এশিয়া কাপ নিয়ে যেসব বিষয় জানা জরুরি
- টিডিসি স্পোর্টস
- প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:২৭ PM
এশিয়ার মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই আগামী ৯ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হতে যাচ্ছে। আর ২৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে শিরোপা নির্ধারণী ফাইনাল। এই টুর্নামেন্টের ১৭তম আসরে ১৯টি ম্যাচের মধ্যে ১১টি দুবাইয়ে, আর ৮টি ম্যাচ আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত হবে। উদ্বোধনী ম্যাচের ভেন্যু আবুধাবি, এছাড়া জমকালো ফাইনালের মঞ্চ দুবাই। উদ্বোধনী ম্যাচ ব্যতীত সবগুলো ম্যাচই বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় মাঠে গড়াবে, কেবল রাত ৮টায় গড়াবে উদ্বোধনী ম্যাচটি।
আমিরাতে এশিয়া কাপ, নেপথ্যে যা
এবারের এশিয়া কাপের আয়োজক ভারত। কিন্তু পাকিস্তানের সঙ্গে রাজনৈতিক টানাপোড়েনে দেশ দুটি প্রায় এক যুগ ধরেই দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলে না। কেবল, এসিসি ও আইসিসির কোনো টুর্নামেন্টেই ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ দেখা যায়। ফলে, ভারতে মহাদেশীয় এই মহারণ আয়োজিত হলেও পাকিস্তানে নিরপেক্ষ কোনো ভেন্যুর ব্যবস্থা করে দিতে হতো বিসিসিআইকে। তাই, হাইব্রিড মডেলে না গিয়ে মরুর বুকেই পুরো টুর্নামেন্ট আয়োজন করছে ভারত। যেখানে ভারতই আয়োজক হিসেবে থাকছে।
এশিয়া কাপের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার অংশগ্রহণে ১৯৮৪ সালে প্রথমবার এশিয়া কাপ আয়োজিত হয়েছিল। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর পরিধি ও গ্ল্যামার দুই-ই বেড়েছে। শুরুর দিকে কেবল ওয়ানডে ফরম্যাটে আয়োজিত হলেও আইসিসির টুর্নামেন্টের ওপর নির্ভর করে কালের বিবর্তনে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেও এই টুর্নামেট আয়োজিত হচ্ছে। যেমন- ভারতে অনুষ্ঠিত ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগে ওয়ানডে ফরম্যাটে একই বছর এশিয়া কাপ আয়োজিত হয়েছিল। এবার ভারত ও শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠেয় ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে গড়াবে ৮ জাতির এই টুর্নামেন্ট।
অংশগ্রহণকারী দল
এবারের আসরে দুটি গ্রুপে ভাগ হয়ে ৮টি দল অংশ নিচ্ছে, গেলবারের তুলনায় দুটি দল বেড়েছে। গ্রুপ ‘এ’তে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারতের সঙ্গে স্বাগতিক সংযুক্ত আরব আমিরাত, পাকিস্তান ও ওমান রয়েছে। এছাড়া ‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও হংকং। তবে নেপাল কিছুটা দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাদ পড়ে যায়। মূলত এসিসি মেনস প্রিমিয়ার কাপের সেমিফাইনালে ইউএইয়ের কাছে হেরেছিল তারা, এরপর তৃতীয় স্থান নির্ধারণীতে হংকংয়ের কাছেও পরাজয় দেখেছিল তারা।
টুর্নামেন্ট ফরম্যাট
এবারের টুর্নামেন্টে প্রতিটি দল গ্রুপ পর্বে একবার করে একে অপরের সঙ্গে খেলবে। সেখান থেকে প্রতিটি গ্রুপের শীর্ষ দুটি দল সুপার ফোরে জায়গা করে নেবে। সেখান থেকে সেরা দুই দল আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর দুবাইতে শিরোপা নির্ধারণী ফাইনালে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে।
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তান
যতই রাজনৈতিক দূরত্ব থাকুক, আসন্ন এশিয়া কাপে ঘিরে আরও একবার আলোচনায় ভারত-পাকিস্তান মহারণ। বরাবরই ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথের আলাদা এক আবহ রয়েছে। এবারও ব্যতিক্রম নয়। আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর গ্রুপ পর্বে একে অপরের মুখোমুখি হবে দল দুটি। সুপার ফোরের পর ফাইনালেও দল দুটির দেখা হতে পারে। যদিও এখন পর্যন্ত এশিয়া কাপের ফাইনালে একে অপরের মুখোমুখি হয়নি ভারত-পাকিস্তান।
বিশেষ নজরে থাকবেন যেসব ক্রিকেটার
পাকিস্তানের এবারের দলে জায়গা হয়নি বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের, যা অনেকের কাছেই অপ্রত্যাশিত। তবে তরুণ দল নিয়েই ভালো কিছুর প্রত্যাশা দ্য গ্রিন ম্যান শিবিরের। সালমান আলি আগা, সাহিবজাদা ফারহান, হাসান নেওয়াজের কাঁধেই ব্যাটিং ইউনিটের দায়িত্ব থাকছে। এছাড়া পেস ইউনিটে শাহিন শাহ আফ্রিদি-ই দ্য গ্রিন ম্যানদের মূল ভরসা।
অন্যদিকে ভারতের হয়ে মোটামুটি ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ী দলটিই মাঠে নামবে। এর মধ্যে দুটি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরির মালিক অভিষেক শর্মা বিশেষ নজরে থাকবেন। এছাড়া স্বাগতিকদের মুহাম্মদ ওয়াসিম, হংকংয়ের ইয়াসিম মুর্তজা, আফগানিস্তানের গজনফার, বাংলাদেশের রিশাদ হোসেন-তানজিদ তামিম-পারভেজ ইমনরা বিশেষভাবে নজরে থাকবেন।
বাংলাদেশের ম্যাচগুলো কবে
গ্রুপ পর্বে সব ম্যাচ আবুধাবিতে খেলবে বাংলাদেশ। আগামী ১১ সেপ্টেম্বর হংকংয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আসর শুরু করবে টাইগাররা। এছাড়া ১৩ সেপ্টেম্বর শ্রীলঙ্কা ও ১৬ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের মুখোমুখি হবে লিটন দাসের দল।
অতীত স্মৃতিতে এশিয়া কাপ
এশিয়া কাপের আগের আসরগুলো বেশকিছু ম্যাচই স্মরণীয়। এর মধ্যে ২০১৮ সালে শ্রীলঙ্কাকে ৯১ রানে হারায় আফগানিস্তান। এছাড়া ভারতের বিপক্ষে ২৮৬ রান তাড়া করতে গিয়ে প্রায় ম্যাচটা ছিনিয়ে নিয়েছিল হংকং। অবশ্য, এবারও উত্তেজনার ঘনঘটা। মরুভূমির বুকে গড়া ২২ গজের দিকেই চোখ ক্রিকেটবিশ্বের।
তবে টুর্নামেন্ট ঘিরে প্রত্যাশাও বেশ ক্রীড়াপ্রেমীদের। ভক্ত-সমর্থকদের ধারণা, নতুন মুখ, পুরনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা কিংবা রাজনৈতিক উত্তেজনার ছায়া; সবমিলিয়ে এবারের এশিয়া কাপ উত্তেজনা আর ক্রিকেটীয় সৌন্দর্যের এক অনন্য মিলনমেলা হতে যাচ্ছে।