হাবিপ্রবিতে রেজাল্ট কারচুপির অভিযোগ প্রমাণিত: তদন্তে বেড়েছে শিক্ষার্থীদের সিজিপিএ
- হাবিপ্রবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:২৯ PM
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ফলাফলে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে সত্য প্রমাণিত হয়েছে। প্রায় এক বছর ধরে তদন্ত শেষে পুনঃমূল্যায়নে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর সিজিপিএ পরিবর্তন করা হয়েছে।
২০২৪ সালের জুনে ১০ জন শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, তাদের ইচ্ছাকৃতভাবে কম নম্বর দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী সময়ে অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত শিক্ষক দ্বারা খাতা পুনঃনিরীক্ষণের পর গ্রেড পরিবর্তন হয়। এতে এক শিক্ষার্থীর সিজিপিএ ৩.৭৬৩ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩.৮০২-এ। বর্তমানে ব্যাচটির সর্বোচ্চ সিজিপিএ ৩.৮২৫।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ড. মোবারক হোসেন বলেন, ‘এটি একটি ব্যতিক্রমধর্মী ও জটিল প্রক্রিয়া ছিল। বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সম্পৃক্ত করায় সময় বেশি লেগেছে।’
সোশ্যাল সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. রোজিনা ইয়াসমিন লাকি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের যেটা প্রাপ্ত ছিল তারা পেয়েছে, সেটার জন্য আমরা কাজ করেছি। শিক্ষার্থীদের মনে হয়েছে তাদের নম্বর কম দেওয়া হয়েছে। নম্বর পুনঃনিরীক্ষণের জন্য তারা আবেদন করেছিল। আমরা সেই আবেদন অনুযায়ী কাজ করেছি। অভিযুক্ত শিক্ষকের ব্যাপারে তদন্ত কমিটির কোনো সিদ্ধান্ত আমার জানা নেই, এটা প্রশাসনের ব্যাপার।’
ভুক্তভোগী ১০ শিক্ষার্থীর অন্যতম নুসরাত জাহান জেসি বলেন, ‘আল্লাহর কাছে লাখো কোটি শুকরিয়া, তিনি আমাদের সফল করেছেন। ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং ছিল, কিন্তু যখন একজন শিক্ষক শিক্ষার্থীর রেজাল্ট নিয়ে ইচ্ছাকৃত বৈষম্য করে, তখন আর কেউ চুপ করে থাকতে পারে না। এই দীর্ঘ এক বছরের পথ মোটেও মসৃণ ছিল না। প্রতিনিয়ত বাধাবিপত্তির সম্মুখীন হতে হয়েছিল। আমি মাননীয় ভিসি স্যার, প্রো ভিসি স্যার এবং তদন্ত কমিটির প্রত্যেক সদস্যের নিকট চিরকৃতজ্ঞ, আমাদের বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্তের জন্য। বিশেষভাবে ধন্যবাদ দিতে চাই তদন্ত কমিটির প্রত্যেক সদস্যকে, তারা প্রত্যেকে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন যেন আমরা ন্যায়বিচার পাই। তাদের অবদানেই আজ আমরা সত্যের জয় দেখলাম। আমি দোয়া করি আর কোনো শিক্ষার্থীকে যেন এমন বৈষম্যের শিকার হতে না হয়।’
শিক্ষার্থীরা জানান, শুরু থেকেই তারা বৈষম্যের শিকার ছিলেন। শুধু সপ্তম সেমিস্টারের খাতা পুনঃমূল্যায়নের মাধ্যমেই বড় পরিবর্তন এসেছে। অন্যান্য সেমিস্টারও পুনঃমূল্যায়ন করা হলে সিজিপিএ আরও উন্নত হতে পারত।
উল্লেখ্য, গত বছরের আগস্ট থেকে বিভাগের চেয়ারম্যান সজীব কুমার রায়ের বিরুদ্ধে ফলাফল প্রদানে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা।