হল ভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে জাবিতে বিক্ষোভ
- জাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৫, ০৭:৪৫ AM , আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০২৫, ০২:২৭ PM
হল ভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। গত ৮ আগস্ট জাবি ছাত্রদলের হল কমিটি ঘোষণার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে শনিবার (৯ আগস্ট) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হলের সামনে থেকে একটি মিছিল বের করেন। পরবর্তীতে একে একে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলের শিক্ষার্থী মিছিলে অংশ নেন। বিক্ষোভ মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বট তলা এলাকা হয়ে নতুন কলা ভবনের সামনে দিয়ে মেয়েদের হল হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয়।
বিক্ষোভ মিছিল শিক্ষার্থীরা হলের অভ্যন্তরে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে ‘হল পলিটিকসের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন; ওয়ান টু থ্রি ফোর, হল পলিটিকস নো মোর’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা হল ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিসহ ছয় দফা দাবি উপাচার্যের নিকট পেশ করেন।
তাদের দাবিগুলো হলো- বিশ্ববিদ্যালয়ের হলসমূহে সকল ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ, ভবিষ্যতে হলে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থী এবং গণরুম ও গেস্টরুমে ‘র্যাগিং’ সংস্কৃতিতে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক শাস্তির সুনির্দিষ্ট রূপরেখা প্রণয়ন, অতি দ্রুত হল সংসদ গঠন করে শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা, রাজনৈতিক সংগঠনের যেকোনো উপহারসামগ্রী একমাত্র হল প্রশাসনের মাধ্যমে প্রদান এবং এতে ওই সংগঠনের নাম বা কোনো চিহ্ন ব্যবহার না করা, হলের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বহিরাগতদের অযাচিত হস্তক্ষেপ বন্ধ, হলের মেয়াদোত্তীর্ণ ছাত্রদের বিরুদ্ধে অনতিবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ।
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান লিমন বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা ছাত্রলীগকে হল থেকে প্রতিহত করেছি। এখন আমরা দেখছি আরেকটি দল হল কমিটি গঠনের চেষ্টা করছে, আর কাল হয়তো অন্য আরেকটি দল একই চেষ্টা করবে। এভাবেই তারা গেস্ট রুম ও হল দখলদারিত্বের বিষাক্ত সংস্কৃতি পুনঃপ্রবর্তনের চেষ্টা করবে। আবাসিক শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা হলের ভেতরে সব ধরনের ছাত্ররাজনীতি দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছি।
ইতিহাস বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শাকিল মিয়া বলেন, ‘আমরা বিগত বছরগুলোয় দেখেছি যে, হল পলিটিকসের মাধ্যমে ছাত্রলীগ কীভাবে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছিল। আমরা চাই না নতুন করে আবার সেই পুরোনো কালচার ফিরে আসুক। আমরা চাই, আমাদের হলগুলোয় সকল প্রকার ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করতে হবে এবং অবিলম্বে সকল রাজনৈতিক দলের ঘোষিত হল কমিটিগুলো বাতিল করতে হবে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, ‘আমি তো হুট করে একটা সিদ্ধান্ত দিয়ে দিতে পারি না। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো নিয়ে আমরা রোববার অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে আলোচনা করব। আলোচনা শেষে একটা নীতিগত সিদ্ধান্ত দিতে পারব বলে আশা রাখি