পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জরুরি বৈঠক, কঠোর হুঁশিয়ারি ভারতকে

জরুরি বৈঠক করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী
জরুরি বৈঠক করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী  © আইএসপিআর (পাকিস্তান)

কাশ্মীর ইস্যুতে দিল্লি-ইসলামাবাদের চরম উত্তেজনার মধ্যে জরুরি বৈঠক করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। শুক্রবার (২ মে) রাতে দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনিরের নেতৃত্বে স্পেশাল কর্পস কমান্ডার্স কনফারেন্সে (সিসিসি) এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।  

পাকিস্তানের দ্য ডন পত্রিকার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়।  প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের এই বৈঠকে ভূ-রাজনৈতিক পরিবেশ, পাকিস্তান-ভারত চলমান উত্তেজনা এবং বিস্তৃত আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির ওপর বিশেষ আলোচনা হয়েছে। 

রাওয়ালপিন্ডির জেনারেল হেডকোয়ার্টারে আয়োজিত কোর কমান্ডার কনফারেন্সে (সিসিসি) তিনি সভাপতিত্ব করেন।  বৈঠক শেষে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, এই সম্মেলনে সাম্প্রতিক ভূ-রাজনৈতিক পরিবেশ, বিশেষ করে পাকিস্তান-ভারত পরিস্থিতি ও সামগ্রিক আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিশ্লেষণ করা হয়।

আইএসপিআর আরও জানায়, পাকিস্তান শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ—এই অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে ফোরামে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়, কেউ যদি যুদ্ধ চাপিয়ে দিতে চায়, তবে তার জবাব হবে নির্দ্বিধায় ও শক্তভাবে; আর পাকিস্তানি জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতি সবসময় সম্মান জানানো হবে।”

ফোরামটি পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর দৃঢ় অঙ্গীকারও পুনর্ব্যক্ত করে—দেশের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষায় তারা যে কোনো আগ্রাসন প্রতিহত করতে প্রস্তুত।

আইএসপিআর জানায়, সন্ত্রাসবাদ, চাপ কিংবা আগ্রাসন—সরাসরি হোক বা পরোক্ষভাবে—পাকিস্তানের শান্তি ও উন্নয়নের পথকে থামিয়ে রাখতে পারবে না। ভারতের সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে অঞ্চলকে অস্থির করার যে চেষ্টা করছে, তাকে দৃঢ়ভাবে প্রতিহত করা হবে।

সেনাপ্রধান মুনির সেনাবাহিনীর পেশাদারিত্ব, মনোবল ও প্রস্তুতির প্রশংসা করেন এবং বলেন, জাতির প্রতিরক্ষায় তারা একসাথে ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে। তিনি সব সীমানায় সতর্কতা ও সক্রিয় প্রস্তুতির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেন।

এর আগে গত ২২ এপ্রিল পহেলগামের হামলায় ২৬ জন নিহত হয়, যাদের বেশিরভাগই ছিলেন পর্যটক। এটি ২০০০ সালের পর থেকে অন্যতম ভয়াবহ হামলা। ভারত কোনো প্রমাণ ছাড়াই সীমান্ত পেরিয়ে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে, আর পাকিস্তান তা সম্পূর্ণ অস্বীকার করে নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছে।

এই ঘটনার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। পাকিস্তান সীমান্তে সেনা মোতায়েন বাড়িয়েছে, অন্যদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীকে ‘অপারেশনাল ফ্রিডম’ দিয়েছেন। বুধবার ভোরে পাকিস্তান আশঙ্কা প্রকাশ করে, আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে ভারতীয় অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে। সেই প্রেক্ষাপটে কূটনৈতিক যোগাযোগ জোরদার করা হয়েছে, যাতে সংঘর্ষ এড়ানো যায়।

এদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে প্রতিটি ভারতীয় নাগরিকের ‘রক্ত ফুটছে’। হামলায় জড়িত প্রত্যেককে কঠিনতম শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। শুধু তাই নয়, সীমান্তে যেকোনো ধরনের হুমকি মোকাবিলায় নিজের তিন বাহিনীকে অভিযানের পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়ে দিয়েছেন মোদি। 

তবে বিশ্লেষক এবং কূটনীতিকরা বলছেন, পাকিস্তান যে কাশ্মীরে হামলা চালিয়েছে, তার জোরালো প্রমাণ এখনও দেখাতে পারেনি ভারত। এ অবস্থায় দিল্লি কোনো পদক্ষেপ নিলে বিশ্ব মঞ্চে তার ন্যায্যতা পাওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে, পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে চমলান সামরিক সংঘর্ষের আশঙ্কা যদি বাড়তে থাকে তাহলে তা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হতে পারে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence