গুচ্ছ ভর্তি নিয়ে রিট

পরীক্ষার তারিখ ঘোষিত হলেও অনিশ্চয়তায় ১৬ ব্যাচের ভর্তিচ্ছুরা

শিক্ষার্থী
শিক্ষার্থী  © ফাইল ফটো

গুচ্ছভুক্ত ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ২০১৬ সালে পাসকৃত এসএসসি শিক্ষার্থীদের আবেদনের সুযোগ বাদ দিয়ে প্রকাশ করা বিজ্ঞপ্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আদালতে রিট করেছেন ভর্তিচ্ছুরা। ইতোমধ্যে ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এখনো রিটের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় এসএসসি ১৬ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। ফলে এই ব্যাচের ভর্তিচ্ছুরা চরম বিপাকে পড়েছেন।

জানা গেছে, গুচ্ছভুক্ত ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২০২১ সেশনের ভর্তি পরীক্ষার জন্য দুটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। চলতি বছরের ৩ মার্চ প্রথম বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলা হয়, ২০১৬ হতে ২০১৮ সালের এসএসসি বা সমমান এবং ২০১৯ ও ২০২০ সালের এইচএসসি বা সমমান ডিপ্লোমা-ইন কমার্স, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি ভোকেশনাল, এ লেভেল এবং অন্যান্য সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরাই কেবল ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রাথমিক আবেদন করতে পারবেন।

এরপর ২০১৬ সালের পরিবর্তে ২০১৭ সাল উল্লেখ করে ৩১ মার্চ আরেকটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এ কারণে ৩১ মার্চের বিজ্ঞপ্তি চ্যালেঞ্জ করে ২০১৬ সালের শিক্ষার্থীরা হাইকোর্টে রিট করেন। রিটে শিক্ষাসচিব, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সিলেট, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়সহ ২৪ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বিবাদী করা হয়।  রিটের নিষ্পত্তি না হওয়ায় ২০১৬ ব্যাচের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।

তবে দুইবার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের বিষয়টি অস্বীকার করেছে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটি। তারা বলছেন, আমরা মূল বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছি ৩১ মার্চ। যেটি জাতীয় দৈনিকগুলোতে প্রকাশ করা হয়েছে। এর বাইরে কোনো বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি। প্রাথমিক আলোচনায় গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ২০১৬ ব্যাচের এসএসসি পাসকৃতদের আবেদনের সুযোগ দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। তবে সেটি ছিল মৌখিক আলোচনা। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নয়। বিজ্ঞপ্তি একবারই প্রকাশ করা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটির এক সদস্য দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, ৩ মার্চের যে বিজ্ঞপ্তির কথা বলা হচ্ছে, সেটি সঠিক নয়। আমরা সেদিন কোনো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করিনি। ভর্তি কমিটির মিটিংয়ে বিষয়টি মৌখিকভাবে আলোচনা করা হয়েছিল। আলোচনা তো অনেক কিছু নিয়ে হয়। তবে সবকিছু তো আর চূড়ান্ত করা হয় না। আমাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ৩১ মার্চের বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশ করা হয়েছে। সেটি বিভিন্ন পত্রিকায় দেয়া আছে।

এদিকে ২০১৬ ব্যাচের রিটকারী ভর্তিচ্ছুরা বলছেন, প্রথম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের প্রায় এক মাস পর দ্বিতীয় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সংশোধীত বিজ্ঞপ্তিতে ইচ্ছাকৃতভাবে ২০১৬ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বাদ দেওয়া হয়েছে। গুচ্ছ কমিটির এমন হটকারী সিদ্ধান্তের ফলে অনেক ভর্তিচ্ছুর স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে। আমাদের সাথে চরম অন্যায় করা হয়েছে। ভর্তি পরীক্ষার মতো এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে গুচ্ছ কমিটির এমন অদূরদর্শীতা মেনে নেওয়া যায় না। সেজন্যই আমরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।

আরও পড়ুন: অনলাইন পরীক্ষা চলাকালে মায়ের মৃত্যু দেখলেন ঢাবি শিক্ষার্থী

এ প্রসঙ্গে ভোলা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী রাসেল মাহমুদ বলেন, ‘‘ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা যতটা না শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি লাঘব করেছে, তার চেয়ে বেশি হতাশার তৈরি করেছে। প্রথম থেকেই গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতিতে একের পর এক পরিবর্তন এনে শিক্ষার্থীদের চরম বিপর্যস্ত করা হয়েছে । ২০১৬ সালের এসএসসি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা গত বছরও গুচ্ছতে থাকা অন্তত ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু এবছর সে সুযোগটি নেই। যার কারণে হতাশায় ভুগতে হচ্ছে ২০১৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী সহ বহু সেকেন্ড টাইমারদের।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘হাইকোর্টে ২০১৬ ব্যাচের করা রিটের রুল জারি করা হয়, কিন্তু গুচ্ছ কমিটি কিংবা ইউজিসি জবাব দিবে দিবে করে আর জবাব দেয়নি। এরমধ্যেই আগামী ১৭ অক্টোবর থেকে পরীক্ষা শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি মেনে না নিয়ে তাদের মনগড়া সিদ্ধান্তের কারণে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন অন্ধকারে ঢেকে যাচ্ছে।’’

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটির যুগ্ম আহবায়ক ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিষয়টি এখন আদালতের এখতিয়ার। এই বিষয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। আদালত যে সিদ্ধান্ত দেবে আমরা তা মেনে নিবো।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence