ভিপি নুরের কক্ষে হামলার আগ মুহূর্তের ভিডিও ভাইরাল

  © টিডিসি ফটো

ডাকসু ভিপির কক্ষে নুরুল হক ও তাঁর অনুসারীদের উপর ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের হামলার আগ মুহূর্তের একটি ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হয়েছে। সেখানে উপস্থিত কেউ একজন মোবাইলে ভিডিওটি ধারণ করেছিলেন বলে জানা গেছে। আজ সোমবার শামসুন্নাহার হলের ভিপি শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি ভিডিওটি নিজের ফেসবুক আইডিতে শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখেন, “যে কারণে সিসিটিভি ফুটেজ হাওয়া!”

এদিকে ডাকসু ভবনের সিসিটিভি ফুটেজ গায়েব হয়ে গেছে। কে বা কারা ফুটেজগুলো গায়েব করল, সে ব্যাপারে কোনো ধারণা নেই কর্তৃপক্ষের।

৪২ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সিনেট সদস্য সনজিত চন্দ্র দাস এবং ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও এজিএস সাদ্দাম হোসেনকে নুরুল হকদের সঙ্গে তর্ক করতে দেখা যাচ্ছে। এসময় ডাকসু ভবনে ভিপির কক্ষে থাকা ছাত্রলীগের ওই দুই নেতার অনুসারীদেরও চিৎকার ও হুমকি দিতে শোনা যায়। তখন নুর-রাশেদের সঙ্গে থাকা অনুসারীরাও চিৎকার ও প্রতিবাদ করছিল।

উভয় পক্ষের মধ্যে বিতর্কের একপর্যায়ে নুরুল সনজিতকে বলেন, ‘আপনি তো ডাকসুর কেউ না। আপনি কেন এখানে এসেছেন।’ সনজীত তখন বলেন, ‘আমি কে, তা কিছুক্ষণ পরেই বুঝবি।’ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, এই ঘটনার পরপরই ভিপির কক্ষের আলো নিভিয়ে নুরদের উপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।

হাসপাতালে ভর্তি নুরুল হক ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বলেন, ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিদ ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম এবং তথাকথিত মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামক ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী মঞ্চের সভাপতি বুলবুল ও মামুনের নেতৃত্বে আমাকে হত্যাচেষ্টায় ডাকসুতে ৩ দফা আমার উপর হামলা চালানো হয়। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হকের ওপর হামলার পর এবার ডাকসু ভবনের সিসিটিভি ফুটেজ গায়েব হয়ে গেছে। কে বা কারা ফুটেজগুলো গায়েব করল, সে ব্যাপারে কোনো ধারণা নেই কর্তৃপক্ষের।

ডাকসু ভবনের বাইরে এবং ভেতরে মিলিয়ে মোট ৯টি ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা আছে। ক্যামেরার ফুটেজগুলো ধারণ করা হতো ডাকসুর সিনিয়র অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার আবুল কালাম আজাদের কক্ষে। সেই কক্ষে একটি মনিটর এবং একটি সিপিইউ ছিল। কিন্তু ডাকসু ভবনে নুরুল হকের ওপর হামলার ঘটনার পর সেই মনিটর এবং সিপিইউয়ের কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না।

আবুল কালাম আজাদ বলেন, গতকাল দুপুরে যখন ডাকসু ভবনে ভিপি নুরুলের ওপর হামলা হয়, তখন তিনি বিষয়টি জানাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গোলাম রব্বানীর কার্যালয়ে যান। সেখানে প্রক্টর অফিসের একজন কর্মকর্তা তাঁকে জানান, ডাকসুর প্রধান ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর কিছুক্ষণ পরে ডাকসুর সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) সাদ্দাম হোসাইন এবং ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনজীত চন্দ্র দাসকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। সেখানে গিয়ে তাঁরা ডাকসু ভবনের গেট খুলতে বলেন। কিছুক্ষণ পর গেট খুলে দিলে কিছু অনুসারীদের সঙ্গে নিয়ে তাঁরা ভবনের ভেতরে ঢোকেন।

আবুল কালাম আজাদ আরও জানান, দুই পক্ষ যখন দোতলায় মুখোমুখি অবস্থান করছিল, তখন তিনি আবার প্রক্টরের কার্যালয়ে গিয়ে বিষয়টি জানান। প্রক্টর জানান, বিষয়টি তিনি দেখছেন। এরপর প্রক্টরের কার্যালয় থেকে বের হয়ে পরিস্থিতি জানানোর জন্য তিনি ডাকসুর কোষাধ্যক্ষ ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলামের কার্যালয়ে যান। তাঁকে কার্যালয়ে না পেয়ে মুঠোফোনে চেষ্টা করেন। কিন্তু শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম ফোন ধরেননি। এরপর তিনি নিজের কক্ষে এসে দেখেন, তাঁর কক্ষের তালা ভাঙা এবং ভেতরে মনিটর ও সিপিইউ নেই। কে বা কারা সেগুলো নিয়ে গেছে, তা তিনি জানেন না।

গতকাল রোববার দুপুরে ডাকসু ভবনের নিজ কক্ষে নুরুলের ওপর হামলা চালান বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের একাংশের নেতা-কর্মীরা। এ সময় নুরুলের সঙ্গে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও কয়েকটি কলেজের কয়েকজন ছাত্রসহ অন্তত ৩০ জন আহত হন। এদের মধ্যে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতা তুহিন ফারাবীকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। আজ সোমবার তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ার পর তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নিয়ে আসা হয়।

ঘটনার সময় হামলাকারীরা পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক এ পি এম সুহেলকে ডাকসু ভবনের ছাদ থেকে ফেলে দেন। সুহেল হাসপাতালে ভর্তি আছেন। সুহেল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। কয়েক দফা মারধরের শিকার হন আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক ফারাবী। এ ছাড়া হামলায় আহত নুরুলের ভাই আমিনুর হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ইমারজেন্সি সেন্টারে চিকিৎসাধীন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুই দফায় নুরুল হক ও তাঁর সহযোগীদের রড, লাঠি ও বাঁশ দিয়ে পেটানো হয়। প্রথম দফায় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের একাংশের সভাপতি আমিনুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আল মামুনের নেতৃত্বে সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ডাকসু ভবনে ঢুকে তাঁদের পেটান। এরপর সনজীত ও সাদ্দাম ঘটনাস্থলে আসেন। তাঁদের উপস্থিতিতে দ্বিতীয় দফায় হামলা ও মারধর করা হয়। এ সময় ডাকসু ভবনেও ভাঙচুর চালান ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মী।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence