৮ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েও চাকরি হয়নি, অঝোরে কাঁদলেন চাকরিপ্রার্থী
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০১৯, ১১:৩১ AM , আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৯, ১১:৪৭ AM
একটি স্কুলে সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে চাকরির জন্য দুই দফায় আট লাখ ঘুষ দিয়েছিলেন। টাকা নেন স্কুলের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক। তবু চাকরি পাননি তিনি। নিয়োগ দেওয়া হয়েছে অন্য ব্যক্তিকে।
ঘটনাটি ঘটেছে যশোরে। মঙ্গলবার দুপুরে যশোর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী নুর ইসলাম। তিনি অভিযোগ করেন, সদর উপজেলার রূপদিয়া ওয়েলফেয়ার একাডেমির সভাপতি অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন ও প্রধান শিক্ষক বিএম জহিরুল পারভেজ টাকা ফেরত দেননি। ওই পদে অন্যকে নিয়োগও দিয়েছেন তারা।
চাকরিপ্রার্থী নুর ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন ঘুরেও টাকা ফেরত না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি। টাকার অভাবে প্রতিবন্ধী সন্তান ও অসুস্থ বাবার চিকিৎসাও করাতে পারছেন না। জমি বিক্রি করে চাকরির আশায় সাড়ে আট লাখ টাকা দিয়ে এখন অসহায় জীবনযাপন করছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
তিনি জানান, ২০১৫ সালের ছয় মার্চ গ্রন্থাগারিক পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তখন চাকরি দেয়ার কথা বলে সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক সাত লাখ টাকা নেন।
কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবেই তারা নিয়োগ বোর্ড গঠন করেননি। পরে ১০ অক্টোবর দ্বিতীয়বার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। সেবারও বোর্ড গঠন না করে ২০১৬ সালের ২০ জুন তৃতীয়বার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তখন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় প্রথম হন তিনি। কিন্তু সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক ফল প্রকাশে গড়িমসি করেন।
তারা রেজ্যুলেশন করতে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। শিক্ষা অফিসার ও নিয়োগ বোর্ডের কর্মকর্তারা টাকা ছাড়া রেজ্যুলেশনে স্বাক্ষর করবেন না বলে তারা জানান। তবে টাকা দেয়ার কিছু দিন ওই পদে চিন্তা সেন নামে একজনকে নিয়োগ দেয়া হয়। অথচ দুই দফায় সাড়ে আট লাখ টাকা নিলেও চাকরি দেননি তারা।
সর্বশেষ তারা টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। কিন্তু চাকরির জন্য টাকা দেয়ার সময় সাক্ষী ছিলেন সভাপতি অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেনের ছোট ভাই ফেরদৌস, নরেন্দ্রপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার মোমিন উদ্দিন, নজরুল ইসলাম, এলাকার আনোয়ার হোসেন ও মিজানুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এসএম আকরাম হোসেন, সদর উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক অশোক কুমার বোস, যুগ্ম আহবায়ক মাজহারুল ইসলাম, সদস্য ফারুক হোসেন প্রমুখ।
তবে অভিযোগ প্রসঙ্গে স্কুলের সভাপতি অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন বলেছেন, ‘চাকরির নামে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ বানোয়াট। প্রতিপক্ষের লোকজন আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে।’