ব্যস্ততায় ঠাসা ২০২৬, তিন ফরম্যাটে ৪০ ম্যাচ বাংলাদেশের
- ক্রীড়া প্রতিবেদক
- প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৪৭ PM
২০২৬ সালে যেন অন্যরকম এক অধ্যায় লিখবে বাংলাদেশের ক্রিকেট। ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টালেই একের পর এক সিরিজ, একের পর এক চ্যালেঞ্জ—কখনো দেশের মাটিতে, কখনো দূর অজানায়। সবমিলিয়ে ২০২৬ সাল যেন টাইগারদের জন্য যেন নিরবচ্ছিন্ন পরীক্ষার দীর্ঘ এক অধ্যায়।
আইসিসির সূচি অনুযায়ী, তিন ফরম্যাট মিলিয়ে বাংলাদেশের জন্য ব্যস্ততায় ঠাসা এক বছর অপেক্ষা করছে। ৭টি দ্বিপাক্ষিক সিরিজে এখন পর্যন্ত ৪০টি ম্যাচ নিশ্চিত। মাঝে দুটি বড় বিরতিতে চাইলেই দ্বিপাক্ষিক সিরিজ আয়োজন করতে পারবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের দ্বাদশ আসর শুরু হবে ২৬ ডিসেম্বর। আগামী বছরের ২৩ জানুয়ারি জমজমাট এক ফাইনালের মধ্যে দিয়ে পর্দা নামবে ঘরোয়া এই টুর্নামেন্টের। তবে এই উন্মাদনার রেশ কাটতে না কাটতেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রবেশ করতে হবে টাইগারদের।
মাত্র ১৪ দিনের ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আবহে ঢুকবে লাল-সবুজেরা। যদিও বৈশ্বিক এই মহারণে বাংলাদেশের পথ কতটা দীর্ঘ হবে, তা সময়ই বলবে। তবে যাত্রা যেখানেই থামুক না কেন, বিশ্বমঞ্চের পরও দম ফেলার ফুরসৎ নেই টাইগারদের। বিশ্বকাপের পরপরই দ্বিপাক্ষিক সিরিজের প্রস্তুতি শুরু হয়ে যাবে।
আগামী মার্চ–এপ্রিলে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে বাংলাদেশে আসার কথা পাকিস্তান দলের। এ সফরটিতে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অন্তর্ভুক্ত দুটি টেস্টের পাশাপাশি সমান তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার কথা দ্য গ্রিন ম্যানদের। তবে পিএসএলের সঙ্গে সময়সূচির সংঘাতে এ সফর নিয়ে অনিশ্চয়তা জেগেছে। তবে শেষমেশ পাকিস্তান না এলে বিকল্প পরিকল্পনাও সাজাতে পারে টিম ম্যানেজমেন্ট।
এপ্রিলে আসবে নিউজিল্যান্ড। ব্ল্যাক ক্যাপসদের বিপক্ষে তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ। তবে মে মাসে সূচি একদমই ফাঁকা। এ সময়ে চাইলেই দ্বিপাক্ষিক সিরিজ আয়োজন করতে পারবে বিসিবি। ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি বিবেচনায় এমন উদ্যোগের সম্ভাবনাও একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
জুনে অপেক্ষা করছে বহুল প্রতীক্ষিত অস্ট্রেলিয়া সিরিজ। ২০২১ সালের পর ফের সাদা বলের ক্রিকেট খেলতে বাংলাদেশে আসবে অজিরা। সমান তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলবে দল দুটি। এই সিরিজ শেষেই জিম্বাবুয়ের উদ্দেশ্যে উড়াল দেবে বাংলাদেশ।
আইসিসি নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, আফ্রিকান এই দলের বিপক্ষে দুটি টেস্ট ও পাঁচটি ওয়ানডে খেলবে বাংলাদেশ। অবশ্য, জুলাইয়ের ব্যস্ততা পেরিয়ে আগস্টেও থেমে থাকার সুযোগ নেই বাংলাদেশের। যেখানে আয়ারল্যান্ড সফরে তিনটি ওয়ানডে ও তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলবে লাল-সবুজেরা।
অক্টোবরে চলবে লাল বলের লড়াই। ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুটি টেস্ট ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। এ ছাড়া নভেম্বরে বছরের শেষ দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে দক্ষিণ আফ্রিকায় যাবে টাইগাররা। প্রোটিয়াদের মাটিতে দুটি টেস্ট ও তিনটি ওয়ানডে গড়াবে।
সব মিলিয়ে ২০২৬ সালে ৮টি টেস্ট, ২০টি ওয়ানডে ও ১২টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ আছে বাংলাদেশের। সামনে ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপ থাকায় ওয়ানডে ম্যাচের সংখ্যা আরও বাড়ার সম্ভাবনাও উঁকি দিচ্ছে। সবমিলিয়ে ২০২৬ শেষেও হয়তো পরিসংখ্যান বদলাবে, র্যাঙ্কিং উঠানামা করবে; কিন্তু সবচেয়ে বড় প্রশ্ন একটাই, দীর্ঘ পরীক্ষা আর ব্যস্ত সূচির ধকল কাটিয়ে কতটা সাফল্যের শিখরে জায়গা করতে পারলো বাংলাদেশ!