ঢাবিতে ফি কমানোর দাবি করায় আরবি বিভাগের পরীক্ষা স্থগিত

ঢাবি আরবি বিভাগ
ঢাবি আরবি বিভাগ  © ফাইল ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের উন্নয়ন ফি কমানোর দাবি করায় মাস্টার্সের প্রথম সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা দুদফা স্থগিত করেছে বিভাগটির একাডেমিক কমিটি। 

ফি কমানোর দাবি করায় কয়েকজন শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল কাদিরের বিরুদ্ধে। তবে চেয়ারম্যানের দাবি, শিক্ষার্থীরা ভর্তি না হওয়ায় পরীক্ষা সাময়িকভাবে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আরবি বিভাগের ১১তম ব্যাচের মাস্টার্স প্রথম সেমিস্টারে পরীক্ষা গত এপ্রিল মাসের ১৭ তারিখ শুরু হওয়ার কথা ছিল। পরীক্ষা শুরুর আগে শিক্ষার্থীদের বিভাগ উন্নয়নের জন্য ৫ হাজার টাকা ফি জমা দেওয়ার নির্দেশ হয়। তবে শিক্ষার্থীরা উন্নয়ন ফি কমানোর দাবি করায় পরীক্ষা পিছিয়ে ৫ জুন নির্ধারণ করা হয়। ৫ জুনের আগেই উন্নয়ন ফি জমা দেওয়ার জন্য পুনরায় নির্দেশ দেন বিভাগের চেয়ারম্যান। এর প্রেক্ষিতে গত ১৭ মে বিভাগটির মাস্টার্স শিক্ষার্থীরা উন্নয়ন ফি কমানোর দাবিতে একটি আবেদন জমা দিতে বিভাগের চেয়ারম্যানের কাছে যান। 

অভিযোগ ওঠে, এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল কাদির। উন্নয়ন ফি জমা না দিলে পরীক্ষা হবে না বলে জানান তিনি। এ সময় তিনি কয়েকজন শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের হুমকি দেন। 

মাস্টার্সের একজন শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, উন্নয়ন ফি না দেওয়ায় দুবার আমাদের পরীক্ষা পেছানো হয়েছে। আমরা ফি কমানোর জন্য চেয়ারম্যানের কাছে গিয়েছিলাম। উনি ফি না কমিয়ে জানিয়েছে ৫ হাজার টাকাই দিতে হবে, না হলে পরীক্ষা নেয়া হবে না।

তিনি বলেন, চেয়ারম্যানের এ বক্তব্যের প্রতিবাদ করায় আমাদের কয়েকজন বন্ধুকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করার হুমকি দিয়েছে।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে উন্নয়ন ফি নেয়া হয়। উন্নয়ন ফির পরিমাণ সাধারণত ১৫০০ থেকে ২৫০০ টাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। কলা অনুষদের কয়েকটি বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অনুষদের বিভাগগুলোতে উন্নয়ন ফি ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকার মধ্যে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, একমাত্র আরবি বিভাগেই অতিমাত্রায় উন্নয়ন ফি নেওয়া হচ্ছে। 

তারা জানিয়েছেন, বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউসুফের বিরুদ্ধে নিয়মবহিভূর্তভাবে বিভাগের উন্নয়ন ফির ২৬ লাখ টাকা উত্তোলনের অভিযোগ আছে। অনিয়মের বিষয়টি জানাজানি হলে ড. ইউসুফ ৮ লাখ ৩৮ হাজার টাকা ফেরত দেন।

এ বিষয়ে ড. মো. আব্দুল কাদির বলেন, উন্নয়ন ফি ছাড়া তো ডিপার্টমেন্ট তাদের গ্রহণ করবে না। এখন সব কিছুর ফি বেড়ে আমরা ফি বাড়ালে দোষ কোথায়! 

তিনি বলেন, আমাদের তো কেউ টাকা দেয় না; সরকার টাকা দেয় না, বিশ্ববিদ্যালয় টাকা দেয় না তাহলে আমরা কীভাবে চলব? আমাদের বিভাগের উন্নয়ন করতে হয়, এসি চালাতে হয়। তাদের ভালোভাবে পড়ানো কি আমাদের অপরাধ?  

কলা অনুষদের অন্য ডিপার্টমেন্ট উন্নয়ন ফি ২০০০ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ, তাহলে আপনারা কেন এত টাকা নিচ্ছেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমি তো অন্য ডিপার্টমেন্ট দেখব না তো, ওটা দেখার রাইট নেই আমার। এটা আমার ডিপার্টমেন্টের বিষয়। তারা যদি উন্নয়ন ফি দেয় তবেই পরীক্ষা নেব না হলে নেব না।

কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির বলেন, আমি এ বিষয়ে সঠিক জানি না। আপনার কাছ থেকে প্রথম শুনলাম। আমি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব। তবে এমন তো হওয়া উচিত নয়। আমি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নিচ্ছি।


সর্বশেষ সংবাদ