ঢাবির হলে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে বাধা প্রদানের অভিযোগ হল সংসদের বিরুদ্ধে
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১২:২৩ PM , আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২৫, ০১:০১ PM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কবি জসীমউদ্দীন হলে ডট ইনিশিয়েটিভের উদ্যোগে ফ্রি ডেন্টাল মেডিক্যাল ক্যাম্প করার উদ্যোগে বাধা প্রদানের অভিযোগ উঠেছে হল সংসদের বিরুদ্ধে। গতকাল মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) কবি জসীমউদ্দীন হলে ডট ইনিশিয়েটিভের উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প হওয়ার কথা থাকলেও হল সংসদ ও প্রশাসনের বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেছে ডট ইনিশিয়েটিভের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক রাইয়ান ফেরদৌস।
রাইয়ান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হয়েও হলে একটি স্বেচ্ছাসেবী মেডিকেল করতে না পারায় আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন তিনি।
জানা যায়, মঙ্গলবার ক্যাম্প করার কথা থাকলেও আগের রাতে হল সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) মাসুম আব্দুল্লাহ প্রোগ্রামটি রিসিডিউল (পুনঃনির্ধারণ) করতে বলে এবং রিসিডিউল না করলে কোনো প্রোগ্রাম করা যাবে না বলে জানিয়ে দেয় রাইয়ান ফেরদৌসকে।
প্রভোস্ট বরাবর আবেদন করার পরও হল সংসদের জিএস বলেছিলেন, ‘আপনারা প্রশাসন থেকে অনুমতি নেননি, তাই কোনো প্রোগ্রাম করতে পারবেন না।‘
ডট ইনিশিয়েটিভের প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক রাইয়ান ফেরদৌস বলেন, ডট ইনিশিয়েটিভ থেকে সায়েন্সের তিনটি হল, টিএসসি, ডাকসু, সূর্যসেন হল, জিয়া হল, একাত্তর হল ও রোকেয়া হল ছাড়া মেয়েদের সবগুলো হলে আমরা প্রোগ্রাম করেছি। আমরা হল প্রভোস্টদের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে থাকি। সেই অনুযায়ী গত ১৯ অক্টোবর কবি জসীমউদ্দীন হলের প্রভোস্টকে ফোন করলে তিনি আমাদের তার অফিসে আসতে বলেন। পরে আমাদের একটি টিম অফিসে গেলে প্রভোস্টকে পাওয়া যায়নি। পরের দিন আবার প্রভোস্টের কাছে অনুমতি নিতে গেলে তাঁকে পাওয়া যায়নি; পরে কল করলে তিনি আবেদনপত্র অফিসে জমা দিয়ে যেতে বলেন। আবেদনপত্র জমা দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে স্যারের কাছে একটি মেসেজও পাঠিয়ে রাখি।
তিনি বলেন, তারপর আমরা প্রোগ্রামের কথা ঘোষণা দেই। কিন্তু রাত ১২টার পরে জিএস মাসুম আব্দুল্লাহ আমাকে টেক্সট দিয়ে জানান যে, তারা প্রোগ্রাম সম্পর্কে অবগত নয় এবং প্রোগ্রাম রিসিডিউল করতে বলেছেন। আমরা তাদেরকে সহযোগিতার আর্জি জানাই; সকালে যখন আমাদের টিম ও ডাক্তারেরা হলে গেলে, তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। আমরা কিছু হলের প্রভোস্টদের সরাসরি পাইনি, তবে ফোনে জানালে তারা অনুমতি দিয়েছেন বলেও জানায় রাইয়ান।
এ বিষয়ে কবি জসীমউদ্দীন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শাহীন খান বলেন, ‘আমার কাছে একজন শিক্ষার্থী এ বিষয়ে জানালে আমি এপ্লিকেশন দিতে বলি।‘ আমি বলেছি যে, ‘আমি আমার একজন হাউস টিউটরকে দায়িত্ব দেব তিনি যাচাই-বাছাই করে দেখবেন শিক্ষার্থীদের জন্য এটা উপকারী কি না। যদি ঠিক থাকে আমি অনুমোদন দেব।‘
তিনি আরও বলেন, ‘পরবর্তী দুইদিন বিভাগ জনিত কাজে ব্যস্ত থাকায় অফিসে বেশি সময় দিতে পারেননি। ফলে অফিসে রেখে যাওয়া এপ্লিকেশন সম্পর্কে তিনি জানতেই পারেননি।‘
তিনি বলেন, রাতে ফেসবুকে দেখে জানতে পারেন শিক্ষার্থী সংসদ গ্রুপে প্রোগ্রামের সময়সূচি ঘোষণা করেছে অথচ আমার কাছ থেকে কোনো অনুমোদন নেয়নি। তিনি প্রশাসনিক কর্মকর্তা রবিউলকে বলেন প্রশাসনের অনুমোদন ছাড়া কোনো প্রোগ্রাম করা যাবে না। তিনি হাউস টিউটর ড. রাশেদ আলমকে বিষয়টি দেখার জন্য নির্দেশও দেন এবং পুনরায় বলেন অনুমোদন সাপেক্ষে প্রোগ্রাম করতে হবে।‘
হল সংসদ প্রসঙ্গে প্রভোস্ট বলেন, ‘আমি পরিষ্কারভাবে বলেছি, এই দায়িত্ব সংসদের নয়, এটা প্রশাসনের বিষয়। সংসদের এখতিয়ার হলো শিক্ষার্থীদের মতামত প্রশাসনের কাছে পৌঁছে দেওয়া; সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করার ক্ষমতা তাদের নেই। সংসদ পর্যবেক্ষণ বা পরামর্শ দিতে পারে, কিন্তু ইমপ্লিমেন্টিং বডি প্রশাসন।‘
এ বিষয়ে, কবি জসীমউদ্দীন হল সংসদের জিএস মাসুম আব্দুল্লাহ বলেন, গত রাত ১২টায় স্যার আমাকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করেন, ‘এই প্রোগ্রামটা কারা করছে?’ আমি বললাম ‘স্যার, আমি জানি না; আমরা সংসদ থেকে কেউ করছি না।” স্যার জানান যে অনুমতি দেওয়া হয়নি, তাই তারা প্রোগ্রাম করতে পারবেন না; বিষয়টি জানিয়ে তাদেরকে রিসিডিউল করার কথা বলা হয়েছিল। পরে আমি ডট ইনিশিয়েটিভের সাধারণ সম্পাদক রাইয়ানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান তারা আবেদন করেছেন এবং স্যারের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে কিন্তু স্যার জানিয়েছেন তার কাছে সরাসরি কোনো আবেদন পৌঁছায়নি। জিএস বলেন, ‘আমরা কেন বাধা দিতে যাব? আমরা তো ক্ষমতা রাখি না; আমরা শুধুমাত্র তাঁদেরকে জানিয়ে দিয়েছি যে প্রশাসনিক অনুমোদন নেই।‘