারণ জ্ঞানের বই কম করে হলেও এক ঘণ্টা পড়া।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence