বন্যার কবলে শাবিপ্রবি, প্লাবিত ক্যাম্পাসের অনেক এলাকা

সিলেটের বন্যার পানিতে শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে
সিলেটের বন্যার পানিতে শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে  © টিডিসি ফটো

লাগাতার বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সুরমা নদীর পানি উপচে প্লাবিত হয়েছে সিলেট নগরীর বিভিন্ন এলাকা। এবার বিভিন্ন জায়গা থেকে বেরিয়ে পড়া বন্যার পানির কবলে পড়েছে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি)। বন্যার পানিতে ক্যাম্পাসের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন ‘এ’ এবং ‘ডি’-এর সামনের রাস্তায় সামান্য পানি জমলেও বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হতেই সে পানি বেড়ে হাঁটু সমান উচ্চতায় পৌঁছেছে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর থেকে ছাত্রহল ও ছাত্রীহলের রাস্তায় দিয়ে স্বাভাবিক চলাচল ব্যহত হচ্ছে। এতে বিপাকে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বুধবার সুরমা নদীর পূর্ব পাশের টুকেরবাজার এলাকায় নদীর সীমানা অতিক্রম করে যানবাহন চলাচলের প্রধান রাস্তাসহ বিভিন্ন জায়গায় বন্যার পানি প্রবেশ করছে। এ পানি বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে কিলোরোডের দুইপাশে অবস্থিত লেকের পানি বাধ পেরিয়ে বাইরে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়।

এরপর দুপুর থেকে অনবরত বৃষ্টিতে সে পানি ক্রমশ বেড়ে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর থেকে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের সম্মুখ রাস্তা ও পূর্বপাশের এলাকা, চেতনা-৭১ এর পূর্বপাশের এলাকা, একাডেমিক ভবন এ, বি, ডি, ই-এর সামনের এলাকা, ইউনিভার্সিটি সেন্টার, প্রথম ছাত্রী হল, প্রধান প্রধান সড়কগুলোর অধিকাংশ জায়গা প্লাবিত হয়েছে।

এতে সিএনজি চালিত অটোরিকশা, রিকশা, শিক্ষকদের কার, মোটর সাইকেলসহ সবরকমের যান চলাচলে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সংশিষ্ট সবাইকে। রাস্তায় জমে থাকা পানির মধ্যেই অনেক শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যাতায়াত করতে দেখা গেছে।

আরও পড়ুন: ভয়াবহ বন্যার কবলে সিলেট

এদিকে বন্যা ছাড়াও সাময়িক বৃষ্টিতে ক্যাম্পাসে বিভিন্ন স্থানে বিষধর সাপের দেখা মেলে। এখন বন্যার পানি প্রবেশের ফলে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যদের মাঝে সাপের ভীতিও কাজ করছে।

প্রথম ছাত্রী হলের আবাসিক একাধিক শিক্ষার্থী জানান, ক্যাম্পাসে বন্যার পানি বেড়ে যাওয়ায় হলের পানি উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত মটর খুলে ফেলা হয়েছে। এতে করে বর্তমানে জমা থাকা পানি এক সময় ফুরিয়ে যাবে বলে পানি সংকটের আশঙ্কা করছেন তারা।

সুমাইয়া সিদ্দিকা নামের এক আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, গোলচত্বর থেকে হলের পুরো রাস্তায় হাটু অবধি পানি জমে আছে। গেট থেকে আসার সময়ে গোলচত্বরের পর হল পর্যন্ত কোনো অটো বা রিকশা পাওয়া যায়নি। খুব কষ্ট করে হলে ফিরতে হয়েছে।

তিনি বলেন, এখানে আসার পর দেখি আমাদের নেটওয়ার্ক তেমন কাজ করছে না। পানি বাড়ার কারণে হলের মটর খুলে ফেলা হয়েছে। ট্যাংকে এখন যেটুকু পানি আছে সেটাই শেষ ভরসা। কিছুক্ষণ পরে হয়তো বিদ্যুৎও চলে যেতে পারে। আর পানি যেহেতু বেড়ে গেছে সাপের ভয় তো আছেই!

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় হলের প্রভোস্টসহ আমরা সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে কথা বলেছি। ক্যাম্পাস ও হলের আশেপাশে পানি বাড়ায় পোকামাকড় ও সাপের উপদ্রব বেড়ে যেতে পারে। হলের শিক্ষার্থীদের এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলেছি। এসময় তিনি হলের শিক্ষার্থীদের রাতে ঘুমানোর সময় দরজা-জানালা বন্ধ করে মশারি টাঙিয়ে ঘুমানোর পরামর্শ দেন।


সর্বশেষ সংবাদ