সালিসে বিচারের পর যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:১৪ PM , আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:১৬ PM
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় চুরির অভিযোগের পর এক তরুণের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে স্থানীয়ভাবে। শনিবার (৫ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার চানন্দী ইউনিয়নের প্রকল্প বাজার এলাকার একটি গাছ থেকে মো. জাফর (১৮) নামের ওই তরুণের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, গতকাল সন্ধ্যায় বিএনপির এক নেতার উদ্যোগে সালিস বৈঠকে জাফরকে চুরির অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরিবারের দাবি, সালিসে নির্যাতনের পরই তাকে হত্যা করে লাশ গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।
নিহত জাফর ওই এলাকার জাকের হোসেনের ছেলে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জাফর সম্প্রতি চানন্দী ইউনিয়ন বিএনপির পশ্চিম শাখার সভাপতি মো. সোহেল মাহমুদের বাড়িতে মাসিক চুক্তিতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করছিলেন। তবে পাঁচ দিন আগে তিনি হঠাৎ কাজ ছেড়ে দেন। এরপর সোহেল মাহমুদের অভিযোগ, জাফর বাড়ি থেকে আলমারির চাবি, মোবাইল ফোনের চার্জার ও কিছু নগদ টাকা চুরি করে নিয়ে গেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় চুরির অভিযোগের ভিত্তিতে হরণী ইউনিয়নের আলী বাজার এলাকা থেকে জাফরকে ধরে আনেন সোহেল মাহমুদ। পরে তাকে প্রকল্প বাজারে নিয়ে সালিস বসান তিনি। সেখানে স্থানীয়দের সামনে চুরির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। বৈঠকে জাফরের বাবা জাকের হোসেনকেও ডেকে আনা হয়। তবে একপর্যায়ে তিনি ছেলেকে রেখেই বাড়ি ফিরে যান। পরদিন সকালে বাজারসংলগ্ন একটি গাছে জাফরের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা।
নিহতের বাবা জাকের হোসেন দাবি করেন, ‘আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে আটকে রেখে সালিসে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। তাকে মারধরের পর গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। আমি এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই।’
অন্যদিকে সব অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘জাফর আমাদের বাড়ি থেকে ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি ও নগদ টাকা চুরি করেছে। গতকাল সন্ধ্যায় তাকে পেয়ে প্রকল্প বাজারে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করি, পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। তাকে নির্যাতন বা হত্যা করা হয়নি, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন।’
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে মোর্শেদ বাজার তদন্তকেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) লিয়াকত আলী বলেন, ‘সালিসে চুরির অভিযোগ অস্বীকার করে জাফর। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। নিহতের শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে প্রকৃত ঘটনা জানার চেষ্টা চলছে।’
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আজমল হুদা বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।’