‘ছাত্র আন্দোলন সফল হয়নি, এমন নজির নেই’
কোটা সংস্কার আন্দোলন আজ দেশের সব মানুষের প্রাণের দাবি হয়ে হয়ে উঠেছে। আন্দোলনের প্রথম দিন থেকে এর প্রতি সমর্থন ছিল বিএম কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের। তারই ধারাবাহিকতায় লাগাতার কর্মসূচি পালন করে আসছে তারা। অন্দোলন নিয়ে বিএম কলেজের শিক্ষার্থীদের ভাবনা তুলে ধরেছেন জুনায়েদ সিদ্দিকী।
আন্দোলনের সফলতা নিয়ে ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে হবে
আন্দোলনে সফল হতে পারবো কি পারবো না সেটা আমাদের ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে হবে। স্বাধীন বাংলাদেশের বীজ বপন হয়েছিল ৫২ এর ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। যেখানে আমাদের মত শিক্ষার্থীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা আমাদের কথা বলার ভাষা ফিরে পেয়েছিলাম। বিশ্বাস করি আমাদের অধিকার আদায়ের এই লড়াইয়ে আমরা সফল হয়েই ঘরে ফিরবো।
মো. শাহাদাত, শিক্ষার্থী, বাংলা বিভাগ।
দাবি আদায়ের জন্য রাজপথই উত্তম
সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম মাত্রায় ৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে। এই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচিতে বিএম কলেজ শিক্ষার্থীরা রাজপথে অবস্থান করবে। কারণ দাবি আদায়ের জন্য রাজপথই উত্তম। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে পরবর্তীতে বৈষম্যের বিরুদ্ধে সবসময়ই শিক্ষার্থীরা রাজপথে দাবি আদায় করেছেন। আশাকরি আমাদের আন্দোলন সফল হবেই।
মুহাইমিনুল ইসলাম ফরহাদ, শিক্ষার্থী, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ
রাজপথই দাবি সমাধানের চাবিকাঠি
শিক্ষার্থীদের এক দফা সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে, সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম মাত্রায় এনে, সংসদে আইন পাশ করে কোটাপদ্ধতিকে সংশোধন করতে হবে।
আইন পাস এবং কোটাপদ্ধতিকে সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথে অবস্থান করবো। অবশ্যই আমাদের রাজপথই আমাদের দাবির সমাধানের চাবিকাঠি। তাই উচ্চ আদালতের কাছে আমাদের অনুরোধ থাকবে শিক্ষার্থীদের দাবি মানার জন্য।
মো. শফিকুল ইসলাম, শিক্ষার্থী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ।
অবরোধ করে আমাদের দাবি আদায় করতে চাই
দক্ষিণ বাংলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বরিশাল ব্রজমোহন কলেজের শিক্ষার্থীরা সবসময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কয়েছে তারই ধারাবাহিকতায় আজকের কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রথম দিন থেকেই রাজপথে অবস্থান করছে এবং শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি আদায়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। সকল গ্রেডের অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে, সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম মাত্রায় এনে, সংসদে আইন পাশ করে কোটা পদ্ধতিকে সংশোধনে ১দফা দাবিতে আমরা আন্দোলনে নেমেছি।
আমরা যৌক্তিক দাবি নিয়ে মাঠে নেমেছি, এ দাবি আদায়ে আমরা সফল হবো। কারণ ছাত্ররা তাদের যৌক্তিক দাবি আদায়ে সবসময় সফল হয়েছে যেমন- ৫২,৬৬,৭১, ১৮ ইত্যাদি। এর জন্য সড়ক অবরোধ করে আমরা আমাদের দাবি আদায় করতে চাই এবং সাধারণ জনগণকে কোটা বৈষম্যের ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতন করতে চাই
মো. তৌসিফ আহমেদ সাব্বির, শিক্ষার্থী, সমাজকর্ম বিভাগ।
ছাত্র আন্দোলন সফল হয়নি এমন নজির নেই
বাংলাদেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে আমরা বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে যাচ্ছি। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন কোনো নজির নেই যে ছাত্র আন্দোলন সফল হয়নি। হয়ত কিছু আন্দোলন দীর্ঘদিন ছিল আবার কিছু আন্দোলন অল্পদিনের মধ্যেই সমাধান এসেছে।
আমরা একদফা দাবি নিয়ে আন্দোলন করতেছি। আমাদের দাবিটি হলো সকল গ্রেডের অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে। সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে নূন্যতম মাত্রায় এনে সংসদে আইন পাশ করে কোটা পদ্ধতিকে সংস্কার করতে হবে। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সড়ক অবরোধ সহ অন্যান্য কর্মসূচি আমরা চালিয়ে যাব।
মো. সাব্বির হোসেন সোহাগ, শিক্ষার্থী, অর্থনীতি বিভাগ।
চাকরিতে মেধা ভিত্তিক নিয়োগ হোক
আদালত কর্তৃক কোটা পদ্ধতিতে যেই বৈষম্য করা হয়েছে আমরা তার প্রতিবাদে বরিশাল সরকারি বিএম কলেজ রাজপথে অবস্থান করছি। আমরা চাই সরকারি চাকরিতে যে কোটার বৈষম্য তৈরি করা হয়েছে তা সংস্কার করতে। সরকারি চাকরিতে মেধা ভিত্তিক নিয়োগ করা হোক এবং সরকারি চাকরিতে কোন ধরনের দুর্নীতি অনিয়ম করা চলবে না। আদালতের এই রায় বাতিল করে কোটা সংস্কার না করা পর্যন্ত আমরা ধারাবাহিকভাবে সরকারি বিএম কলেজের সকল শিক্ষার্থীরা রাজপথে অবস্থান করব ইনশাল্লাহ।
মো. মাহাজাবিল আল নাঈম খাঁন, শিক্ষার্থী, ইসলাম শিক্ষা বিভাগ।
কোটা সংস্কার করা হোক
বাহান্নর ভাষা আন্দোলনের ছাত্রদের দাবি মেনে নিয়ে ১৯৫৬ সালে বাংলাকে পাকিস্তান অন্যতম ভাষা ঘোষণা দেওয়া হয়েছিলো। ২০১৮ সালে ছাত্রদের দাবি মেনে নিয়ে কোটা সংস্কার করা হয়েছিল। ঠিক তদ্রূপ ২০২৪ সালেও ছাত্রদের দাবি মেনে নিবে।
আমাদের আন্দোলনের কারণ হলো, আমরা চাই না মুক্তিযুদ্ধের ৩০ শতাংশ কোটা থাকুক। আমরা চাই কোটা সংস্কার হোক, শুধুমাত্র প্রতিবন্ধী ও আদিবাসীরা কোটা পাক্ তাও শুধুমাত্র ১০ শতাংশ এর কম। সড়ক অবরোধ করে আমরা কোন যাত্রীকে ভোগান্তি দিতে চাই না। আমরা শুধু তাদের জানিয়ে দিতে চাই আমাদের দাবি যৌক্তিক। যতক্ষণ না পর্যন্ত আমাদের দাবিদাওয়া মেনে নেওয়া হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা আমাদের দাবি দাওয়া চালিয়ে যাব।
মো. মাহাদী হাসান, শিক্ষার্থী, বাংলা বিভাগ।