চানখারপুলে ৬ হত্যা : ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ গঠনের আদেশ ১৪ জুলাই
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৫, ১২:২৬ PM , আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৫, ০১:১৮ PM

২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় ঢাকার চানখাঁরপুলে সংঘটিত ৬ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশ দেওয়ার জন্য ১৪ জুলাই দিন ধার্য করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৩ জুন) অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষে বিচারপতি মোঃ গোলাম মর্তুজা মজুমদার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইবুন্যাল এই তারিখ ধার্য করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন, মোঃ শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মোঃ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এর আগে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ঢাকার চানখাঁরপুল এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে ছয় শিক্ষার্থী নিহত হন। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ২০২৪ সালের ২৫ মে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেয় প্রসিকিউশন। এরপর ট্রাইব্যুনাল তা আমলে নেয় এবং ২৯ জুন আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আবেদন করা হয়।
আসামিদের মধ্যে ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক এডিসি শাহ্ আলম মো. আখতারুল ইসলাম এবং সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল পলাতক রয়েছেন। তাঁদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী কুতুবউদ্দিন চার আসামির অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেন।
তিনি শুনানিতে বলেন, ‘জুলাইয়ের ঘটনাটি কোনো পরিকল্পিত গণহত্যা নয়, বরং বিচ্ছিন্ন এক ঘটনা। এসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই।’
এ মামলার অপর চার আসামি—রমনা থানার সাবেক পরিদর্শক (নিরস্ত্র) আরশাদ হোসেন, সাবেক কনস্টেবল সুজন হোসেন, ইমাজ হোসেন ও নাসিরুল ইসলাম—কারাগারে আছেন। তাঁদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। আইনজীবীরা তাঁদেরও অব্যাহতির আবেদন করেন।
আরশাদের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সাদ্দাম হোসেন বলেন, “ঘটনার দিন নেতৃত্বে ছিলেন একজন এডিসি, সেখানে একজন ওসি নির্দেশ দিতে পারেন না। আরশাদ গুলি করেননি, তার নাম কোনো প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় নেই।”
সুজন, ইমাজ ও নাসিরুলের পক্ষে অংশ নেওয়া আইনজীবীরাও বলেন, তাঁরা শুধু উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে দায়িত্ব পালন করেছেন। কেউ কোথায় কাকে গুলি করেছেন, তা আনুষ্ঠানিক অভিযোগে উল্লেখ নেই।
এ সময় প্রসিকিউশনের পক্ষে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম এবং বি এম সুলতান মাহমুদ বলেন, ঘটনার প্রমাণ ও সাক্ষ্য অনুযায়ী সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের জুলাই মাসজুড়ে সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা পুনর্বহালের বিরুদ্ধে সারাদেশে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক আন্দোলন হয়। এই সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে একাধিক শিক্ষার্থী নিহত হন, যা দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে। চানখাঁরপুলের ঘটনা সেই আন্দোলনের অন্যতম বেদনাদায়ক অধ্যায়।