বিশ্বের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পুনরায় চালু করতে যাচ্ছে জাপান

পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ‘কাশিওয়াজাকি-কারিওয়া’
পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ‘কাশিওয়াজাকি-কারিওয়া’   © সংগৃহীত

ফুকুশিমা ট্র্যাজেডির ক্ষত কাটিয়ে দীর্ঘ দেড় দশক পর আবারও পরমাণু শক্তিতে ফিরছে জাপান। সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ‘কাশিওয়াজাকি-কারিওয়া’ পুনরায় চালুর চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে নিগাতা স্থানীয় সরকার। সোমবার এক ঐতিহাসিক ভোটাভুটিতে কেন্দ্রটি আংশিকভাবে সচল করার পক্ষে রায় দেওয়া হয়।

২০১১ সালে ভয়াবহ ভূমিকম্প ও সুনামির পর জনরোষের মুখে জাপানের ৫৪টি পারমাণবিক চুল্লি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি দুটি বিশেষ কারণে এই অবস্থান পরিবর্তন করেছেন। এক. অর্থনৈতিক সাশ্রয়: গত বছর জ্বালানি আমদানিতে জাপানের খরচ হয়েছে প্রায় ১০.৭ ট্রিলিয়ন ইয়েন, যা দেশটির মোট আমদানির এক-দশমাংশ। এই বিশাল ব্যয় কমাতে নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিকল্প নেই। দুই. জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রা: কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে পরিবেশবান্ধব বা 'ক্লিন এনার্জি' নিশ্চিত করতে পারমাণবিক শক্তিকে সবচেয়ে কার্যকর মাধ্যম মনে করছে জাপান সরকার।

জাপানি সংবাদমাধ্যম এনএইচকে জানিয়েছে, কেন্দ্রটির সাতটি চুল্লির মধ্যে প্রথমটি আগামী ২০ জানুয়ারি চালু হতে পারে। এটি চালু হলে রাজধানী টোকিও ও এর আশপাশের এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ অন্তত ২ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। উল্লেখ্য, বিতর্কিত ফুকুশিমা প্ল্যান্ট পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান 'টোকিও ইলেকট্রিক পাওয়ার কোম্পানি'ই (TEPCO) এই বিশাল কেন্দ্রটির দায়িত্বে রয়েছে।

সরকারিভাবে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে এখনো রয়ে গেছে ফুকুশিমার আতঙ্ক। সোমবার নিগাতায় ভোট চলাকালীন শত শত মানুষ ‘পারমাণবিক শক্তিকে না বলুন’ স্লোগান নিয়ে প্রতিবাদ জানান। এক বিক্ষোভকারী নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, 'পরমাণু দুর্ঘটনার ভয়াবহতা আমরা খুব কাছ থেকে দেখেছি, সেই আতঙ্ক এখনো আমাদের তাড়া করে ফেরে।'

তবে শঙ্কা থাকলেও নতুন কর্মসংস্থান এবং বিদ্যুৎ বিল কমানোর আশায় অনেক নাগরিক আবার সরকারের এই সাহসী সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। দীর্ঘ ১৫ বছর পর এই বিশাল স্থাপনার পুনরায় সচল হওয়া বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সংবাদসূত্র: আলজাজিরা


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!