জাবিতে ‘টাকা ভাগাভাগির’ তদন্ত প্রতিবেদন আগামী সপ্তাহে!
- জাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৭:২৫ PM , আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৭:২৫ PM
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ভর্তি পরীক্ষার ফরম বিক্রির টাকা সংশ্লিষ্টদের মধ্যে ভাগাভাগির অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন আগামী সপ্তাহের মধ্যেই হবে বলে জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির প্রধান ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের মজুমদার।
প্রথমদিনের তদন্ত শেষে ২৩ ফেব্রুয়ারি দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে এ কথা জানান তিনি। অধ্যাপক ড. আবু তাহের বলেন, ‘আমরা প্রয়োজনীয় নথিপত্র ঘেঁটে দেখেছি। তবে কিছু কাগজপত্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দিতে পারে নি। আশা করছি দুয়েকদিনের মধ্যেও সেগুলো অনলাইন মাধ্যমে পেয়ে যাবো। এজন্য আমাদের হয়তো সশরীরে আসতে হবে না।’
কবে নাগাদ তদন্ত প্রতিবেদন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সংগৃহীত কাগজপত্রগুলো পুনঃপর্যালোচনা করা হবে। ব্যাংক স্টেটমেন্ট সহ বাকি কাগজসমূহ পেলেই শিগগিরই তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে। সেটা আগামী সপ্তাহের আগেই হতে পারে।’
তদন্ত কমিটির সদস্য ও ইউজিসির একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে একই কথা জানান। তিনি বলেন, ‘আগামী ৩-৪ কর্মদিবসের মধ্যেই আমরা তদন্ত প্রতিবেদন সম্পন্ন করবো। করোনার কারণে এতোদিন কাজগুলো করা সম্ভব হয় নি। কমিশন থেকে এসব দ্রুত করার জন্য নির্দেশনা আছে।’
আরও পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্য জ্ঞান সৃষ্টি করা: সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) ভর্তি ফরমের নির্ধারিত পরিমাণ টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাগারে জমা না রেখে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে ভাগাভাগির অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি।
তদন্ত কমিটিতে আছেন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের মজুমদার, অর্থ ও হিসাব বিভাগের উপ-পরিচালক মোস্তাফিজার রহমান ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. গোলাম দোস্তগীর।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইউজিসির তদন্ত কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক শেখ মনজুরুল হক, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মো. নুরুল আলম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতার, ডেপুটি রেজিস্ট্রার (শিক্ষা) ও কেন্দ্রীয় ভর্তি পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব আবু হাসান ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার (শিক্ষা) আলী রেজা প্রমুখ।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক ভর্তি ফরম থেকে মোট আয় হয় প্রায় ২০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১০ কোটির বেশি ব্যয় হয় পরীক্ষা আয়োজনে। আর দুই কোটির বেশি ব্যয় হয় অন্য খাতে। বাকি ৮ কোটি টাকার বেশি নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা করে নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: ‘এখন কেমন লাগছে দেখ’, ক্লাসরুমে ছাত্রীর ওড়না খুলে নিলেন শিক্ষক
ইউজিসির আর্থিক বিধিবিধান অনুসারে ভর্তি ফরম বিক্রি থেকে প্রাপ্ত আয়ের ৪০ শতাংশ অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলে জমা রাখতে হয়। বাকি ৬০ শতাংশ অর্থ দিয়ে পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট সার্বিক ব্যয় নির্বাহ করতে হয়।
দুর্নীতি দমন কমিশনের চিঠির প্রেক্ষিতে গত ৯ ফেব্রুয়ারী ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ জামিনুর রহমান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তদন্ত কমিটি গঠন করার কথা জানা যায়।
কমিটিতে ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড আবু তাহেরকে আহ্বায়ক, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা বিভাগের সিনিয়র সহকারী পরিচালক গোলাম দস্তগীরকে সদস্য সচিব এবং অর্থ ও হিসাব বিভাগের উপ-পরিচালক মোস্তাফিজার রহমানকে সদস্য করা হয়েছে।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা বিভাগের লাবিবা মহসিন কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবেন বলে অফিস আদেশে বলা হয়েছিল।
তবে এ চিঠির প্রতিক্রিয়ায় গত ১৯ জানুয়ারি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে ‘অর্থ আত্মসাৎ’ শব্দযুগলের ব্যবহারকে ‘অযৌক্তিক, অনাকাঙ্ক্ষিত ও অত্যন্ত অসম্মানজনক’ বলা হয়েছে। পাশাপাশি এ ধরনের তদন্ত প্রক্রিয়া থেকে ইউজিসিকে বিরত থাকার অনুরোধ করা হয়েছিল।