ভুল ও নিম্নমানের কাগজে সনদ প্রদান, ক্ষুব্ধ বশেমুরবিপ্রবির গ্র্যাজুয়েটরা

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়  © সংগৃহীত

স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষে নিম্নমানের কাগজে সার্টিফিকেট (সনদ) ও মার্কশিট দেওয়ার অভিযোগ করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) গ্র্যাজুয়েটরা। এ ছাড়া সার্টিফিকেট ও মার্কশিটে গ্র্যাজুয়েটদের নাম, রেজাল্টের সিজিপিএতে ভুল থাকে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের বানানেও ভুল থাকে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন গ্র্যাজুয়েটরা।

গ্র্যাজুয়েটরা বলছেন, একজন শিক্ষার্থী চার বছর পরিশ্রম করে যা অর্জন করেন, তার দালিলিক প্রমাণ মার্কশিট ও সার্টিফিকেট। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট উন্নত ও যথাযথ মান নিশ্চিত করে সতর্কতার সঙ্গে নির্ভুলভাবে তৈরি করে। কিন্তু এই ক্ষেত্রে বশেমুরবিপ্রবি প্রশাসন একদমই বিপরীত। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যে সার্টিফিকেট ও মার্কশিট দেওয়া হয়, তার কাগজের মান খুবই নিম্ন। সার্টিফিকেটের লেখার ফ্রন্ট বা সাজানো সঠিকভাবে থাকে না। শিক্ষার্থীর নাম, রেজাল্টের সিজিপিএতে ভুল থাকে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের বানানেও ভুল থাকে। অ্যালাইনমেন্ট ঠিকভাবে না দেওয়াতে আকর্ষণীয় হচ্ছে না সার্টিফিকেট।

bosemur Inner

বশেমুরবিপ্রবি থেকে সরবরাহ করা সার্টিফিকেট

নিম্নমানের কাগজ ও ভুলে ভরা সার্টিফিকেট প্রদানের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী গোলাম রব্বানী বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যে সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে, তার সঙ্গে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তুলনা করলেই বোঝা যায়, আমাদের অবস্থান কী। একজন শিক্ষার্থীর জন্য এই ডকুমেন্টসগুলো কত গুরুত্বপূর্ণ অথচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সব থেকে উদাসীন এগুলো তৈরির ক্ষেত্রে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চরম অবহেলার পরিচয় দিয়েছে।’

ফার্মেসি বিভাগ থেকে সদ্য স্নাতক (অনার্স) শেষ করা ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ওবায়দুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের সংস্কারের দাবি জানিয়ে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক মান উন্নত করতে হলে এই স্থানগুলো ঠিক করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, একজন শিক্ষার্থীর চার বছরের অর্জন যা তার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। অথচ নিম্নমানের একটি কাগজ দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: প্রথম আলোর সামনে বিক্ষোভকারীদের ওপর লাঠিচার্জের প্রতিবাদে বশেমুরবিপ্রবিতে বিক্ষোভ

কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের গ্র্যাজুয়েট আফ্রিদি বলেন, ‘আমরা চারজন সার্টিফিকেট ওঠাই, কিন্তু কোনোটারই অ্যালাইনমেন্ট ঠিক ছিল না। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেটে এত অসংগতির চেয়ে নিজেরা বানিয়ে নিলেই ভালো হয়।’

অ্যাকাউন্ট অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের অনিক চৌধুরী তপু বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রান্সক্রিপ্টের ফ্রন্ট ও অ্যালাইনমেন্টের নিম্নমান বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ বা বহুজাতিক কোম্পানিতে চাকরির আবেদনকারীদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করে। এমন মানহীন ট্রান্সক্রিপ্ট প্রার্থীদের যোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ তৈরি করে, যা তাদের স্বপ্ন পূরণের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। একই সঙ্গে এটি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পেশাদারিত্ব ও শিক্ষার মান নিয়েও নেতিবাচক বার্তা দেয়। একজন সাবেক শিক্ষার্থী হিসেবে আশা থাকবে, নতুন প্রশাসন উন্নত ফরম্যাট এবং মানসম্মত ডিজাইন নিশ্চিত করতে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

এ বিষয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক গোলাম হায়দার বলেন, ‘বিভিন্ন বিভাগের ক্রেডিট কমবেশি থাকে। এ জন্য অনেক সময় অ্যালাইনমেন্ট কম বেশি হতে পারে। আমি তো টেকনিক্যাল না। এ বিষয়ে আমার যে প্রোগ্রামার আছে, সে ভালো বলতে পারবে। আমি তাকে বলে দিয়েছি। সে ঠিক করবে।’

আরও পড়ুন: বশেমুরবিপ্রবি ডিবেটিং সোসাইটির আয়োজন ‘ফ্রেশারস ডিবেট ৫.০’

সার্টিফিকেটের সার্বিক মানের বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. মুরাদ হোসেন বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে সার্টিফিকেটের কাগজ ও সার্বিক মানের বিষয়ে মিটিং আলোচনা করেছি। আমরা চেষ্টা করছি মান বৃদ্ধির জন্য। ডিজাইন ও বানান ভুলের জন্য আমরা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরকে নির্দেশনা দিয়েছি। তারা যথাযথ উদ্যোগ নেবে বলে আশা করছি।’


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence