কত পেলে গুচ্ছে চান্স হবে— যা বলছেন তিন উপাচার্য

ভর্তি পরীক্ষার্থী ও তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য
ভর্তি পরীক্ষার্থী ও তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য  © টিডিসি ফটো

আগামী ৩০ জুলাই ‘ক’ ইউনিটের পরীক্ষার মধ্যদিয়ে গুচ্ছভুক্ত ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিযুদ্ধ শুরু হবে। এবার ভর্তি পরীক্ষায় পাস নম্বর ৩০ নির্ধারণ করা হয়েছে। যদিও ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে কোনো পাস নম্বর ছিল না। এই অবস্থায় কত নম্বর পেলে গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স হবে সেই প্রশ্ন শিক্ষার্থীদের।

ভর্তিচ্ছুদের মনে জাগ্রত হওয়া প্রশ্ন নিয়ে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস কথা বলেছে গুচ্ছভুক্ত তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সাথে। তাদের মতে, কত নম্বর পেলে গুচ্ছে চান্স মিলবে সেটি নির্দিষ্টভাবে বলা না গেলেও ৩০ এর ওপর পেলে যেকোন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি বিষয় পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অর্থাৎ পাস নম্বর পেলেই যেকোন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ থাকবে।

গত শিক্ষাবর্ষের ফলাফল বিশ্লেষণ ও চান্সপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গুচ্ছের একেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে একেক রকম নম্বর প্রয়োজন হয়। অপেক্ষাকৃত ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেতে হলে নূন্যতম ৫৫ থেকে ৬০ শতাংশ নম্বর প্রয়োজন হবে। তবে তুলনামূলক পিছিয়ে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে পাস নম্বরই যথেষ্ট বলে অভিমত তাদের।

২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় মেধাতালিকার প্রথম দিকে ছিলেন ফারহানা আফরিন। তিনি বলেন, আমি ভর্তি পরীক্ষায় ৭০.৫ নম্বর পেয়েছিলাম। ইচ্ছা ছিল শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভালো একটি বিষয় নিয়ে পড়বো। তবে সুযোগ হয়নি। পরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি।

আরও পড়ুন: শিক্ষক নেই, তবুও শিক্ষার্থী ভর্তি তিন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে

তিনি আরও বলেন, গত শিক্ষাবর্ষে ৩০ এর কম পেয়েও অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০-১৫ নম্বর প্রাপ্তদেরও ভর্তি করিয়েছে বলে শুনেছি। সে হিসেবে এবার ৩০ নম্বর যথেষ্টই বলা চলে।

ফারহানার এই কথার সাথে একমত পোষণ করেছেন ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে টেকনিক্যাল কমিটির দায়িত্বে থাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূর। এবারের টেকনিক্যাল কমিটিতে তিনি যুগ্ম আহবায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে সম্প্রতি এই দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন তিনি।

অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূর মনে করেন, যেহেতু এবার একটি পাস নম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে, তাই ধারণা করা যাচ্ছে যারা ভর্তি পরীক্ষায় ৩০ নম্বর পাবেন তারা সকলেই কোনো না কোনো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবেন।

২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ৬০ শতাংশ নম্বর প্রাপ্তরাই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন করেছিল জানিয়ে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, কত নম্বর পেলে গুচ্ছে চান্স হবে সেটি বলা মুশকিল। তবে ভালো সাবজেক্ট পেতে হলে কমপক্ষে ৭০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে।

আরও পড়ুন: আগামীতে বিভাগীয় শহরে রাবির ভর্তি পরীক্ষা

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ছাদেকুল আরেফিন বলেন, অনুমান নির্ভর কোনো কথা বলা উচিত হবে না। ভর্তি পরীক্ষায় যারা বেশি নম্বর পাবে তারাই এগিয়ে থাকবে। আমরা এবার পাস নম্বর নির্ধারণ করে দিয়েছি। ৩০ এর নিচে পেলে কেউ ভর্তির সুযোগ পাবে না। ভর্তি পরীক্ষায় ৩০ প্রাপ্ত সকলেই ভর্তির যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।

প্রসঙ্গত, আগামী ৩০ জুলাই ‘ক’ ইউনিট, ১৩ আগস্ট ‘খ’ ইউনিট এবং পরবর্তী শনিবার অর্থ্যাৎ ২০ আগস্ট ‘গ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

গুচ্ছভুক্ত ২২ বিশ্ববিদ্যালয় হলো-  জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়; ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়; খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়; কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়; জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়; বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর; বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়; রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়; বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়; শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়; শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়; হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়; মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়; নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়; যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়; পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়; বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়; রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়; বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়, কিশোরগঞ্জ; চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।


সর্বশেষ সংবাদ