আওয়ামীপন্থী শিক্ষককে প্রো-ভিসি বানানোর চেষ্টা, প্রতিবাদে যবিপ্রবিতে মশাল মিছিল

যবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীদের মশাল মিছিল
যবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীদের মশাল মিছিল  © টিডিসি ফটো

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদের নেতা অধ্যাপক ড. এ এফ এম সাইফুল ইসলামকে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) প্রো-ভিসি বানানোর চেষ্টার প্রতিবাদে মশাল মিছিল করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাত এগারোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে যশোর-চৌগাছা সড়কে এ মশাল মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা।

অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম আওয়ামী সরকারের আমলের আলোচিত সাবেক সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুমের স্বামী। অভিযোগ রয়েছে, ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার হিসেবে ভোট কারচুপির মূল কারিগর ছিলেন ড. সাইফুল ইসলামের স্ত্রী নাজমানারা খানুম।

অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলামক সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রপ বোটানি এন্ড টি প্রোডাকশন টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষক। তাকে যবিপ্রবির প্রো-ভিসি বানানোর সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসলে এর প্রতিবাদে মশাল-মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা।

মশাল-মিছিলে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে যবিপ্রবির গণিত বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সুমন আলী বলেন, আমরা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম থেকে জানতে পেরেছি সাইফুল ইসলামকে কে প্রো-ভিসি হিসেবে নিয়োগের চেষ্টা করা হচ্ছে। সে একজন স্বৈরাচারের দোসর। স্বৈরাচারের দোসরকে চেয়ারে বসানোর জন্য আমরা ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের আন্দোলন করিনি। তাকে প্রো-ভিসি বানানো হলে জুলাই বিপ্লবের দুই হাজার শহীদের রক্তের সাথে বেঈমানি করা হবে। আমরা এটা মেনে নিবো না। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হাবীবুর রহমান ইমরান বলেন, মন্ত্রণালয়ের এ সিদ্ধান্তকে তীব্র নিন্দা জানাই। সরকারকে অনতিবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসতে হবে। ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার হিসেবে রাতের ভোটের মূল কারিগর ছিলেন। যার পুরস্কার স্বরূপ পরবর্তীতে তাকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিছু কুচক্রী মহল বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের দোসর ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুমের স্বামী ও  সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষক সাইফুল ইসলামকে প্রোভিসি করার চেষ্টা করছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। এই মুহূর্তে বাংলাদেশে ডেভিল হান্ট কর্মসূচি চলছে, কেউ কোন ডেভিলকে এই ক্যাম্পাসে পুনর্বাসন করার চেষ্টা করে তবে ছাত্রসমাজ তাদের মেনে নিবে না। তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বৈরাচারের দোসর ইকবাল কবির জাহিদের মতো নতুন কোনো সিন্ডিকেট গড়ে তুলতে দিব না। 

উল্লেখ্য, আওয়ামী শাসন আমলে ২০১২ সালে স্ত্রী ড. নাজমানারা খানুমের লবিংয়ে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান বলে অভিযোগ রয়েছে অধ্যাপক সাইফুল ইসলামরে বিরুদ্ধে। তিনি সিকৃবিতে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদের নেতা ছিলেন। আওয়ামী পন্থি শিক্ষকদের প্যানেল থেকে দুই দুইবার সিকৃবির সিন্ডিকেট সদস্য (২০১৪-১৬ ও ২০২২-২৪ সাল) নির্বাচিত হন তিনি। এছাড়াও ২০১৫-২০১৭ সালে কৃষি অনুষদের ডিনের দায়িত্ব পালন করেন ড. সাইফুল। তার ভায়রাভাই যবিপ্রবির ইএসটি বিভাগের অধ্যাপক কে. এম. দেলোয়ার হোসেন ও যবিপ্রবিতে বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ০৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে এসব সংগঠনের দায়িত্বে থাকা হাসিনা সরকারের সহযোগীদের বিচারের দাবিতে লিখিত অভিযোগও দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।


সর্বশেষ সংবাদ