তিস্তার পানিবৃদ্ধিতে লালমনিরহাটে প্লাবিত দশ ইউনিয়ন, পানিবন্দি ২০ হাজার পরিবার
- রংপুর প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ০২:১৮ PM
উজানের ঢল ও টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানি হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাটের আদিতমারী, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ ও সদর উপজেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এতে অন্তত ১০টি ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে হাজার হাজার একর আমন ধানের ক্ষেত, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঘরবাড়ি, রাস্তা ও বাজারঘাট। নদীর পানি ঘরে ঢুকে বন্ধ হয়ে গেছে রান্নাবান্না, বহু মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন উঁচু স্থানে ও বিদ্যালয়ে।
রবিবার (৫ অক্টোবর) রাতে ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। তবে সোমবার সকাল থেকে পানি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। বর্তমানে পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও নদীপাড়ের মানুষজন এখনও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
হাতিবান্ধা উপজেলার সিংগীমারী ইউনিয়নের কৃষক মো. আব্দুল লতিফ বলেন, ‘অনেক কষ্টে সার আর কীটনাশক দিয়ে আমনের চারা বড় করেছি। এখন সবই তলিয়ে গেছে পানির নিচে। প্রতি বছর একই কষ্ট, কিন্তু কেউ স্থায়ী সমাধান করে না। কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা চর এলাকার কৃষকরা জানান, পানির সঙ্গে বয়ে আসা পলিতে ধানের জমি ঢেকে গেছে। ফলে ফসল পুনরুদ্ধারের সুযোগও কমে গেছে। অনেকেরই ধারণা, এ বছর আমনের উৎপাদন বড় ধাক্কা খাবে।’
কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা চর এলাকার কৃষকরা জানান, বন্যার পানির সঙ্গে আসা পলিতে ধানের জমি ঢেকে গেছে। এতে ফসল নষ্ট হয়ে গেছে, পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনাও কম। অনেকের আশঙ্কা, এবারের আমন মৌসুমে উৎপাদন বড় ধাক্কা খাবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তার পানি বিপদসীমা অতিক্রমের সম্ভাবনা নেই। তবে পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নদী ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
পাউবোর লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রয়েছে। পানি কমে গেলে ভাঙন ঠেকাতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, ‘আমরা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের সতর্ক অবস্থানে রেখেছি। প্রয়োজনে দ্রুত ত্রাণ কার্যক্রম চালু করা হবে।’